শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিচালনার ঘটনায় নিহত চারজনের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেল তাঁদের পরিবার। বুধবার পুলিশ প্রশাসনের তরফে সরকারিভাবে নিহতদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে মৃতদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, নিহতদের মধ্যে এক জনের দেহে গুলির আঘাত পাওয়া যায়নি। পাওয়া গিয়েছে স্প্লিন্টারের আঘাত! এছাড়াও মাথায় ভারী কোনও বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৩ জন মণিরুল মিয়াঁ, হামিদুল মিয়াঁ ও নুর ইসলাম মিয়াঁর মৃত্যু গুলিতে হয়েছে। কিন্তু আবার ওই রিপোর্টেই দেখা গিয়েছে যে, চতুর্থ জন সমিউল মিয়াঁর মৃত্যু গুলি লেগে হয়নি। তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, সামিউলের বুকে ‘স্প্লিন্টারের’ আঘাতের ক্ষত রয়েছে।শুধু তাই নয়, তাঁর মাথায় ভোঁতা কোনও বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। আবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে, মৃতদের মধ্যে একজনের পিঠে গুলি লেগেছে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচন কমিশনের দাবি মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী আত্মরক্ষায় গুলি চালালে, কী করে পিঠে গুলি লাগল?ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জানাচ্ছে, নিহত হামিদুল মিয়াঁর পিঠে গুলি গেলেছে। মণিরুল মিয়াঁ ও নুর ইসলাম মিয়াঁর বুকে গুলি লেগেছে। গুলি চালানো হয়েছে মাত্র ১০ মিটার দূর থেকে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে হামিদুল মিয়াঁর পিঠে গুলি লাগে কীভাবে? সামিউলের মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করার পিছনে কে রয়েছে। কেনই বা তার দেহে স্প্লিন্টারের ক্ষত? ১০ মিটার দূর থেকে গুলি চালালে, বুকে গুলি লাগল কেন। কারণ, এই দূরত্বে পা লক্ষ্য করে গুলি চালানো নিয়ম।ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছ থেকে শীতলকুচি-কাণ্ডের তদন্তের ভার সিআইডি নিয়েছে। নিহতদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন সিআইডিয়ের তদন্তকারী অফিসাররা। পাশাপাশি, ১০ এপ্রিলের গুলিচালনার ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে পৃথকভাবে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট স্তরের তদন্ত। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট স্তরের তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক রিনা জোশী মঙ্গলবার ১২৬ নম্বর বুথের ঘটনার দিন কর্তব্যরত ৪ জন ভোটকর্মী এবং একজন আশা কর্মীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।