অল্প কয়েক মাসেই সিরিয়ালপ্রেমীদের কাছের মানুষ হয়ে ওঠেছে মৌ-ডোডো। তবে মাত্র পাঁচ মাসেই সফর শেষ হচ্ছে ‘মেয়েব🅠েলা’র। মন খারাপ ফ্যানেদের, সফর শেষে মনভার কলাকুশলীদেরও। শ্য়ুটিং শেষের পর কেমন আছেন 'মৌ' স্বীকৃতি? মেয়েবেলার সফর থেকে আগামির পরিকল্পনা নিয়ে স্বীকৃতির সঙ্গে একান্ত আড্ডা দিল ‘হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা’।
ব্যস্ততা কি একটু কমেছে? স্বীকৃতির সময় এখন কীভাবে কাটছে?
স্বীকৃতি: খুচখাচ শ্যুটিং তো চলছে, এই যেমন🅺 বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং। তব𒅌ে টানা শ্য়ুটিংয়ের যে চাপ থাকে সেটা কম। অনেকদিন ধরে ঘুরতে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম, তো এখন প্ল্যান করছি। আমার পছন্দের ডেস্টিনেশন গোয়া, অনেকবার গিয়েছি, আবার সেখানেই যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
মৌ-এর সঙ্গে স্বীকৃতির কোনও মিল রয়েছে? মৌ তোমাকে কী শেখালো এই ক'মাসে?
স্বীকৃতি: বাস্তব জীবনের স্বীকꦓৃতির সঙ্গে মৌ-এর কোনও মিল নেই, একদম আলাদা ব্যক্তিত্ব। মৌ যেমন সবটা মুখ বুজে সহ্য করত, ঠিকটা জাౠনলেও মুখ খুলতে পারত না সেটা যতই পরিস্থিতির চাপে হোক না কেন। আমি কিন্তু যেখানে ভুল দেখতে পাই, মুখ না খুলে থাকতে পারি না। তাই মৌ-এর চরিত্রটা আমার থেকে একদম আলাদা, সেটা পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পেরে আমি খুশি।
দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েও পাঁচ মাসেই শেষ হচ্ছে ‘মেয়েবেলা’, খারাপ লাগছে?
স্বীকৃতি: খারাপ লাগা বলতে, একটা জিনিস রয়েছে- দর্শক𒆙 মৌঝরকে আরেকটু দেখতে চেয়েছিল। যেটা গল্পের মধ্যে মধ্য়ে আসছিল, সেটা আরও ভালোভাবে আসত। ফ্যানেরাই নাম দিয়♌েছে মৌঝর। আর কিছুদিন গেলে তাদের মুহূর্তগুলো সুন্দরভাবে আসত, সেটা দেখতে পাবে না কেউ, সেটা খারাপ লাগা।
রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায়ের ‘মেয়েবেলা’ ছেড়ে যাওয়া নিয়ে তৈরি বিতর্ক, এই ধারাবাহিকের বিষয়বস্তুকে ‘রিগ্রেসিভ’ বলা, সেই নিয়ে তোমার কী প্রতিক্রিয়া?
স্বীকৃতি: যিনি যা বলবেন মনে করেছেন সেটা বলার দরকার ছিল কিনা সেটা উনিই বলতে পারবেন। আমি বলতে পারব না। রূপাদির (গঙ্গোপাধ্যায়) কিছু ব্যক্তিগত প্রবলেম ছিল সেটা উনি বলেছেন। ‘রিগ্রেসিভ কনটেন্ট’ এই শব্দবন্ধ নিয়ে যদি আমি কথা বলি, তাহলে বলব সেটার মানে তো যা ঠিক নয়, সেটাই শুধু পর্দায় দেখানো হচ্ছে। মেয়েবেলায় যদি দেখানো হয়✃ে থাকে যে বউমার সঙ্গে খারাপ ব্য়বহার করা হচ্ছে, তাহলে এটাও দেখানো হয়েছে মৌ কীভাবে প্রতিবাদ করেছে। ডোডো কীভাবে মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে বলছে- এটা ভুল, বউয়ের পাশে দাঁড়াচ্ছে। আমরা যদি টক্সিন দিয়ে থাকি, তাহলে তার অ্যান্টিডোটটাও দিচ্ছি। আমরা দেখাতে চেয়েছি এগুলো ভুল, আর সেই ভুলটাই চোখে আঙুল দিয়ে তুলে ধরার জন্যই সেগুলো দেখানো হয়েছে। আর কোনটা ঠিক সেটাও বলা হয়েছে পর্দায়। তাই ‘রিগ্রেসিভ কনটেন্ট’-এর তো মানেটাই এখানে দাঁড়াচ্ছে না।
শান্টু-পূর্ণার পর মৌ-ডোডো জুটিও হিট, কোন জাদুবলে? কো-স্টার অপর্ণকে নিয়ে কী বলবে?
