গত দেড় বছর ধরে আমি বিবাহিত। যদিও এখন মাস খান🍌ඣেক হল বরের সঙ্গে থাকি না। কেন থাকি না, সেই ঘটনাটায় আসার আগে গোড়া
আমি কলেজের পড়াশোনা শেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজের সঙ্গে যুক্ত হই। সেটিও প্রায় বছর ৬ হয়েই গেল। আমার অফিসের পরিবেশ এমন, সেখানে যাঁদের সঙ্গে মেলামেশা করতে হয়, বা যাঁরা আমার বন্ধু— তাঁদের বেশির ভাগই মুক্ত মনের। প্রেম বা শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে খুব কম জনেরই কোনও রকম ছুতমার্গ বা খুঁতখুতানি আছে। আমার চার পাশে যাঁরা 🅠আছেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই নিত্যনতুন প্রমে হয়। প্রেম ভেঙে যায়। আবারও হয়। তা বলে কি কেউই সুখী দাম্পত্য কাটান না? তাও নয়। এমনও অনেকে আছেন, যাঁরা বহু বছর ধরে বিবাহিত এবং আপাতভাবে দেখে তো মনে হয়, পুরোদস্তুর সুখী।
তবে একথা সত্যি আমার বন্ধুবান্ধব মহলের অধিকাংশই অবিবাহিত এবং শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে বেশ খোলা মনের। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে তেমন নই। খুবই রক্ষণশীল পরিবারে বড় হয়েছি। দীর্ঘ দিন প্রেমের বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা ছিল। যদিও অনেকটা বড় হয়ে যাওয়ার পরে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে, কিন্তু বিষཧয়টি নিয়ে পরিবারে মুক্ত মনের কেউই নন।
সে যাই হোক, ঘটনাচক্রে আমার এই বন্ধুবান্ধব গোষ্ঠীর, মানে সহকর্মীদের সূত্রেই আমার বরের সঙ্গে আলাপ। গোড়ার দিকটায় যখন আমরা কথা বলꦅতে শুরু করি, তখন মনে হয়েছিল, সেও বুঝি আমার মতো কিছুটা রক্ষণশীল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টের পাই, সেই ‘দেখানো’ রক্ষণশীলতার মধ্যে অনেকটাই ছিল আমার মনজয়ের উদ্দেশ্যে। যাই হোক, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই মুখোশ খসে গিয়েছে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমিও টের পেয়েছি, আমার বর মোটেই রক্ষণশীল মানুষ নন। বরং বেশ হুল্লোরবাজই বট𓂃ে। এবং আমার আগে তাঁর বহু নারীর সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক হয়েছে। যদিও এগুলি আমার জন্য খুব বড় কোনও তথ্য নয়। আমি অতীত নিয়ে ভাবতে আগ্রহী নই। বরং ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে বেশি আগ্রহী। তাই এক প্রকার সুখেই কাটতে শুরু করে প্রেম এবং পরবর্তীকালে দাম্পত্য সম্পর্ক।
বিয়ের আগেই আণাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল। সেটি নি𝔍য়ে কোনও সমস্যা ছিল না। বিয়ের পরেও সেই সম্পর্কে জায়গাটি সম্পূর্ণ রূপেই স্বাভাবিক ছিল। এভাবেই মাস আষ্টেক কেটে যায়। এর পরে ধীরে ধীরে টের পেতে থাকি আমার বর আমাদের শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। এর পরেই ঘটে মারাত্মক একটি ঘটনা।
