২০০৬ সালে রাজ্যে শিল্পায়নের জোয়ার আনতে টাটাদের সিঙ্গুরে প্রায় হাজার একর জমি দিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার। সিঙ্গুরের মোট ৫টি মৌজা থেকে এই জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম মৌজা গোপালনগর। জাতীয় সড়ক নং ২ সংলগ্ন সেই গোপালনগরের সানাপাড়ায় আজ আর টাটার কারখানার একটি ইটও দেখা যায় না। তবে সেখানে আজও চলছে বুলডোজার। জোর কদমে জারি রয়েছে নির্মাণ কাজ। তবে সেই কাজ মাঠে হচ্ছে না। হচ্ছে 'ঘাস জমি' সংলগ্ন রাস্তায়। ভোটের মাঝেও জাতীয় সড়ক নং ২ বা দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণের কাজ এখানে চলছে। সেই সানাপাড়াতেই জাতীয় সড়কের নীচ দিয়ে চলে গিয়েছে একটি আন্ডারপাস। আর তার সামনেই রয়েছে এক চায়ের দোকান। সেই দোকানের পাশ দিয়েই ধুলো উড়িয়ে একের পর এক ট্রাক যচ্ছে, আসছে। তবে তাতে বিরক্তি নেই দোকানির। দোকানের মালিক কাগজের কাপে চা ঢাললেন হাসি মুখেই। দোকানে বসে থাকা বাকি খদ্দেররা সেই সময় আলোচনা করছিলেন রাজনীতি এবং এলাকার উন্নয়ন নিয়ে। আর দোকানের বাইরে তখন দাঁড়িয়ে এক টোটো। (আরও পড়ুন: বাংলায় ক্লিন সুইপ 'দেখছে๊ন' মোদী, শ♎াহের গলায় আবার 'নির্দিষ্ট আসন সংখ্যা')
আরও পড়ুন: বাংলায় এসে সরকারি চাকরি, ডিএ নিয়ে তির ছুড়লেন হিমন্ত♏, বোঝালেন ৩৬-এর ফারা▨ক
সেই টোটোওয়ালার কথায়, 'টাটার কারখানা এখন অপ্রাসঙ্গিক। এখন এই রাস্তার (জাতীয় সড়ক ২-এর সম্প্রসারণ) দিকেই তাকিয়ে সবাই।' সেই রাস্তা ধরে অনেকটা এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল, পাশে বিশাল বিশাল সব ট্রাক, ডাম্পার থেকে শুরু করে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সব গাড়ি দাঁড়িয়ে। এক জায়গায় মাটি খুঁড়ে ভিত তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে কর্মীরা নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। সেই দোকানে বসে থাকা বাকি খদ্দেররাও নিজেদের এলাকার উন্নয়ন, রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সেই আলাপচারিতায় ন্যানোর স্মৃতি উঁকি দিলেও টাটা এখন অপ্রাসঙ্গিক। তাঁদের কথায় স্পষ্ট, মোটা টাকা উপার্জন বা সংগঠিত সেক্টরে কাজ করতে হলে সেই কলকাতাতেই। তবে কখনও না কখনও সিঙ্গুরে ফের কোনও শিল্প হবে বলে আশাও রয়েছে তাঁদের মনে। আর তখন সেই শিল্প হলে এই জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের 'লাভের ফল' আরও বেশি করে উপভোগ করা যাবে বলে মত প্রকাশ করেন অনেকে। (আরও পড়ুন: রাজভবনে শ্লীলতাহ🦩ানির তদন্তে নয়া মোড়, বড় দাবি '১৫ মিনিট' নিয়ে, থানায় তলব ৩ জনকে)
আরও পড়ুন: 'বেজিং তৈ𒀰রি...', ভারতে পা রেখেই সীমান্ত সংঘাত নিয়ে নয়া বার্তা চিনা রাষ্ট্রদূতের
রিপোর্ট অনুযায়ী, ডানকুনি থেকে পানাগড় পর্যন্ত ১৩২ কিমি দীর্ঘ রাস্তাটিকে ৬ লেনের করা হচ্ছে। ২০২০ সালের জুলাই মাসে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার তৎকালীন প্রধান আরপি সিং জানিয়েছিলেন, ৩ বছরের মধ্যে এই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন করার 🌸পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। তখন দাবি করা হয়েছিল, এই প্রলকল্পের জ🎃ন্য কোনও জমি জট নেই। অবশ্য সেই জট যে নেই, তা ২০২৪ সালে এসে স্পষ্ট। কাজ হচ্ছে। আন্দোলন নয়। তবে এই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শেষ হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: নাম জড়িয়েছে RAW'র, পান্নুনকাণ্ডে ভারত-ম🦋ার্কিন সম্পর্কে চিড়?♓ মুখ খুললেন জয়শংকর
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে এই ১৩২ কিমি দীর্ঘ রাস্তার লেন সম্প্রসဣারণের জন্য ৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এর ফলে ডানকুনি থেকে পানাগড় যেতে ৪০ মিনিট পর্যন্ত কম সময় লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে। যানজটও কমবে। এই জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে 'ভারতমালা প্রকল্পের' অধীনে। এই ১৩২ কিমি দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়েতে লে-বাই (জাতীয় সড়কের পাশে গাড়ি দাঁড়ানোর জায়গা) এর সংখ্যা বাড়িয়ে ১৯ করা হচ্ছে। এছাড়া থাকবে ৬০টি আন্ডারপাস, ৩টি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ এবং ৪টি ফ্লাইওভার। সানাপাড়ার পাশ দিয়ে এনএইচ২ দিয়ে দুর্গাপুরের দিকে গেলেই বাঁদিকে দেখা যায় 'টাটার মাঠ'। সেই মাঠ আজ 'ঘাসের জঙ্গল'। পাশে রাস্তায় এগিয়ে চলেছে 'উন্নয়ন'।