স্বীকৃতি: শান্টু-পূর্ণার জুটি খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, সিরিয়ালটা অনেক লম্বা সময় ধরে চলেছে। শান্টু-পূর্ণার একটা খুনসুটি ছিল, ঝগড়া ছিল, প্রেম ছিল। ‘খেলাঘর’-এ আমরা ওদের অনেক ইমোশন, অনেক মূহূর্ত দেখাতে পেরেছি। এখানে কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যে মৌঝর-এর প্রেম দেখানো হয়নি। কোনওরকম প্রেম, মাখোমাখো সিন বা রোম্যান্স দেখানো হয়নি। তা সত্ত্বেও মৌঝর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিয়ের পরেও আমি কিন্তু ডဣোডাদা-ই বলেছি। ‘দা’ বাদ দিতে পারেনি।
আমরা খুব তাল মিলিয়ে কাজটা করেছি, আমার আর অপর্ণের দুজনের বোঝাপড়াটা খুব সুন্দর। তাই ‘অনস্ক্রিন-জেল’টা খুব সুন্দর হয়েছে আমাদের।জুটি পপুলার হতে সময় লাগে। আমাদের স্পেসটা খুব একইরকম। তা না হলে ম্যাজিকের মতো কোনও জুটি হিট হয় না। আমার আর অর্পণের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। কোনও সিন পেলে আমরা আলোচনা করতাম🎐, আমাদের অনস্ক্রিন ওয়ার্ক কেমিস্ট্রিটা খুব ভালো। আর অপর্ণকে নিয়ে বলব, ও নিজের কাজ নিয়ে খুব সিরিয়াস। খুব ভালো ছেলে আর খুব ভালো অভিনেতা।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পড়তে অভিনয়ের জগতে কীভাবে এলে?
স্বীকৃতি: আমার অভিনয় জগতে আসাটা একদম অদ্ভূত বলতে পারো। আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছিলাম। কলেজ ক্যাম্পাসিং-এ আমি একটা নামী কোম্পানিতে চাকরিও পেয়ে গিয়েছিলাম চতুর্থ বর্ষে। এর মাঝেই আমি একটা সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হই। তার এক মাস পরে স্টার জলসা থেকে আমার কাছে ফোন আসে, এরপর প্রযোজনা সংস্থা থেকেও ফোন আসে। আমি দেখা করতে গেলে আমাকে জানানো হয়, আমি খেলাঘর-এর জন্য নির্বাচিত হয়েছি। তখন চার বছর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে একটা চাকরি পাওয়া হয়ে গেছে। তখন ভাবলাম, আমার ডিগ্রিগুলো আমারই থাকবে, সেটা ভবিষ্যতেও কাজে লাগাতে পারব। অভিনয়ের এত বড় সুযোগ আমার কোলের উপর এসে পড়েছে, সেটা হাতছাড়া করব কেন? আমি নাচতে ভালোবাসি, মডেলিং- ভালো লাগে। তাই চাকরি-বাকরি ছেড়ে অভিনয় করতে শুরু করলাম। আর প্রথম দিন শ্যুটিং-এ গিয়েই বুঝে চাই এটাই আমার জায়গা। আমি এটাই করতে চাই। সকালবেলা ওঠা, কাজে যাওয়ার জন্য একটা যে অ্য়াড্রিনালিন রাশ 🧜সেটা আমার আগে কোনওদিন হয়নি।
এরপর স্বীকৃতিকে কী নতুন মাধ্যমে দেখা যাবে? ওটিটি বা সিনেমায় কাজের ইচ্ছে রয়েছে?
স্বীকৃতি: ওটিটি,সিনেমা দুটো-তেই আমার খুব ইন্টারেস্ট রয়েছে। কথাবার্তাও হয়েছে কিছু প্রাথমিকভাবে। দেখা যাক, সবকিছু ঠিকঠাক য📖দি থাকে তাহলে হয়ত আগামী কয়েক মাসে ওটিটি বা ছবিতে কাজ করব। সিরিয়াল থেকে আপতত একটু ব্রেক নেব, অন্তত চার-পাঁচ তো বটেই। মৌ চরিত্রটা জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তাই দর্শককে সেই চরিত্রটা ভোলবার সময় আমি দেব, যাতে নতুনরূপে আমাকে গ্রহণ করতে সহজ হয়।