অবশেষে মুম্বইয়ের মুলুন্দের কারখানায় উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল জনসন ও জনসন প্রাইভেট লিমিটেডকে। গত বুধবার বম্বে উচ্চ আদালত এই রায় দেয়। তবে একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই সংস্থাকে নিজের ঝুঁকিতে করতে হবে। কারণ উৎপাদিত দ্রব্যগুলি কোথাও বিক্রি করা যাবে না। বিচারক এস ভি গঙ্গাপুরওয়ালা ও এস জে দিগের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেওয়ার ফলে সংস্থাটি এখন উভয় সঙ্কটের মধ্যে।জনসন ও জনসন শিশুদের পাউডার তৈরির জন্য বিখ্যাত একটি সংস্থা। ২০১৯ সাল নাগাদ এদের উৎপাদনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মহারাষ্ট্র সরকার। ২০১৮ এর ডিসেম্বর মাস নাগাদ মহারাষ্ট্র সরকারের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার তরফে একটি সমীক্ষা চলছিল। সে সময় জনসনের পাউডার সংগ্ৰহ করে তাও পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষায় দেখা যায়, শিশুদের এই দ্রব্যটি সঠিক গুণমান মেনে তৈরি করা হচ্ছে না। এরপরেই সংস্থার মুলুন্দ কারখানার উৎপাদনের অনুমতিপত্র বাতিল করা হয়। সংস্থাকে বাজার থেকে সমস্ত দ্রব্য তুলে নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল সরকারের তরফে। ২০১৯ সালে পরীক্ষার বিস্তারিত ফলাফল আসে। যা থেকে জানা যায়, শিশুদের এই পাউডার পিএইচ-এর মাত্রা সঠিক নেই। একইসঙ্গে IS 5339:2004 আইন অনুসারেও এর উৎপাদন করা হচ্ছে না।সংস্থার তরফে অবশ্য এই রিপোর্টের ফলাফল অস্বীকার করা হয়। জনসন আবার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার আবেদন জানায়। একইসঙ্গে, পরীক্ষাটি যাতে সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে (সিডিটিএল) হয়, তেমন অনুরোধও করে। তবে রাজ্য এতে বিশেষ আমল দেয়নি। আদালতে এদিন রাজ্য জানায়, জনসনের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে তা রাজ্যের মানুষের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। একইসঙ্গে দিল্লির সাম্প্রতিক সমীক্ষার কথাও তুলে আনে রাজ্য। সরকারের কৌঁসুলি জানান, দিল্লিতেও জনসনের এমন দ্রব্য পাওয়া গিয়েছে যা সরকার নির্ধারিত পদ্ধতি মেনে তৈরি হয়নি।জনসনের তরফে প্রবীণ উকিল রবি কদম এই সময় সিডিটিএল-এ দ্রব্যটি আবার পরীক্ষার অনুরোধ করেন। পাশাপাশি জানান রাজ্য এফডিএ-এর ল্যাব ছাড়া অন্য জায়গায় পরীক্ষার বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দেননি।রবির কথাকে মান্যতা দিয়ে বিচারকের তরফে তিনটি ল্যাবে পরীক্ষা করতে পুনরায় নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়। সিডিটিএল ও এফডিএ-এর ল্যাব ছাড়াও ইন্টারটেক ল্যাব নামের একটি ব্যক্তিগত ল্যাবে পরীক্ষার জন্য নমুন পাঠাতে বলা হয়। একইসঙ্গে রাজ্যকে তিনদিনের মধ্যে এই আদেশ কার্যকর করার নির্দেশ দেয় দুই বিচারপতির বেঞ্চ। পরবর্তী শুনানির দিন ৩০ তারিখ স্থির করা হয়। আপাতত এই পরীক্ষার উপরেই নির্ভর করছে জনসনের ভবিষ্যত।