পরপর দুই ঘটনা, আর সেই দুই ঘটনার মধ্যেই এক অদ্ভুত সাদৃশ্য। কী সেই মিল? চড়! আর এই ঘটন💜াগুলিকে ঘিরে♐ই দুভাগে বিভক্ত গোটা দেশ তথা রাজ্য।
প্রথম ঘটনা
চণ্ডীগড় বিমানবন্দরের কঙ্গনা রানাওয়াতকে প্রকাশ্যে চড় মারার ঘটনায় বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তাল স্যোশাল মিডিয়া। বৃহস্পতিবার নব নির্বাচিত সাংসদ তথা বলিউড অভিনেত্রীকে সিআইএসএফ-এর এক মহিলা জওয়ান চড় মারেন। চড় মারার কারণ হিসেবে তিনি কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্♎গ তোলেন। এই ঘটনায় গোটা দেশ দুভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। মহিলা জওয়ানের সমর্থনে যেমন বহু মানুষকে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছে, তেমনই নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তুলে অনেকে তাঁর কাজের বিপক্ষে প্রতিবাদ করছেন।
দ্বিতীয় ঘটনা
এরপরের ঘটনা খাস কলকাতার নিউটাউনের এক রেস্তরাঁয়। স্থানের মতো আলাদা পাত্র এবং কালও। আর পার্থক্য ঘটনাক্রমে। শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার নিউটাউনে এক রেস্তরাঁয় শ্যুটিং করছিলেন বিধায়ক তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী। সেই রেস্তরাঁয়ই মালিককে মারধর করার অভিযোগ ওঠে সোহমের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক অভিনেতা সোহম দাবি করেন, রেস্তরাঁর মালিক এবং কর্মচারী খারাপ ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয় রাজ্যের শাসকদলের অন্যতম প্ܫরধান মুখ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেও কুৎসা করেন ওই রেস্তরাঁ মালিক। তখনই নাকি বচসা বাঁধে। তারপর তা হাতাহাতির দিকে মোড় নেয়।
আরও পড়ুন: 'আমি শাহরুখের ফ্যানেদের খুব ভয় পাই…' নায়কের সꦑঙ্গে কাজ না করার প্রসঙ্গে বিস্ফোরক অনু♑রাগ
এই দুই ঘটনাকে পাশাপাশি রেখে হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা টলিপাড়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিদওের কাছে প্রশ্ন তোলে, এই ধরনের চড় মারা কতটা যুক্তিসঙ্গত? রাজনৈতিক অস্থিরতাই কি এই ঘটনাগুলির নেপথ্যে? যা ঘটেছে তা আদৌও ঘটা উচিত ছিল? নাকি প্রয়োজন সংযমের? এই প্রশ্নের উত্তরে কী বলছেন তারকারা?
এই বিষয়ে নিয়ে যাঁরা বলেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন অভিনেতা কৌশিক সেন। রাজনৈতিক হোক বা সামাজিক সমস্ত রকম ঘটনা নিয়েই অভিনেতাকে সরব হতে দেখা যায়। কঙ্গনার ঘটনার ক্ষেত্রে অভিনেতার মত, "কঙ্গনা রানাওয়াতকে যিনি চড় মেরেছেন তাঁকে আমি স্যালুট করছি। আমরা আসলে ভীষণ ভীতু। বিশেষ করে আমি নিজের কথা বলছি। বাকিদের কথা জানিনা। আমরা এই মারধর ইত্যাদি গুলোকে ভীষণ ভয় পাই, কি🅰ন্তু যিনি মেরেছেন তাঁর কাছে এটা একটা অন্য রকমের আবেগ। কৃষক আন্দোলন নিয়ে আমরা বাইরে থেকে প্রচুর কথা বলি, কিন্তু এটা ওঁদের কাছে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। কারণ নরেন্দ্র মোদীর আমলে বহু কৃষক আত্মহত্যা করেছে। আর এই চড়টা ওই জায়গা থেকে এসেছে, ফলে সেটা আমরা শহরের মধ্যবিত্ত মানসিকতা নিয়ে বুঝতে পারব না। আমার এই কাজটার প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু আমার পূর্ণ সমর্থন থাকার সত্ত্বেও, কোথাও গিয়ে একটা কথা বেরিয়ে আসছে যে 'নানা তা বলে কি মারধর করতে পারি?' আসলে এটা আমার মধ্যবিত্ত সংস্কার থেকে 🧔বেরিয়ে আসছে। কঙ্গনা এ যাবৎকাল যা যা বলেছেন তাতে ওই চড়টা ওঁর প্রাপ্য ছিল।"
আরও পড়ুন: 'আমাকে গালাগাল শুনতে হবে…' সায়নীর জয়ের পর ছবি পোস্ট বিতর্কে মুখ খুললে🐽ন স্বস্তিকা
