আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে ১৬ বছর ধরে অনশন করেছিলেন তিনি। মণিপুরের লৌহ মানবী হিসেবে পরিচিত সেই ইরম চানু শর্মিলা বললেন, যতক্ষণ না এই বিতর্কিত আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে, ততক্ষণ তিনি ভারতীয় সেনাকে রক্ষাকর্তা হিসেবে বিবেচনা করতে পারবেন না। মণিপুরের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেরাজ্যে ফের একবার বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে আফস্পা। পড়শি রাজ্য নাগাল্যান্ডে নিরীহ নাগরিকরা সেনার গুলিতে প্রাণ হারনোর পর থেকেই গোটা উত্তর-পূর্ব জুড়ে আপস্পা বিরোধী সুর চড়িয়েছেন রাজনীতিবিদ থেকে সাধারণ মানুষ। তবে ইরম নিজে এখন আর মণিপুরে থাকেন না। তাঁর রাজনৈতিক প্রভাবও সেই অর্থে নেই মণিপুরে। ২০১৭ সালে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে মাত্র ৯০টি ভোট পেয়েছিলেন তিনি। এরপর তিনি জানিয়েছিলেন যে তিনি আর কোনওদিন নির্বাচনে লড়বেন না।হিন্দুস্তান টাইমসকে ইরম আফস্পা প্রসঙ্গে বলেন, ‘যখনই উত্তর-পূর্ব বা জম্মু ও কাশ্মীরের কেউ আফস্পার কারণে হয়রানির শিকার হন, আমি যন্ত্রণা অনুভব করি। কিন্তু আমি চাই না আমার বাচ্চারা এই বিষয়গুলির সাথে সংযুক্ত থাকুক। আমি চাই তারা শিক্ষা লাভ করুক। আমি চাই তারা বিশ্ব নাগরিক হোক এবং একটি রাষ্ট্র বা অঞ্চলের বাইরে চিন্তা করুক।’মণিপুরের লৌহ মানবী আরও বলেন, ‘এর আগেও আফস্পা ব্যবহার করে সেনা জওয়াবরা ভারতীয় নাগরিকদের অপমান করেছে। এটাই (নাগাল্যান্ডের ঘটনা) প্রথম ঘটনা নয়। ভারতে যতদিন আফস্পা লাগু থাকবে, ততদিন পর্যন্ত আমি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নিজের রক্ষাকর্তা হিসাবে বিবেচনা করব না। এই ঔপনিবেশিক আইনের প্রতিবাদে আমি যখন অনশন শুরু করি তখন আমার বয়স ৩০ বছরের কম ছিল। আমাকে কয়েকবার বাধ্য করা হয়েছিল এই প্রতিবাদ বন্ধ করতে। কিন্তু আমি আমার প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছিলাম। আমার অনশনের সময় আমি যখন হাসপাতালে ছিলাম, তখন বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা আমার সাথে দেখা করতে এসেছিলেন এবং ক্ষমতায় এলে আফস্পা বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু গত আট বছর ধরে দলটি ভারত শাসন করলেও এখনও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’