ঠিক হয়, আমরা সমুদ্꧒রের দিকে বেড়াতে যাব। তবে শুধু আমরা দু’জনই নই। আমদের সঙ্গে যাবে আরও একটি কাপল। আমার বরের দুই বন্ধু। যদিও তারা বিবাহ♑িত নয়। কিন্তু প্রেমিক-প্রেমিকা। নির্দিষ্ট দিনে আমরা গাড়িতে করে আমাদের গন্তব্যে পৌঁছোই। প্রথম দিনটি মোটের উপর স্বাভাবিকই কাটে। সমস্যা দেখা দেয়, দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায়।
সেই সন্ধ্যায় আমরা চার জন একসঙ্গে এক রেস্তরাঁয় খেতে যাই। খাবার তো ছিলই, সঙ্গে চার জনের জন্যই ছিল মদ্যপানের ব্যবস্থাও। অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যে আমার বর প্রস্তাব দেয়, সেই রাতে আমরা যদি সঙ্গী-সঙ্গিনী অদলবদল করি কেমন হয়? এই কথা শুনে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। প্রথমে ভাবি, মজা করে বলা। কিন্তু পরে বুঝি, আমার বর পুরোপুরি সিরিয়াস বিষয়টি নিয়ে।🐼 তাতে আমি তীব্র রেগে যাই। ফলে কথা আর এগোয় না।
কিন্তু হোটেলে ফেরার পরে আমার বর ঘরে এসে আবার সেই প্রসঙ্গ তোলে। আমার বুঝতে অসুবিধা হয় না, নেশার ঘোরে বলা কথা নয়, এটি পূর্বপরিকল্পনা মাফিক কথা। আমার অত্যন্ত বিশ্রী লাগে। সেকথা জানানোর পরে, আমার বর বলে, বিষয়টি অত্যন্ত স্বাভাবিক। এমন নাকি হরদমই হয়। অনেকেই করে। আর এখান থেকে ফিಞরে যাওয়ার পরে এসব কথা নাকি কেউ মনেও রাখবে না। আমি প্রতিটি কথায় আমার বিরক্তি প্রকাশ করতে থাকি। তাতে ও আমায় বলে,🍨 যদি আলাদা আলাদা ভাবে রাজি হতে না ইচ্ছে করে, তাহলে আমরা চার জন নাকি একসঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারি। এই পর্যন্ত শুনে আমি আরও রেগে যাই।
বিষয়টি এখানেই শেষ হয় না। এর পরে কিছু ক্ষণের মধ্যে অন্য কাপলটিকে আমাদের ঘরে ডেকে নেওয়া হয়। ওরা আমাদের ঘরে এসে প্রথমে বিষয়টিকে যে কত হౠালকা, সে কথা বো🎶ঝানোর চেষ্টা করে। এবং তার পরে নোংরা রসিকতা শুরু করে। আমি তাতে অংশগ্রহণ না করায়, ওরা আমার সামনেই এক প্রকার ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে। আমার বরও তাতে কিছুটা অংশগ্রহণ করে।
আমার বরের পুরুষ বন্ধু আমায় এক-দু’বার স্পর্শ করার চেষ্টা করে, যদিও আমি সরে যাওয়ায় পারে না। তখন আমি রাগের চোটে বাথরুমে চলে যাই। দরজা বন্ধ করে কাঁদতে থাকি। ঘণ্টা খানেক এভাবᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚে থাকার পরে যখন দরজা খুলে ঘরে ফিরি, দেখি, তিনজনের কেউই আর সেখানে নেই। বুঝতে অসুবিধা হয় না, ওরা তিনজনেই অন্য ঘরে চলে 🔯গিয়েছে।
পরের দিন আমরা কলকাতায় ফিরি। ফেরার পথেই জ্বর আসে🐟 আমার। আমি꧙ বলি, আমাকে বাপের বাড়িতে নামিয়ে দিতে।
সেই থেকে বাবা-মায়ের কাছেই আছি। মাস খানেক কেটে গিয়েছে। আমার বরের সঙ্গে আর কোনও কথা হয়নি। বাবা-মা জিজ্ঞাসা করে, কী হয়েছে? স্পষ্ট উত্তর দিতে পারি না। মনে হয়, অনেক কথা শোনাবে ওরা। বলবে, এই জন্যই আমাদের পরিবারে প্রেম করে বিয়ে কেউ সম্থন করে না। ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু ওরাও বোঝে কিছু সমস্যা হয়েছে। আমꦿার বর যে এমন বিকৃত মনের, সে বিষয়ে অবশ্য কোনও ধারণা নেই।
