বিতর্কের মাঝেই নাগাল্যান্ডে ছয় মাসের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হল আফস্পার। কয়েকদিন আগেই সেনার সঙ্গে স্থানীয়দের হিংসার ঘটনায় ১৪ জন নাগরিকের মৃত্যুর পর কেন্দ্রের এই ‘রুটিন’ সিদ্ধান্তে বেজায চটেছেন নাগাল্যান্ডের নাগরিকরা। এর আগে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশের পর নাগা সরকার কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল যাতে আফস্পা প্রত্যাহার করা হয় রাজ্য থেকে।এদিকে নাগরিক হত্যার মর্মান্তিক ঘটনার পর নাগাল্যান্ড থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করতে একটি বিশেষ প্যানেল গঠন করা হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে। ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং সেনসাস কমিশনার বিবেক যোশীর নেতৃত্বে এই প্যানেল গঠিত হয়েছে। জানা গিয়েছে, যতদিন না এই উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল তাদের রিপোর্ট জমা না দিচ্ছে, ততদিন রুটিন মেনে আফস্পা লাগু থাকবে নাগাল্যান্ডে। এরপর প্যানেলের রিপোর্ট অনুযায়ী আফস্পা প্রত্যাহার বা লাগু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সরকারের তরফে। ৪৫ দিনের মধ্যে বিবেক যোশীর প্যানেলের এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা সরকারকে।এদিকে আফস্পার মেয়াদ বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের অভিমত যে সমগ্র নাগাল্যান্ড রাজ্য এতটাই অশান্ত এবং বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে যে সাধারণ নাগরিকদের সাহায্যে সশস্ত্র বাহিনীর ব্যবহার প্রয়োজন।’উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সুরক্ষাবাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় ৬ জনের৷ তার জেরে অশান্তি এবং গ্রামবাসীর সেনার উপর আক্রমণের ঘটনায় মৃত্যু হয় আরও ৮ জন গ্রামবাসীর৷ সেই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করে নোটিস ইস্যু করে মানবাধিকার কমিশন৷ সেই নোটিস পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা সচিব, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব, নাগাল্যান্ডের মুখ্য সচিব এবং সেরাজ্যের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশকে৷ এদিকে ঘটনার প্রেক্ষিতে অমিত শাহ নিজেও বিবৃতি পেশ করেন সংসদে৷ তাঁর দাবি, নিরাপত্তারক্ষীরা সংশ্লিষ্ট গাড়িকে থামতে বলে। তবে সেটি না থামায় সন্দেহের বসে গাড়িটিকে তাড়া করে গুলি চালানো হয়েছিল৷ যদিও প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে যে গাড়িটির দিকে সামনে থেকে গুলি চালানো হয়৷ তাড়া করা হলে গুলি পিছন থেকে হওয়ার কথা ছিল৷ তাছাড়া যেখানে ঘটনাটি ঘটে, সেই স্থানে কোনও চেকপোস্টও ছিল না, তাই গাড়ি দাঁড় করানোর প্রশ্নও ওঠে না৷ সেনাও ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে৷ এই আবহে আফস্পা প্রত্যাহারের জোর দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে।