‘ইনসান কা শরীর মাউন্ট ফুজি কি তরহা এক জ্বালামুখী’, নাতনিকে এমনই কথা নাকি বলছেন তাঁর বৃদ্ধা দাদী। বলছেন, গাড়ি কেনার আগে যদি টেস্ট ড্রাইভ হয়, তাহলে বিয়ের আগে যৌনতা কেনಌ নয়! আবার এই বর্ষীয়ান দাদীই নির্দেশিকা দিচ্ছেন, তাঁর নাতি আর হবু নাত জামাই একে অপরের সঙ্গে যৌন তৃপ্তি পেলে ত♐বেই হবে এই বিয়ে। কথাটা হঠাৎ শুনলে হয়ত মধ্যমিত্ত মানসিকতার যে কোনও মানুষ ভিড়মি খাবেন। তবে, দাদী নীনার অভিজ্ঞতা বলছে সুখী দাম্পত্যে যৌনসুখ ভীষণই প্রয়োজন। আমাদের নিজের বাড়িতে এমন ঘটনা হয়তবা কেউ ভাবতেও পারি না। তবে বর্ষীয়ান দাদী ওরফে নীনা গুপ্তাকে দিয়ে পরিচালক যা বলিয়েছেন সেটাই হয়তবা প্রকৃত বাস্তব।
যৌন লালসা, যৌন তৃপ্তিকে বিষয় করে Lust Stories 2-এর প্রথম গল্প সাজিয়েছেন পরিচালক আর বালকি। বলাই বাহুল্য বালকির গল্পে নীনাই নায়িকা, বাজিমাত করেছেন তিনিই। এই অ্যান্থলজি মুভির দ্বিতীয় সিজন দেখার পর তাই হয়ত নীনার চরিত্রটিই মনে সবথেকে বেশি দাগ কেটে যায়। মন কেড়েছে ম্রুণাল ঠাকুর, অঙ্গদ বেদীর দুষ্টু-মিষ্টি রসায়ন। যদিও ম্রুণালকে কখনও কখনও মনে হয়েছে, তিনি হয়তবা একটু অতিরিক্ত ব্লাশ করছেন। যদিও এর থেকে তাঁদের চরিত্রগুলির আর 𓆏বেশি কিছু করারও ছিল না। যখনই মনে হয়েছে পরিচালক হয়তবা এই দুটি চরিত্রকে নিয়ে আরও একটু খেলবেন, তখনই গল্পের পথ চলা শেষ হয়ে যায়। পাশাপাশি, নীনার ৫২ বছরে ছেলের ভূমিক𝕴ায় হেমন্ত খের) ও ৪৮ বছর বয়সী পুত্রবধূর বেশে কানুপ্রিয়া পণ্ডিতকেও মন্দ লাগল না। এই গল্পকে ৫-এ ৩ দেওয়া যায়।
দ্বিতীয় গল্প উঠে এসেছে পরিচালক কঙ্কনা সেন শর্মার হাত ধরে, যেখানে পূজা টোলা༒নির সঙ্গে মিলে ভীষণই বাস্তবের প্রেক্ষাপটে, বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে গল্প সাজিয়েছেন কঙ্কনা। বরাবরই অভিনয় ও পরিচালনা দুই ক্ষেত্রেই কঙ্কনা বেশ ‘ম্যাচিওর’। গল্পের ছলে বেশ বুঝিয়েছেন যৌনতা, যৌন লালসার কোনও সামাজিক শ্রেণিভেদ হয় না। একই সঙ্গে আলগোছে উঠে এসেছে সমকামী ও উভকামীতার কথাও। কঙ্গনার হাতের ছোঁয়ায় এই গল্প বাস্তবের মাটি ছুঁয়েছেয আর কঙ্কনার হাত ধরে চাকুরিজীবী আধুনিক মহিলার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিলোত্তমা সোম। আর পরিচারিকার বেশে ধরা দিয়েছেন অমৃতা সুভাষ। আর এই গল্পে কেন্দ্রীয় এই দুই চরিত্রে তিলোত্তমা ও অমৃতা, দুজনেই নিজ নিজ ভূমিকায় সাবলীল, স্বচ্ছন্দ্য। অভিনয়ে দুজনেই একে অপরকে টেক্কা দিয়েছেন। আর একটা কথা না বললেই নয়, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় বাকি ৩ পরিচালককে টেক্কা দিয়েছেন কঙ্কনা। এই গল্পকে সবমিলিয়ে ৫-এ সাড়ে ৩ ༒দেওয়া যায়।
তৃতীয় গল্পটি তামান্না ভাটিয়ে ও বিজয় বর্মার। লাস্য় স্টোরি-২ নিয়ে আলোচনার শুরু থেকেই আলোচনায় ছিল এই গল্পটি। তবে যতটা আশা জাগিয়েছিল, সেই মত♛ো পরিবেশন করতে পারেননি পরিচালক সুজয় ঘোষ। খানিকটা যেন মশালাদার দারুণ একটা ভেলুপুরী লোভে পড়ে খেতে গিয়ে দেখলেন মুড়ি গুলোই কেমন যেন মিইয়ে গেছে টাইপের। তবে মোটের উপর তামান্না-বিজয়ের রসায়ন মন্দ নয়। তামান্ন তাঁর শরীরি বিভঙ্গে চোখ টেনেছেন ঠিকই কিন্তু ওই 'আই ক্যান্ডি'র বেশি কিছু হয়ে উঠতে পারেননি। তবে এই গল্প আগের দুটি গল্পের মতো পুরোটাই বাস্তবের মাটি ছুঁয়ে তৈরি হয়, এর মধ্যে কাল্পনিকতার রং ঢেলেছেন সুজয় ঘোষ। এই গল্পকে সবমিলিয়ে ৫-২-এর বেশি দেওয়া গেল না।
আর সবশেষে আসে অমিত রবিন্দেরনাথ শর্মার গল্প। নিজের গল্পে বিবাহিত জীবনের যৌন নিপীড়নের গল্প বলেছেন অমিত। যেখানে নিজ চরিত্রে কাজল﷽ বরাবরের ম🍃তোই দারুণ। নিজ চরিত্রে অসাধারণ কুমুদ মিশ্রও। তবে চরিত্রগুলির পাশাপাশি, এই গল্পের শেষ বিশেষ একটা চমক রেখেছেন পরিচালক অমিত শর্মা। যে চমকটা দর্শকরা হয়তবা অনেকেই আন্দাজ করতে পারবেন না। আর সেটাই এই গল্পের অন্যতম ইউএসপি। সব মিলিয়ে এই গল্পকে ৫-এর মধ্যে ৩ দেওয়াই যায়।
তবে একটা কথা না বললেই নয়, সবকটি গল্পের ব্যাকগ্রাউন্ড 💮স্কোর, সিনেমাটোগ্রাফি🍷, প্রোডাকশন ডিজাইন ভীষণভাবে ঝরঝরে। আমার চোখে এক্ষেত্রে সেভাবে কোনও ত্রুটি চোখে পড়েনি। গল্পগুলিপ সম্পাদনাও দারুণ।