কোভিড সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরে ভেন্টিলেটর থেকে বের করার সময় কোমায় তলিয়ে গেলেন রোগী। পরে তাঁর মস্তিষ্কে প্রায় ৪০০ জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে থাকতে দেখে হতবাক চিকিৎসকরা। এই উপসর্গকে বিশ্ব চেনে কোভিড এনসেফেলাইটিস নামে। কোভিড সংক্রমণের প্রকোপ শুরুর আগে উপসর্গটি হেমারেজিক লিউকোএনসেফেলাইটিস নামে চিহ্নিত করা হত। চিকিৎসকদের মতে, বিরল ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জেরে মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে আচমকা প্রদাহ দেখা দেয় যার ফলে স্নায়ুর উপরের মাইয়েলিন আচ্ছাদন নষ্ট হয় অথবা মস্তিষ্কের সাদা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, ভেন্টিলেশন থেকে বেরোনোর সময় কোমায় আচ্ছন্ন হওয়া রোগীই হয়ত ভারতে সন্ধান পাওয়া কোভিড এনসেফেলাইটিস-এর প্রথম স্বীকৃত শিকার। জম্মুর বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর মিথিলেশ নাবরু নামে ওই রোগী কোভিড পজিটিভ চিহ্নিত হওয়ার পরে তাঁকে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রথমে সংক্রমণের জেরে মৃদু উপসর্গ দেখা দিলেও চার-পাঁচ দিন পরে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতিরদ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে প্রথমে তাঁকে জম্মুর এক হাসপাতালে ভরতি করা হয়। চিকিৎসকরা তাঁকে পরীক্ষা করে নিউমোনিয়ার সন্ধান পান। নিঃশ্বাসের সমস্যা দূর করতে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখেন চিকিৎসকরা। রোগীর শারীরিক পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটতে থাকলে জম্মুর হাসাপাতেলর চিকিৎসকরা দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চান। উল্লেখ্য, মিথিলেশ ডায়াবিটিস ও হাইপারটেনশনের পুরনো রোগী ছিলেন। মিথিলেশের চিকিৎসার জন্য দিল্লি থেকে অভিজ্ঞ কার্ডিয়াক সার্জেন মুকেশ গোয়েল, ইন্টারভেনশনিস্ট দেবজীবন ও জরুরি বিভাগের প্রধান প্রিয়দর্শিনী পাল-সহ অ্যাপোলো হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ দলকে জম্মু উড়িয়ে আনা হয়। হার্ট-লাং মেশিনের সাহায্য নেওয়া সত্ত্বেও মিথিলেশ শারীরিক স্থিতি বজায় রাখতে না পারায় তাঁকে প্রথমে দিল্লি নিয়ে যাওয়া যায়নি। দুই-তিন দিনের চেষ্টায় পরিস্থিতি কিছুটা আয়ত্তে এলে রোগীকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবু শেষরক্ষা করা যায়নি।