ভারতীয় ক্রিকেট টিমের অধিনায়ক। সুতরাং বিরাট কোহলি যে বিপুল অর্থের মালিক, তা বলাই বাহুল্য। তবে বিপুল অর্থ মানে কিন্তু প্রচুর দায়িত্বও বটে। বুদ্ধি খাটিয়ে বিভিন্ন খাতে তাই বিনিয়োগ করেন বিরাট। স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ETF-এর পাশাপাশি স্টার্টআপ, রেস্তোরাঁ ব্যবসাতেও বিনিয়োগ করেন তিনি। আর সেই টাকার অঙ্ক নেহাত্ কম নয়। ৩৩ বছর বয়সেই সফল ক্রিকেটারের পাশাপাশি ক্ষুরধার ব্যবসায়ী বুদ্ধির পরিচয় দিচ্ছেন তিনি।বিরাট কোহলির এই ব্যবসায়ী দিকের সঙ্গে খুব কম ব্যক্তিই পরিচিত।নতুন নয়। মাত্র ২৫ বছর বয়স থেকেই বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা শুরু করেছিলেন তিনি। সেই সময়ে লন্ডন-ভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া স্টার্টআপ 'স্পোর্টস কনভো'-তে অপ্রকাশিত অর্থের বিনিময়ে শেয়ার কিনেছিলেন তিনি। এই সোশ্যাল মিডিয়া স্টার্ট আপের মূল লক্ষ্য হল অনলাইনে ফ্যান এবং ক্রীড়াবিদদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করা।২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক গ্যালাকটাস ফানওয়্যার টেকনোলজি প্রাইভেট লিমিটেডে বিনিয়োগ করেছিলেন। এটি একটি বেঙ্গালুরুভিত্তিক সংস্থা। এটি অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্ম 'মোবাইল প্রিমিয়ার লিগ' (MPL)-এর মালিক৷ কিন্তু পরে এই সংস্থাই BCCI-এর (ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড) অফিসিয়াল কিট স্পনসর এবং মার্চেন্ডাইজ পার্টনার হয়ে ওঠে। ফলে কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট মর্মে বিতর্কে পড়েন বিরাট কোহলি।বেঙ্গালুরু-ভিত্তিক একটি স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস স্টার্টআপেও অংশীদারিত্ব রয়েছে বিরাটের। এই সংস্থার সারা দেশে জিম এবং ফিটনেস সেন্টার রয়েছে। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে, কোহলি ২০১৫ সালে এই সংস্থায় ৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন।ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, কোহলিকে গ্যালাকটাস ফানওয়্যার টেকনোলজি প্রাইভেট লিমিটেডের ৩৩.৩২ লক্ষ টাকার কম্পালসারি কনভার্টিবেল ডিবেঞ্চার বরাদ্দ করা হয়েছিল। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তাঁকে এমপিএল-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর মনোনীত করা হয়। Galactus হল M-League Pte Ltd-এর একটি সাবসিডিয়ারি, যা সিঙ্গাপুরে রেজিস্টার্ড।কোহলির বিনিয়োগের পোর্টফোলিওতে ইউনিভার্সাল স্পোর্টসবিজ (USPL) নামের একটি ফ্যাশন স্টার্টআপ রয়েছে। এখানে তিনি অক্টোবর ২০২০-তে ১৯.৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। বিভিন্ন শপিং সাইটে Wrogn ব্র্যান্ডের পোশাক বেশ জনপ্রিয়। এই সংস্থার জন্য মডেলিংও করতে দেখা যায় বিরাট কোহলিকে।স্পোর্টস ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম, 'কর্নারস্টোন স্পোর্ট এলএলপি', যেটি বিরাটকেও পরিষেবা দেয়, তাতেও বিনিয়োগ করেছিলেন। কর্পোরেট মন্ত্রকের ফাইলিং অনুসারে, ইউএসপিএল দুই বিনিয়োগকারীকে ১০ টাকার নামমাত্র মূল্যে এবং ৪৭,৫৬১ টাকার প্রিমিয়াম পরিমাণে ৪২৮২টি শেয়ার বরাদ্দ করে। উল্লেখ্য, শচীন তেন্ডুলকরও ইউনিভার্সাল স্পোর্টসবিজের একজন বিনিয়োগকারী।বিরাট কোহলি একজন সুপরিচিত রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীও। আরকে পুরম-এ 'নুয়েভা' নামের একটি বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ আছে তাঁর। এটি একটি মাল্টি-কুইজিন রেস্তোরাঁ। সেখানে দক্ষিণ আমেরিকা, পর্তুগাল, ইতালি, স্পেন, জাপান এবং অন্যান্য অঞ্চল থেকে অনুপ্রাণিত ফিউশন খাবার সার্ভ করা হয়। বিরাট কোহলির সবচেয়ে আলোচিত বিনিয়োগ হল, অনলাইন বিমা এগ্রিগেটর 'ডিজিট ইন্স্যুরেন্স'। সাম্প্রতিক বিনিয়োগের রাউন্ডের পরে সংস্থাটির মোট ভ্যালুয়েশান প্রায় ৩.৫ মার্কিন ডলার।বিরাট কোহলি এবং অনুষ্কা শর্মার একসঙ্গে এক ফিনটেক সংস্থায় ০.২৫% শেয়ার রয়েছে। মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ২.২ কোটি টাকা।