এবার ফেসবুকে পরিচালক সুব্রত সেনকে 'F**k you' বললেন রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে টলি-পরিচালকের 'দ্বিচারিতা মনোভাব' নিয়েও প্রশ্ন তুললেন ক্ষুব্ধ অভিনেতা। যদিও এরপরেও বিন্দুমাত্র মেজাজ হারাননি 'এক যে আছে কন্যা' ছবি খ্যাত পরিচালক। সুচারুভাবে রাহুলকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন তিনি। এমনকি উল্টে ✅রাহুলের কাছে প্রকাশ্যেই ক্ষমাও চেয়েছেন। তবে সেই পোস্টেই রাহুলের করা সেই কমেন্টটির ঠিক নিচে হঠাৎ প্রযোজক রানা সরকারের করা একটি মন্তব্য সকলের নজর কেড়েছে। জোর ফিসফাস, নাম না তুলেই অভিনেতা রাহুলের উদ্দেশ্যেই তোপ দেগেছেন 'জাতিস্মর' এর প্রযোজক। পাশাপাশি উল্লেখ্য, রাহুলের করা ওই মন্তব্যটি পড়ে রানা সরকার যে বেশ ক্ষুব্ধ তা তাঁর কমেন্ট পড়লেই মালুম হবে।
প্রথম থেকেই শুরু করা যাক বিষয়টা। ঘটনার সূত্রপাত পরিচালক সুব্রত সেনের করা একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে। এইমুহূর্তে পুরুলিয়াতে 'প্রজাপতি' ছবির শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত তিনি। সেখান থেকেই শ্যুটিংয়ের একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। আচমকা সেই পোস্টে ঢুকে 'নীল নির্জনে' ছবি খ্যাত পরিচালকের উদ্দেশে রাহুল মন্তব্য করে বসেন, 'একজন অভিনেত্রী তোমার ফোন ধরেনি বলে তাঁর নাম তুলে প্রকাশ্যে তাঁকে শেমিং করতে পারো তুমি অথচ এই ছবি থেকে আমাকে বদলে দেওয়ার আগে জꦺানানোর সৌজন্যটুকু দেখানোর প্রয়োজন বোধ করো না। F**k you!' এরপর অভিনেতার দাবি, টলি-পরিচালক 'দ্বিচারিতা' করেছেন তাই সেই মনোভাবকেও ওই অশ্লীল শব্দে বিঁধেছেন তিনি। জবাবে এতটুকুও মেজাজ না হারিয়ে সৌজন্য দেখিয়ে পরিচালক সুব্রত সেন নিজের ভুল স্বীকার করেন! সঙ্গে লেখেন, সত্যি সত্যিই ফোন করা উচিত ছিল। করিনি লজ্জায়। কারণ যে চরিত্র ভেবেছিলাম প্র💮থমে, শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায়নি। তোমার মতো অভিনেতাকে গুরুত্বহীন রোলে কাস্ট করা উচিত নয় বলে মনে করি। ক্ষমা চাইছি তোমার কাছে। জয়রাজের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটেছে।’ যদিও এর প্রেক্ষিতে আর কিছু বলেননি রাহুল।
তবে 'হঠাৎ নীরার জন্যে'-র পরিচালক চুপ করে গেলেও গর্জে উঠেছেন প্রযোজক রানা সরকার। অভিনেতার ঠিক সেই কমেন্টের নিচে তাঁর কমেন্ট, 'আমাদের দেশে অনেক ধরনের দ্বিচারিতা (ডাবল স্ট্যান্ডার্ড) আছে। যেমন মোদীজি নিজের বউকে দেখে না। আরও অনেকে আছে যারা সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তাকে বড় করার ন্যূনতম দায়িত্ব নেয় না। অনেকে নিজেরꦡ বুড়ো বাবা-মাকে দেখে না। এগুলোও দ্বিচারিতা নয় কি?’ রানার এই মন্তব্যেই নড়েচড়ে বসেছে নেটপাড়া। নেটিজেনদের একাংশের ধারণা নাম না করে রাহুলকে একহাত নিয়েছেন 'চতুষ্কোণ' এর প্রযোজক। রাহুলের পরিবার, স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার এবং ছেলে সহজের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে একাধিকবার সংবাদমাধ্যমে চর্চা হয়েছে তা আর কারও অজানা নয়।
এই গোটা ঘটনার বিষয়ে বিশদে জানতে এই তিনজনের সঙ্গেই যোগাযোগ করা হয়েছিল হিন্দুস্তান টাইমস-এর তরফে। ফোনের ওপার থেকে ঠান্ডা গলায় সুব্রত সেন বলে ওঠান, ' 'প্রজাপতি'-তে একটি চরিত্রে প্রথম থেকেই রাহুলকে ভেবে রেখেছিলাম। ওঁকে জানিয়েওছিলাম সেকথা। কিন্তু শেষমেশ লিখতে গিয়ে দেখি যে সেই চরিত্রের গুরুত্ব কমে গেছে। আমার মতে রাহুলের মতো একজন দুর্দান্ত অভিনেতাকে ওইটুকু চরিত্রে অভিনয় করতে দেখলে নিজেরই খারাপ লাগত। তাই আর ওঁকে কাস্ট করিনি।ওঁর জায়গায় পুরুলিয়ার একটি ছেলে অভিনয় করছেন। পেশাদার মঞ্চ অভিনেতা। তবে হ্যাঁ, আমার রাহুলকে এ𓄧কবার জানানো উচিত ছিল। তাঁর জন্য সত্যিই আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আরও একটি কথা। রাহুলের উপর কিন্তু আমি রাগ করে নেই। আমার বিশ্বাস এরপর রাস্তায় দেখা হলে আমরা দু'জন্যেই পরস্পরের সঙ্গে কথা বলব। আর দেখুন, রাহুল আমার বিষয়ে কী বলেছে সেটা ওঁর ব্যাপার। কে কী বলবে সেটা তো আমি ঠিক করে দিতে পারি না'।
এ প্রসঙ্গে খুব বেশি কিছু বলতে চাননি রাহুল। শুধু এটুকু বললেন, 'দে🏅খুন, উনি যখন একজন অভিনেত্রীকে কথার খেলাপের জন্য প্রকাশ্যে নাম তুলে শেমিং করতে পারে। তাহলে পরিচালকের বিরুদ্ধে একজন অভিনেতাও করতে পারেন। তাই না? দু'দিকেই সমান হওয়া উ🔯চিত ব্যাপারটা'। আর রানা সরকার? রাহুলের জবাব, 'দেখুন আমার বিশ্বাস রানাদা আমার উদ্দেশে ওই মন্তব্য করেননি। আশেপাশের সমগ্র সামাজিক পরিস্থিতি নিয়েই সেকথা বলেছেন তিনি'।
রানা সরকারকে যোগাযোগ করা হ🌃লে তিনি স্পষ্ট কথায় জানিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে একজন অগ্রজের প্রতি জুনিয়রের এহেন মন্তব্য কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।' আর যাঁরা দ্বিচারিতা, ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের কথা বলেন তাঁদের উদ্দেশে আমার একটিই কথা। অভিনেতাদের তো পেশার স্বার্থেই অনেকটা সময় আয়নার সামনে কাটাতে হয়। তাই এসব মন্তব্য প্রকাশ্যে করার পর কি তাঁরা আয়নায় তাকাতে পারবেন? এটুকুই', সামান্য হেসে বলে ওঠেন রানা।