অন্যদিকে, সোহমের ঘটনাকে অভিনেতা একেবারেই সমর্থন করেন না। কৌশিকের মতে, সোহম একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং একজন অভিনেতা। এ প্রসঙ্গে কৌশিক বলেন, "আমার কাছে অবশ্য আগে ওঁর অভিনেতার পরিচয়টাই গুরুত্বপূর্ণ। যেদিন এই ঘটনা ঘটে সেদিন কিন্তু তিনি কোনও দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেনি, একজন অভিনেতা হয়ে⛦ আমাদের প্রতিনিধি হয়ে গিয়েছিল। তাই এই ঘটনায় আমাদেরꦿ পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মুখ পুড়েছে। সোহমকে বুঝতে হবে যে তৃণমূলের গুন্ডাদের সংখ্যা কিন্তু অনেক বেশি, তাই আর সেই সংখ্যা বাড়ানোর কোনও প্রয়োজন নেই। সোহমের বরং উচিত দেবকে অনুসরণ করা। এই যে হিরণের মতো একজন সাব স্ট্যান্ডার্ড অভিনেতা তথা সাব স্ট্যান্ডার্ড প্রার্থী দেবকে নিয়ে যে এত খারাপ কথা বলেছেন তার প্রত্যুত্তরে মারধর দূরে থাক, দেব একটা উত্তরও দেয়নি। তাই সোহমের উচিত শেখ শাহজাহানকে অনুকরন না করে, দেবকে অনুসরণ করা।"
সেই একই কথার আভাস মিলেছে টলিপাড়ার আরও এক জনপ্রিয় অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় বক্তব্যে। অভিনেতার মতে, "মানুষের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে বহুদিন ধরে অনেক রাগ জমে আছে। আর সেইসবের বহিঃপ্রকাশ করতে গিয়ে সকলে যখন তখন যা ইচ্ছে করে ফেলছে।কঙ্গনা একজন শিল্পী, আমি একজন শিল্পী। তিনি আমাকে চিনুন বা না চিনুন আমি তো ওঁকে চিনি, তিনি এতবছর ধরে অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত বলেই, বাকিটা বাদ দিয়ে বলছি যে, ওঁর পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু আমরা সেভাবে কেউ দাঁড়াতে পারিনি। কেন? কারণ শেষ কয়েক বছর ধরে কঙ্গনা যা ইচ্ছে মন্তব্য করে গিয়েছেন। সবাই তাঁর চোখে খারাপ, সে পাঞ্জাবের কৃষক হোক বা মুসলিম সম্প্রদায়ের কেউ। ফলে সবটা নিয়ে মানুষ ক্ষিপ্ত হবেই।𓂃 আর তাই আজ ওঁকে চড় মেরে 'ন্যাশনাল হিরো' হয়ে গিয়েছেন ওই জওয়ান। তিনি আজ জনগণের প্রতিনিধি, আর এই চড়টা গোটা দেশের জনতার হয়ে মেরেছেন। ওই মহিলা জওয়ানের সঙ্গে আমিও চড়টা মেরেছি, আমিও ওঁর সঙ্গে আছি। আমি সত্যি বলছি, হয়তো আমার খুশি হওয়া উচিত হয়নি কিন্তু তাও আমি খুশি হয়েছি তার কারণ শুধুমাত্র একটা পার্টির প্রচারের জন্য যা ইচ্ছে বলা যায় না সবাইকে।"
অভিনেতা সোহম প্রসঙ্গে জানান, তিনি সোহমকে ঠান্ডা মাথার ছেলে বলেই জানেন। ভাস্বর সোহমের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, " যেটাই ঘটে যাক না কেন এক্ষেত্রে চড় মারাটা কখনওই উচিত হয়নি। কারণ সোহমও একজন বাবা, আর যার গায়ে হাত তোলা হয়েছে তাঁরও 🔥নিশ্চয়ই সন্তান রয়েছে। যে কোনও সন্তানের কাছে তাঁর বাবার গায়ে হাত তোলার মতো বিষয় অনেকটা প্রভাব ফেলে। এই কাজ করে সোহম কিন্তু ওই ভদ্রলোকের সন্তানের কাছে সারা জীবনের মতন ভিলেন হয়ে গেলেন। কিন্তু তিনি তো ছবির হিরো, ভিলেন নন। তার উপর সোহম একজন বিধায়কও বটে। যতই মাথা গরম হোক না কেন এটা বোধহয় করা উচিত হয়নি।ꦆ ওঁর দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নাকি খারাপ কথা বলা হয়েছে, আমার মনে হয় সেটার মোকাবিলা অন্যরকম ভাবেও করা যেত। তাঁর জন্য গায়ে হাত তোলার কোনও প্রয়োজন নেই।"
বিখ্যাত পরিচালক অদিতি রায়েরও কি সেই একই মত? তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাফ বলেন, "কাউকে চড় মারা একেবা▨রেই সমর্থন করি না। তিনি যেই হোন না কেন। যাঁরা গায়ে হাত তুলেছেন তাঁদের প্রত্যেকেরই হয়তো কোথাও না কোথাও গিয়ে একটা খারাপ লাগার জায়গা অবশ্যই রয়েছে কিন্তু তা জন্য গায়ে হাত তোলাটা আমি🐻 কখনওই সমর্থন করতে পারি না। আমার মতে এটা অনুচিত।"
অভিনেতা মধুমিতা সরকার বর্তমানে সোহমের সঙ্গেই এক ছবিতে কাজ করছেন। তিনি ঘটনাগুলি আবার এক🐠টু অন্যভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন। "প্রথমত আমি কারও স্বপক্ষে বা বিপক্ষে কথা বলছি না, কোনটা ভালো কোনটা মন্দ সেটা বিচার করারও আমি কেউ নই। আসলে আমার মতে কোন🧔ও সমস্যাই কোনও এক পক্ষের দ্বারা সৃষ্টি হয় না, সেটার জন্য দু'পক্ষই দায়ী থাকে।"