টলিপাড়ার অন্যতম সুরেলা জুটি লোপামুদ্রা মিত্র ও জয় সরকার। দীর্ঘ ২৩ বছরের দাম্পত্য দুজনের। সঙ্গীতই বেঁধে দিয়েছিল জয়-লোপার সম্পর্ক। কোনও নিয়মের মধ্যে নিজেকে বাঁধতে স্বাচ্ছন্দ্য নন লোপামুদ্রা। তবুও বয়সে ছোট জয়ের বাজনা, মিউজিকাল সেন্সের প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। একটা মঞ্চে লোপার সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন জয়। কিন্তু সেই নিময়ে ছেদ পড়েছে। আরও পড়ুন-‘চলো,আরেকবার বিয়ে কর🤪ি’, ২৩ বছর পর ফের প্রস্তাব লোপার, বউয়ের চেয়ে বয়সে কত ছোট জয় সরকার?
সম্প্রতি একসঙ্গে ইউরোপ ট্যুরে এই সুরেলা জুটি। না, বেড়াতে নয় গান গাইতেই ইংল্যান্ড থেকে জার্মানি। লন্ডন মহোৎসবে একসঙ্গে মঞ্চ মাতিয়েছেন তাঁরা। ২০০৭ সালের পর সেভাবে মঞ্চে একসঙ্গে দেখা মেলেনি দুজনের। কিন্তু গত বছর থেকে ফের একসঙ্গে দুজনে। দীর্ঘ সময় পর এই ফিরে আসা নিয়েই নস্টালজিয়ায় ভাসলেন জয় সরকার। ফেসবুকে ꦇনিজের মনের অনুভূতি ব্যক্ত করলেন সঙ্গীত পরিচালক।
তিনি লেখেন, 'লোপার সাথে মঞ্চে গিটার বাজানোটা একসময় আমার রোজকার কাজ ছিল। সেই সূত্রেই দুজনের পরিচয়, প্রেম এবং পরিণয়। মোটামুটি ১৯৯৭ থেকে ২০০৭ সাল অব্দি টানা বাজানোর পর আমি নিজের সঙ্গীত পরিচালনার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি, আর ল🙈োপাও বাধ্য হয় আমার বিকল্প খুঁজে নিতে। যদিও মাঝেমধ্যে ও বিপাকে পড়লে দৌড়ে যেতে হত। এরপরে হাতেগোনা মাত্র কয়েকবার সুয🌳োগ হয়েছিল একসাথে পারফর্ম করার। কিন্তু আমরা প্রবলভাবে মিস করতাম একসাথে মঞ্চে থাকার সেই উত্তেজনা, ভালোলাগা, পারফরম্যান্স শেষে ভাগ করে নেওয়া করতালির আওয়াজ। আমি যেমন না তাকিয়ে বুঝতে পারতাম লোপা কোথায় দম নেবে, কোথায় শুরু করবে আর কোথায় শেষ করবে, লোপাও চোখ বুজে দেখতে পেত আমার হাতের গতিবিধি, পড়তে পারতো আমার শ্বাস-প্রশ্বাস, এতটাই গভীর রসায়ন ছিল দু'জনের মধ্যে'।'
এরপর জয় লেখেন মঞ্চে অনেক সময় তাঁদের দাম্পত্য কলহও প্রকাশ্য়ে চলে আসে। সুরকারের কথায়, 'শ্রোতারাও আমাদের একসাথে দেখতে চাইতেন ভীষণভাবে। কোভিডের সময়ে গৃহবন্দী থাকাকালীন আমরা ঠিক করি বাকি জীবনটা যতটা সম্ভব নিজেদের পছন্দমত কাটাব। আর সেই তালিকার একদম শুরুর দিকে ছিল আবার একসাথে মাঝেমধ্যে মঞ্চ ভাগ করে নেওয়ার ইচ্ছে। রোজকার পেশাদার জীবনের একঘেঁয়েমিও গ্রাস করছিল আমাদের। গত বছর মে মাসে টরোন্টো শহর থেকে আমাদের এই সাধের ডাবল ইঞ্জিন গাড়ি 'লোপা - জয় এক্সপ্রেস' যাত্রা শুরু করে।… এই সফর রোজকার জন্যে নয় একদমই। কখনও বছরে দু'বার, কখনও বা দু'বছরে একবার। পুরোটাই রয়েসয়ে আর দুলকিচালে। পছন্দের গানবাজনা, আড্ডা আর সাথে গান তৈরীর গল্প, এই হলো অনুষ্ঠ🗹ানের মূল উপজীব্য। সেই কারণে মঞ্চ মাঝেমধ্যে হয়ে ওঠে আমাদের বাড়ির বৈঠকখানা। অতিভাগ🃏্যবানরা সাক্ষী হয়ে যান দাম্পত্য কলহের'।
সদ্য শেষ করা ইউরোপ ট্যুর নিয়ে জয় লিখেছেন, 'এ বছর এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি আমাদের রেলগাড়ি আবার চরতে বেরিয়েছিল। লন্ডন আর ম🦹িউনিখ, এই দুটো স্টেশনে স্টপেজ দিয়ে ২ দিন আগে দেশে ফিরেছে। দুটো শহরেই ভালোবাসা, সম্মান আর আতিথেয়তায় আমরা আপ্লুত। যে ভাবে তিন দশক আগে রেকর্ড করা বেণীমাধবের জন্যে লোপাকে এখনও মানুষ দাঁড়িয়ে উঠে ৫ ম𝔍িনিট ধরে হাততালি দেয় আর 'বৃষ্টি পায়ে পায়ে' -তে আমার সাথে গলা মেলায় সারা প্রেক্ষাগৃহ, কৃতজ্ঞতায় মাথা নুইয়ে আসে। মনে হয় এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে আমাদের….'।
'লোপা-জয় এক্সপ্রেস' এখন আপাততঃ 🏅কারশেডে জানিয়েছেন জয়। আগামী কয়েক মাস ফের একসঙ্গে মঞ্চে দেখা যাবে না তাঁদের। দিনক্ষণ ঠিক হলে সবটা প্রকাশ্যে আনবেন বলে রেখেছেন লোপার বেটারহাফ।
বরের এই প𝄹োস্টের মন্তব্য বাক্সে মজা করে লোপা লেখেন, ‘ডবল ইঞ্জিন, ঠিকই। তবু মাঝে মধ্যে স্টার্ট দিও। একটা ইঞ্জিন আবার একটু পুরনো তো !! তাই চিন্তা’। নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে পোস্টটি শেয়ার করে গায়িকা লিখেছেন, ‘লোপা মালগাড়ি যেমন চলছে চলবে। একটা ইঞ্জিন নিয়ে। ডবল ইঞ্জিন লাগলে সেটা এক্সপ্রেস হবে’।
জানিয়ে রাখি, বয়সে আর অভিজ্ঞতায় জয়ের চেয়ে সিনিয়র লোপা। বউয়ের চেয়ে ৪ বছর ১১ মাসের ছোট জয়। এই ব্যাপারটা নিয়ে মাথাঘামান না দুজনের। আর এই ব্যাপারটা বেশ এনজয় করেন লোপামুদ্রা। তাই প্রকা💦শ্যেই বলে ফেললেন এমন 🐻কথা।