কী করব? বিবা🍸হবিচ্ছেদের দিকে এগোব? বিচ্ছেদের কারণ হিসাবে কী বলব? সত্যি কথা বলতে নিজেরই এত ঘেন্না লাগে, হাটের মাঝꦉে সে প্রসঙ্গ তুলব কী করে? সাহায্য পেলে ভালো লাগবে।
বিশেষজ্ঞের জবাব:
সম্পর্কবিদ মৌমিতা গুপ্ত এই বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।💦 তাঁর বক্তব্য:
শারীরিক সম্পর্কের বিষয় নিয়ে নানা মানুষের নানা ধরন✱ের ফ্যান্টাসি থাকে শেগুলি যত ক্ষণ না অন্য মানুষকে আঘাত দিচ্ছে, বা অন্যের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তত ক্ষণ কোনও অসুবিধা নেই। আপনার সঙ্গে যা হয়েছে, তা কো♏নও ভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। কারণ ঘটনাটি শুধু আপনার জন্য বিরাট অস্বস্তির কারণ হয়েই দাঁড়ায়নি, আরও দু’জন (আপনার বরের বন্ধু এবং বান্ধবী)-এর দ্বারা হেনস্থারও হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বোঝা যাচ্ছে, আপনার বাড়ির কিছুটা অমতে বিয়ে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিটি আপনার জন্য আরও বেশি করে জটিল। এই অবস্থায় সব কথা খুলে বলতে গেলে বাবা-মায়ের সামনে আপনি অস্বস্তিতে পড়বেন— সেটিও স্বাভাবিক। কিন্তু তবু তাঁদের𓄧 জানানো উচিত বলে মনে হলে, জানাতে পারেন। জীবন আপনার। ফলে কাদের আপনি আপনার ব্যক্তিগত কথা জানাবেন, সেই সিদ্ধান্তও আপনার।
বাবা-মাকে জ🍒ানানোর পরে যদি বিষয়টি এমন দাঁড়ায় যে, ‘প্রেমের সম্পর্ক মানেই খারাপ’— তাহলে সেই ভুল ভাঙ🍃িয়ে দেওয়ার দায়িত্বও আপনার। আশপাশে এণন বহু মানুষের উদাহরণ পাবেন, যেগুলি আপনার কথার সপক্ষে যুক্তি হিসাবে কাজ করবে।
এবার আসা যাক, আপনার বৈবাহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে। আপনার কথা থেকেই পরিষ্কা🦄র, এই সম্পর্ক আপনি আর টিকিয়ে রাখতে চান না। সেক্ষেত্রে হাটের মাঝে সব কথা বলে নিজের অস্বস্তি বাড়তে পারে— এটি যদি আপনি মনে করেন, তাহলে অন্য সহজ একটি রাস্তাܫ আছে। আইনজীবীর পরামর্শ নিয়ে মিউচুয়াল বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার বরের সঙ্গেও আপনাকে কথা বলতে হবে না। পুরোটাই আইনজীবী মারফত হবে। এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বিয়ের সম্পর্কটি থেকে আপনি মুক্তিও পাবেন।
আর যদি এই জাতীয় বিবাহবিচ্ছেদে আপনার বর রাজি না হন? সেক্ষেত্রে আইনি রাস্তা আছে। মামলা মোকদ্দমার রাস্তা আছে। যেহেতু গোটা ঘটনাটির সঙ্গে আরও দু’জন ব্যক্তি জড়িয়ে বা আপনার কথা অনুযায়ী, তাঁ🅠রা আপনাকে হেনস্থার প্রচেষ্টাও করেছেন, তাই আইনি সাহায্য আপনি চাইতেই পারেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আপনি আইনের সাহায্𝓡য পাবেন এবং বিবাহবিচ্ছেদ পাওয়ারও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। শুধু সব কিছুর আগে একজন দক্ষ আইনজীবীর পরামর্শ নিন। তিনিই আপনাকে সঠিক রাস্তা বলে দিতে পারবেন।