ঋতমা কৌল দেশজুড়ে করোনাভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৫০০ জন চিকিৎসক। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সাম্প্রতিক তালিকায় সেই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। যদিও অর্ধেকেরও কম চিকিৎসকের ক্ষেত্রে বিমার অর্থ দিয়েছে কেন্দ্র বা বিমার অর্থ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।আইএমএয়ের সভাপতি রঞ্জম শর্মা বলেন, ‘আমাদের সাম্প্রতি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত দেশে করোনা রোগীদের শুশ্রূষায় যুক্ত থাকা ৫১৫ জন চিকিৎসক শহিদ হয়েছেন। তাঁরা অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসক। যাঁদের আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আইএমএয়ের শাখার মাধ্যমে চিহ্নিত করেছি। দেশে ১,৭৪৬ টি শাখা চালু আছে। তবে সংখ্যাটা আসলে অনেক বেশি হতে পারে।’পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে ১৯৪ জন রোগী পিছু একজন চিকিৎসক আছেন। করোনায় মৃত অধিকাংশ চিকিৎসকের (২০১) বয়স ৬০ থেকে ৭০-এর মধ্যে। ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৭১ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। সত্তরোর্ধ্ব ৬৬ জন চিকিৎসক মারা গিয়েছেন। ৩৫ বছরের কম চিকিৎসকের ক্ষেত্রে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ১৮। ৩৫ থেকে ৫০ বছরের গণ্ডির মধ্যে ৫৯ জন চিকিৎসক করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন।কেন্দ্র অবশ্য জানিয়েছে, করোনায় কতজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য তাদের কাছে নেই। যথারীতি তথ্য না থাকার দায় রাজ্যগুলির ঘাড়ে ঠেলতে কোনও কসুর ছাড়েনি নরেন্দ্র মোদী সরকার। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে সংসদে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের আওতায় পড়ে জনস্বাস্থ্য এবং হাসপাতাল। তাই কেন্দ্র কোনও পরিসংখ্যান রাখছে না। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা প্যাকেজের অধীনে স্বাস্থ্যকর্মীদের বিমার আওতায় কতজনকে অর্থ দেওয়া হয়েছে, কতজন চিকিৎসকের বিমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য আছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছিলেন, সেই প্রকল্পের আওতায় বিমার ২৪২ টি ক্লেম পুরো হয়ে গিয়েছে বা সেই প্রক্রিয়া চলছে।তিনি বলেছিলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর মহামারী প্যাকেজের অধীনে যে তথ্য মিলছে, তার উপর ভালোভাবে নজর রাখছি আমরা। সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ৫০ লাখ টাকার বিমা আছে। সেটির মেয়াদ সম্প্রতি বাড়িয়ে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত করা হয়েছে। ৬২ টি ক্লেম পুরো হয়ে গিয়েছে। ১৩০ টির বেশি ক্লেম প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। ৫০ টির বেশি ক্লেম এখনও রাজ্যগুলির থেকে আসেনি।'যদিও কেন্দ্রের তথ্য না থাকার যুক্তি উড়িয়ে দিয়েছেন আইএমএয়ের সভাপতি। তিনি বলেন, 'কীভাবে নিজের দায়িত্ব থেকে হাত তুলে নিতে পারে কেন্দ্র। আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা করার জন্য যখন আধার কার্ড লাগে, তখন ওরা (কেন্দ্র) পরিসংখ্যান রাখতে না পারার বিষয়টি সম্ভব কীভাবে। এটা কত শক্ত হত?'