অনেকদিন ঘুরতে যাওয়া হয়নি। কাজের চাপে ফুরসত মিলছে না? একটানা অফিস করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছেন? সেই একঘেয়ে জীবনের মধ্যেই স্বাধীনতা দিবসের 'লং উইকেন্ড'-এ উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে হারিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ আছে। অফিস থেকে সোমবারের (১৪ অগস্ট) ছুটি ম্যানেজ করে নিতে পারলেই চারদিনের ছোট্ট ট্যুরে ঘুরে আসতে পারবেন। চারদিনের ট্যুরে যেমন চিরপরিচিত দার্জিলিঙে ঘুরতে 𝐆পারবেন, তেমনই ঘুরে আসতে পারবেন অফবিট জায়গায়। রংজু ভ্যালি থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউ, পাইনে ঘেরা লামাহাট্টা ও লেপচাজগত, তিনচুলের কমলালেবুর বাগান, চা-বাগানে মোড়া তাকদার নিরিবিলি, মনোরম পরিবেশে মনটা একেবারে চঞ্চল হয়ে উঠবে। যে চারদিন থাকবে, সেই চারদিন ফোন বা ঘড়ির অ্যালার্মের শব্দে নয়, ঘুম ভাঙবে পাখির ডাকে, কিচির-মিচির শব্দে। কানে আসবে দূরে বয়ে চলা নাম না জানা (হয়ত নাম জান) খরস্রোতা নদীর গর্জন। পাহাড়ের কোলে নিজেকে নতুনভাবে খুঁজে পাবেন। ঘাসের কোলে মাথা এলিয়ে দিয়ে জীবনে খুঁজে পাবেন শান্তি। মেঘের সঙ্গে আলাপ হবে, পাহাড়ের মাদকতায় মনের সব ক্লান্তি-গ্লানি দূরে হয়ে যাবে।
স্বাধীনতা দিবসের 'লং উইকেন্ড' প্ল্যানিং
এবার স্বাধীনতা দিবস (১৫ অগস্ট) পড়েছে মঙ্গলবার। অর্থাৎ ১২ অগস্ট পড়েছে শনিবার এবং ১৩ অগস্ট পড়েছে রবিবার। ১৪ অগস্টের ছুট⭕িটা জোগাড় করতে পারলেই অনায়াসে চꦇারদিনের ট্যুর হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে শুক্রবার অফিস করে বেরিয়ে পড়ুন। সেদিন রাতে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনে চড়ে বসুন। পরদিন সকাল-সকাল উত্তরবঙ্গে পৌঁছে যাবেন। তারপর সোমবার রাতের দিক করে ফিরে আসুন। পরদিন সকালে অফিসে চলে যান। মনটা একেবারে তরতাজা হয়ে যাবে। অফিসের ডেস্কের সামনেই বসে থাকলে মনে হবে যে মনটা পাহাড়ে রয়ে গিয়েছে।
কবে কোথায় কোথায় ঘুরবেন?
১) যাত্রা শুরুর রাত (শুক্রবার) এবং প্রথম দিন (শনিবার): শুক্রবার শিয়ালদা থেকে দার্জিলিং মেল ধরুন। রাত ১০ টা ৫ মিনিটে শিয়ালদা থেকে ছাড়বে। শনিবার সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়িতে পৌঁছে য🐼াবেন। গাড়ি ধরে দার্জিলিঙে চলে যান। যাওয়ার পথে কোনওভাবেই মিরিক লেক, গোপালধারা টি এস্টেট, নেপালা সীমানা ভিউপয়েন্ট, লেপচাজগত দেখার সুযো🐟গ হাতছাড়া করবেন না। দার্জিলিঙে পৌঁছে রাতে পাহাড়ের রানির কাছেই থাকুন।
২) দ্বিতীয় দিন (রবিবার): দার্জিলিঙে🌌র বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখতে সকাল-সকাল বেরিয়ে পড়ুন। ঘুম মনাস্ট্রি, ঘুম রেলওয়ে স্টেশন, বাতাসিয়া লুপ, তেনজিং রক, গম্বু রক, রোপওয়ে,রঙ্গিত ভ্যালি টি এস্টেট, পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্ক (চিড়িয়াখানা), বেঙ্গল ন্যাচরাল হিস্ট্র্রি মিউজিয়াম, হিমালয়ান মাউন্টেরিং ইনস্টিটিউট, পিস প্যাগোডা, জাপানিজ টেম্পল ঘুরে দেখুন। রাতে দার্জিলিঙে থাকুন।
৩) তৃতীয় দিন (সোমবার): দার্জিলিং থেকে রংজু ভ্যালিতে চলে যান। যাত্রাপথে তাকদা, তিনচুলে এবং লামাহাটꦇ্টা ঘুরে যেতে পারবেন। রাতটা রঙ্গজু ভ্যালিতে কাটান।
৪) চতুর্থ দিন (মঙ্গলবার): রঙ্গজু ভ্যালি থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে চলে আসুন। যত সকাল-সকাল বেরোবেন,যাত্রাপথে তত জায়গা থেকে দেখে আসতে পারবেন। পেশক, ত্রিবেণী, করোনেশন ব্রিজ হয়ে আসুন। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হাওড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের টিকিট কেট﷽ে রাখলে আরও কিছুটা বেশি সময় হাতে পাবেন। কারণ দুপুর ৩ টে ৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ছাড়বে। যা হাওড়ায় পৌঁছাবে রাত ১০ টা ৩৫ মিনিটে। যাত💫্রপথে বারসোই, মালদা টাউন এবং বোলপুর শান্তিনিকেতনে দাঁড়াবে ট্রেন।
(লেখক পরিচিতি: নিজেকে পাহাড় প্রেমিকা বলতꦕেই ভালোবাসেন সায়নী সেনগুপ্ত। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, প্রেম হল পাহাড়। সায়নীর কথায়, পাহাড়ের সঙ্গে লং-ডিসটেন্স রিলেশনশিপে আছেন।)