এই ছবিতে শার্টলেস সলমন খান রয়েছেন, ধামাকেদার অ্যাকশন সিকুয়েন্স রয়েছে তবুও এই ছবি সলমন খানের ছবি নয়। জনপ্রিয় মরাঠি ছবি ‘মুলশী প্যাটার্ন’-এর (Mulshi Pattern) অফিশিয়াল হিন্দি রিমেক অন্তিম দ্য ফাইনাল ট্রুথ (Antim: The Final Truth)। পরিচালনায় মহেশ মঞ্জরেকর। এই ছবি হতাশ করবে না হার্ডকোর বলিউড মশালা ছবির ভক্তদের, সলমন ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণে সফল হবে কিনা তা নিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে। কারণ এই ছবিতে ব্যাকফুটেই খেলেছেন সলমন, গোল করবার সব সুযোগ দেওয়া হয়েছে আয়ুষ শর্মাকে। সলমনের ভগ্নিপতি আয়ুষের বলিউডে অভিষেক হয়েছিল ‘লাভযাত্রী’র সঙ্গে। সেইবার শালাবাবু সলমন কেবল প্রযোজক হিসাবেই পাশে ছিলেন আয়ুষের। এবার অভিনেতা হিসাবেও সঙ্গ ♚দিলেন।
সলমন খানের ছবিতেꦓ চিত্রনাট্য, কাহিনি এগুলো মাপা হয় অন্যভাবে। সলমনোচিত মেজাজ, মারকাটারি সংলাপ অনেক বেশি গুরুত্ব পায় ভাইজানের ছবিতে। ওয়ান্টেট, কিক, দবাং- তালিকাটা অগুণতি। পুলিশ-মাফিয়া সংঘর্ষ খুব চেনা সলমন খানের ফিল্মোগ্রাফিতে। কিন্তু তবুও অন্তিম কাহিনিতে শেষ কথা আয়ুষ শর্মা।
মাফিয়া নানিয়া ভাইয়ের (উপেন্দ্র লিময়ে) চাপে পড়ে নিজের জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল কেশরী দত্তা পাটিল (সচিন খেড়েকর)। দত্তার ছেলের চরিত্রেইඣ রয়েছেন আয়ুষ শর্মা (রাহুলিয়া)। সে বদরাগী, তাঁর তরুণ রক্ত ঠগবগ করে ফুটছে। জমিজমা ছেড়ে পুণে শহরে আসার পর ধীরে ধীরে ‘ভাই’ হয়ে ওঠে রাহুলিয়া। এক সাধারণ তরুণের মাফিয়া হয়ে ওঠার গল্পই ‘অন্তিম: দ্য ফাইনাল ট্রুথ’। গডফাদার নানিয়া ভাইয়ের ছায়াতে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা রাহুলিয়ার, তারপর জায়গা দখল। ক্ষমতা, প্রতিপত্তির নেশায় মত্ত রাহুলিয়া একের পর এক নিয়ম ভাঙে, বেড়ে চলে তাঁর শক্রু সংখ্যা। এই কাহিনির পরিণতিটা সবার চেনা, কিন্তু পরিবার-পুলিশ কারুর কথাই মানতে না-রাজ সে। গল্পে পুলিশ রাজবীর সিং-এর ভূমিকায় রয়েছেন সলমন খান। ‘অন্তিম’-এর শেষটা প্রত্যাশিত বলেই গল্পের বাঁধুনি আপনার আলগা মনে হবে শুরু থেকেই। এই ছবিতে তেমন কোনও বড়সড় চমক নেই। পুরোদস্তুর বিনোদনের কথা মাথায় রেখে বানানো হয়েছে এই ছবি। অত্যধিক সংলাপ কোথাউ কোথাউ ছবির স্পিডব্রেকার হয়ে দাঁড়ায়। এই ছবিতে করণ রাওয়াতের সিনেম্যাটোগ্রাফি মন কাড়ে, মহাꦏরাষ্ট্রের গ্রাম্য পরিবেশকে ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক। ছবির গান এক্কেবারেই মন ধরল না।
অন্তিমের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রাহুলিয়ার জীবনের উঠাপড়া, রাজবীরের চরিত্রের পরিসর কম। তাই জেনে বুঝেই ব্যাকফুটে খেলেছেন সলমন খান। ছবিতে রাহুলের প্রেমিকা ভূমিকা. দেখা গিয়েছে মহিমা মাকওয়ানাকে, যাঁকে ‘বালিকা বধূ’ সিরিয়ালে গৌরীর ছোটবেলার চরিত্রে দেখেছে দর্শক। শিশু শিল্পী হিসাবে হিন্দি টেলিভিশন দুনিয়ার পরিচিত নাম সে, কিন্তু এই ছবিতে বিশেষ দাগ কাটল না মহিমা। তবে পুরুষ প্রধান এই ছবিতে মহিমার তেমন কিছু করবারও ছিল না। আয়ুষের সঙ্গে তাঁর রসায়নও তথৈবচ। যিশু সেনগুপ্তের চরিত্রটি ছবিতে এক্কেবারেই প্রাসঙ্গিক নয়, এর চেয়ে স্বল্প পরিসরের চরিত্রেও আগে দা🧸গ কেটেছেন বাংলার এই অভিনেতা। আয়ুষের বাবার চরিত্রে মরাঠি অভিনেতা সচিন খেড়েকরের অভিনয় দীর্ঘক্ষণ আপনার সঙ্গে থাকবে।
এই ছবির সেরা প্রাপ্তি আয়ুষ শর্মার ট্রান্সফরমেশন, লাভযাত্রীর লাভার বয় যে এমন মাফিয়া হয়ে উঠতে পারেন, সেটা বেশ অবিশ্বাস্য। চেষ্টা করেছেন, নিজের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছেন খান পরিবারের জামাই। সলমন-আয়ুষের শার্টলেস দ্বৈরথ দেখে সিঙ্গল স্ক্রিনে সিটি-তালি অবশ্যই পড়ছে, বরুণ ধাওয়ানের ক্যামিও অ্যাপিয়ারেন্স🎀, ওয়ালুষ্কা ডি’সুজ়ার লাওনি ডান্সের তড়কা, ছবিতে বিনোদনের রসদ ম🎃জুত থাকলেও একটা বড়সড় কিন্তু রয়ে গেছে… সেটা হল চিত্রনাট্যের খামতি। তবে সলমন ও আয়ুষকে নতুন অবতারে দেখতে এই গ্যাংস্টার ড্রামা এনজয় করতেই পারেন।