হাওড়ার বাম ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে। ইদের ছবিটা আর আগের মতো নেই মৃত ছাত্রনেতারℱ পরিবারে। ছেলেকে হারানোর যন্ত্রণা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে বৃদ্ধ সালেম খানকে। আনিসকে ছাড়া দ্বিতীয় খুশির ইদ, নিয়মমতোই আনিসের পরিবার রোজা রেখেছিল রমজান মাসে। প্রথা মেনে এদিন তাঁর বাড়ি রান্না হয়েছে মুরগির মাংস, চালের রুটি, সিমুইয়ের পায়েস কিন্তু ছেলেই নেই! খাঁ খাঁ করছে ঘর। ইটের ঘরে প্লাস্টার চড়েনি, সেই ঘরে বসেই সুবিচারের অপেক্ষায় আনিসের বৃদ্ধ বাবা। ইদের দিন আনিসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্য়ায়, জয়রাজ ভট্টাচার্য, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়রা।
২০২২ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি রাতের অন্ধকারে নিজের বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান ছাত্রনেতা আনিস খান। পরিবারের তরফে অভিযোগ আনা হয়, আমতা থানার পুলিশে✤র হাতে খুন হয়েছেন আনিস। ওই রাতে আনিসের বাড়িতে পুলিশ এসেছিল, তাঁরাই আনিসকে ছাদ থেকে ফেলে খুন করেছিল বলে অভিযোগ তোলে মৃত ছাত্রনেতার পরিবার। যদিও সিটের চার্জশিটে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, খুন হননি আনিস। ছাদ থেকে নীচে পড়ে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রনেতার। শুরু থেকেই রাজ্য পুলিশে আস্থা ছিল না পরিবারের, আনিসের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের দাবিতে আজও অনড় পরিবা❀র। এর মাঝেই এদিন আনিসের পরিবারের খোঁজ-খবর নিতে তার বাড়িতে হাজির রাহুল-জয়রাজরা।
হাওড়ার আমতায় সারদা দক্ষিণ খাঁ পাড়ায় ছোট্ট বাড়িতে বাস সালেম খানের। আর্থিক অনটন, অসুস্থতা নিত্যসঙ্গী। এতকিছুর মধ্য়েও অতিথি আপ্যায়নে কসুর করেননি। ঘরের সামান্য আয়োজনেই অতিথি সেবা করলেন। আনিসের বাবার সঙ্গে ফ্রেমবন্দি ꦗএকটা মুহূর্ত শেয়ার করে ‘ঘচাং ফু’ খ্যাত অভিনেতা জয়রাজ ফেসবুকের দেওয়ালে লেখেন,'আজ ঈদের সকালটা কাটলো আনিসের বাড়িতে। আনিসের আব্বা সালেম খান নিজের হাতে এগিয়ে দিলেন চালের রুটি, মুর্গির মাংস আর সিমুইয়ের পায়েস'। এই ছবি দেখে চোখ ভিজল নেটপাড়ার। সকলেই জয়রাজদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। কেউ লিখেছেন, ‘খুব ভালো কাজ ꦐকরেছো।’ আবার কেউ লেখেন, ‘আনিসের খুনীরা আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে’।
আনিস খানের মৃত্যু মামলা আপাতত হাইকোর্টে বিচারাধীন। পরিবারের হয়ে এই মামলা লড়ছেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। মামলার চার্জশিটের কপি পর্যন্ত পরিবারের হাতে দেওয়া হয়নি বলে আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিকাশ বাবু, তারপরই আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য পুলিশ। সালেম খানের সাফ বক্তব্য, ‘শাসক দলের পুলিশ দিয়ে সিট গঠন করা হয়েছে। সেই সিটকে আমি মানি না। সিবিআই তদন্ত যতদিন না হচ্ছে আমি ছেলের মৃত্যুর সুবিচার পাব না’। আপতত আদালতের দিকেই চেয়ে রয়েছে পরিবার, অপেক্ষা সিবিআই তদন্তের নির൲্দেশের।