ভারতীয় সেনাবাহিনী সোমবার পূর্ব লাদাখের উচ্চতায় সামরিক মহড়া শুরু করেছে। নিজেদের দ্রুত প্রতিক্রিয়ার ক্ষমতা যাচাই করতে এবং শক্তি প্রদর্শন করতেই এই মহড়া। ভারত ও চিনের মধ্যকার সংবেদনশীল সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর স্ট্যান্ডঅফের মাঝে এই মহড়া বেশ তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।ভারতীয় সেনার এই মহড়ার মধ্যে ছিল সৈন্য ও সরঞ্জামের আন্তঃ-থিয়েটার গতিবিধি। তাছাড়া নির্ভুলভাবে স্ট্যান্ড-অফ ড্রপস, দ্রুত গ্রুপিং এবং দ্রুত গতিতে শত্রুপক্ষকে আটক করার ক্ষমতাতেও শান দেয় সেনা। সেনাবাহিনীর সেরা প্যারাট্রুপারদের সমন্বয়ে গঠিত 'শত্রুজিৎ' নামক একটি এয়ারবোর্ন ব্রিগেড এই তিন দিনব্যাপী যুদ্ধ মহড়ার কেন্দ্রবিন্দুতে। সৈন্যদের প্রথম দিনই ১৪ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতা অবস্থিত একটি স্থানে ড্রপ করা হয়েছিল।এই বিষয়ে সেনার এক আধিকারিক হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, 'আন্তঃ-থিয়েটার গতিবিধি, নির্ভুলতা যাচাই করার জন্য পাঁচটি ভিন্ন মাউন্টিং ঘাঁটি থেকে ইউএস-অরিজিন C-130J স্পেশাল অপারেশন এয়ারক্রাফ্ট এবং সোভিয়েত-অরিজিন AN-32 মিডিয়াম ট্রান্সপোর্ট প্লেনের মাধ্যমে সৈন্যদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ড্রিলের স্থানে। বিশেষ যানবাহন ও মিসাইল ডিট্যাচমেন্টও ড্রিলের স্থানে আনা হয়।' ভারত-চিন সংঘাতের আবহে এই মহড়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত বিশেষজ্ঞদের। গত ১০ অক্টোবর ভারত-চিন শান্তি আলোচনা ভেস্তে যায়। ভারতীয় সেনার প্রস্তাব খারিজ করে দেয় চিনের পিপল'স লিবারেশন আর্মি। এই বিষয়ে নর্দার্ন কমান্ডের অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল বলেন বিএস জয়সওয়াল, 'চিনকে ভারত নিজের যুদ্ধ কৌশল ও ক্ষমতা প্রদর্শন করছে। স্ট্যান্ডঅফের পর চিনকে রুখে দাঁড়িয়েছিল ভারত, আর এখন PLA-কে বার্তা পাঠাচ্ছে ভারতীয় সেনা। আগেও এই ধরনের ড্রিল হয়েছে, তবে এই আকারে হয়নি।'এদিকে পূর্ব লাদাখে সামরিক গতিবিধি বাড়াচ্ছে চিন। সেই প্রেক্ষাপটে এই ড্রিল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। পূর্ব সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর টহল বাড়িয়েছে PLA। নয়া সেনাও মোতায়েন করেছে সেনা। ভারত-চিন সীমান্তে PLA-র উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের আনাগোনা বেড়েছে। লুংরো লা, জিমিথাং এবং বুম লা - এই তিন এলাকায় চিনের অতিরিক্ত গতিবিধি লক্ষ্য করেছে সেনা। চিনের তরফে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হলে তা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত ভারতীয় সেনা। LAC-র দুই প্রান্তে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার সেনা জওয়ান মোতায়েন বর্তমানে।