বাংলার শিল্পায়নের মানচিত্রকে বদলে ফেলতে পারত সিঙ্গুর। তবে আজ সিঙ্গুরে না আছে কোনও কারখানা, না সেখানকার ১০০ শতাংশ জমিতে চাষ সম্ভব। সিঙ্গুরবাসীর কথায় এখন আর সেভাবে শোনা যায় না 'টাটা'র নাম। তবে তাঁদের দীর্ঘশ্বাসে আজও আছে 'টাটা'। বরং বলা ভালো, আছে শিল্পের স্বপ্ন। তবে যে টাটা সিঙ্গুর ছেড়ে গিয়েছিল, তাদের জড়িয়ে ধরেছিল গুজরাট। সানন্দে গড়ে উঠেছিল ন্যানো কারখানা। ৪০০ কোটি টাকার বিনিময়ে ন্যানোকে সানন্দে ১১০০ একর জমি দিয়েছিল তৎকালীন মোদী সরকার। এরপর ২০০৯ সালের মার্চে প্রথম উৎপাদন শুরু হয় এই ন্যানো গাড়ির। তবে এক দশকেই এই গাড়ির চাহিদার পতন ঘটে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জুন মাসে একটি মাত্র ন্যানো গাড়ি উৎপাদিত হয়েছিল সানন্দের কারখানায়। ২০১৮ সালের জুন মাসে ভারত জুড়ে নাকি বিক্রি হয়েছিল মাত্র ৩টি ন্যানো, আর রফতানি হয়েছিল ২৫টি। এই আবহে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ন্যানোর উৎপাদন এবং বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টাটা। সানন্দে এখন আর ন্যানো তৈরি হয় না। তবে সানন্দে ন্যানো না থাকলেও এসেছে কোকাকোলা থেকে মাইক্রন। (আরও পড়ুন: 🍬রাজভবনে শ্লীলতাহানির তদন্তে নয়া মোড়, বড় দাবি '১৫ মিনিট' নিয়ে, থানায় তলব ৩ জনকে)
আরও পড়ুন: NH2 হয়ে ছুটবে স্বপ্ন? টাটাౠকে 'জমি না দেওয়া' সিঙ্গুর তাকিয়ে NHA🏅I'র প্রকল্পের দিকে
সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো কারখানা তৈরি হলে যে এখানেও এমনই উন্নয়ন হত কি না, তা বলা কঠিন। তবে সানন্দের অবস্থা এখন কেমন আছে? রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৯ সালে টাটা সানন্দে পা রাখার পরই সেখানকার জমির দাম আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছিল। প্রতি বিঘা জমির দাম বেড়ে ৪০ লাখ টাকার মতো হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে বিজেস স্ট্যান্ডার্ডের এক রিপোর্টে। ২০০৬ সালে যখন সিঙ্গুরে টাটা এসেছিল, তখন সেই সানন্দে বিঘা প্রতি জমির দাম ছিল মাত্র ৫ থেকে ৬ লাখ। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডেক এক রিপোর্টে দাবি করা হয়, গুজরাট সরকারের থেকে জমি পাওয়ার পরও ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে টাটা সেখানকার ১🥂২ হাজার কৃষকের থেকে জমি কিনেছিল। এবং সেই সব কৃষকদের অনেকেই জমি বিক্রি করেই কোটিপতি হয়ে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলায় এসে সরকারি চাকরি, ডিএ নিয়েꦜ তির ছুড়লಌেন হিমন্ত, বোঝালেন ৩৬-এর ফারাক
পরে ২০১৮ সালে গুজরাট ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন সেখানকার ৮০০ কৃষককে কমার্শিয়াল প্লট দিয়েছিল। ২০১০ সালে তৎকালীন মোদী সরকার এই নীতি কার্যকর করেছিল। আর মোদী যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী, তখন তাঁর রাজ্যে সেই নীতি কার্যকর করা হয়েছিল। আর সেখানে আজও প্রায় ১৮ বছর পরে সিঙ্গুরের কৃষকদে♚র মাথায় হাত। পরবর্তী প্রজন্ম সেভাবে কৃষিকাজে আগ্রহী নয়। ক্ষেত মজুররা সেভাবে আ কাজ পান না। জমি ফেরত পাওয়া বহু কৃষকের মাটির নীচে এখনও রড, সিমেন্ট। বর্ষার সময় জমিতে জল দাঁড়িয়🍨ে পড়ে। প্রতিশ্রুতি মতো তৃণমূল সরকার কৃষকদের জমি তো ফিরিয়েছে, তবে তা এখন চাষযোগ্য করে দেওয়ার দাবি সিঙ্গুরবাসীর মুখে মুখে।
আরও পড়ুন: বাংলায় ক্লিন সুইপ 'দেখছেন' মোদী, শাহের গলায় আবার 'নির্দিষ্ট আ🍒সন সংখ্যা'
এদিকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরেই গুজরাট সরকারের সঙ্গে কোকাকোলার চুক্তি হয়েছে। সানন্দে তাদের ৩০০০ কোটি টাকার ইউনিট তৈরির প্রকল্পের জন্য জমি পাবে কোকাকোলা। ন্যানোর চাকা হয়ত আর গড়ায় না। তবে সানন্দে উন্নয়নের ধারা বন্ধ হয়নি। এদিকে শুধু কোকাকোলা নয়, সানন্দ আগামী কয়েক বছরে 'সেমিকন্ডাক্টর চিপ' তৈরির হাব হতে পারে🍎 ভারতের। সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে ভারতকে আত্মনির্ভর বানাতে ২০২৩ সালের জুন মাসে গুজরাটের সরকারের সঙ্গে মিলে কেন্দ্র চুক্তি করেছিল মাইক্রনের সঙ্গে। এই বহুজাতিক সংস্থা সানন্দে তাদের কারখানা থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন শুরু করে দিতে পারে বলে জানা গিয়েছে।