'কত নম্বর পেয়েছিস?' কেরালার কোচি শহরের বিভিন্ন সিবিএসই স্কুলের পড়ুয়ারা পরীক্ষার ফল বেরোনোর পর একে-অপরকে আর এই প্রশ্ন করছে না! বদলে তাদের কৌতূহল - সহপাঠী কতগুলো 'স্টার' পেয়েছে, কিংবা কী 'ইমোজি' পেয়েছে!এটুকু পড়ে অবাক হলে, জানিয়ে রাখি, এমনটা কিন্তু সত্যিই ঘটছে। কারণ, কোচি শহরের বেশ কিছু স্কুলে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের নম্বর দেওয়ার বদলে ইমোজি এবং স্টার দেওয়া হচ্ছে।সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ সালের নয়া শিক্ষা নীতি অনুসারে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।এক্ষেত্রে মূলত কিন্ডারগার্ডেন থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুদের এমন মজার রিপোর্ট কার্ড দেওয়া হচ্ছে। এবং নয়া গাইডলাইন মেনে প্রথাগত লিখিত পরীক্ষার বদলে বিভিন্ন 'অ্যাক্টিভিটি' অনুসারে তাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে।নতুন ব্যবস্থাপনায় এই শিশুদের পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে কমিউনিকেশন স্কিল, শেখার আগ্রহ এবং সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যরক্ষা এবং মানসিক তথা বৌদ্ধিক বিকাশের উপর নজর দেওয়া হচ্ছে।একটা সময় ছিল, যখন শুধুমাত্র ছাপানো প্রশ্নপত্রের লিখিত উত্তরের নিরিখে সমস্ত শ্রেণির পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করা হত। এখন তাতে বদল আনা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের প্রোজেক্ট ওয়ার্ক, অনুসন্ধানভিত্তিক টাস্ক, কুইজ এবং দলগত কর্মকাণ্ডের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।এমনকী, খুব ছোট বয়স থেকেই পড়ুয়াদের আত্ম-মূল্যায়ন করতে শেখানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের বাবা-মা বা অন্যরা তাদের নিয়ে কী ভাবছেন, সেসব মনযোগ সহকারে শুনতে ও বুঝতে শেখানো হচ্ছে পড়ুয়াদের।এমনকী, এক শ্রেণি থেকে পরের শ্রেণিতে পড়ুয়াদের উত্তীর্ণ করার প্রক্রিয়া যাতে সহজ হয়, তার জন্যও যৌথভাবে মূল্যায়ন করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।যেমন - ধরা যাক, কোনও পড়ুয়া অঙ্ক এবং ইংরেজি কতটা শিখতে পেরেছে, তার মূল্যায়ন করার জন্য দুই বিষয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই একত্রে বসে পরীক্ষার্থীদের জন্য টাস্ক তৈরি করছেন।এই প্রসঙ্গে কোচি শহরের একটি স্কুলের একজন অঙ্কের শিক্ষক সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি ভেঙে বলেন। তিনি উদাহরণ দেন - ধরা যাক, জন্মদিনের পার্টি নিয়ে ইংরেজিতে কোনও একটি লেসন রয়েছে। বাচ্চারা যখন সেই লেসনটি শিখবে, তখন একইসঙ্গে তাদের কোনও অঙ্ক কষতে হতে পারে।এমনকী, অঙ্কের ভয় ভাঙানোর জন্য স্কুলগুলিতে নানা ধরনের 'বোর্ড গেম' খেলানো হচ্ছে বলেও জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এছাড়াও, নিয়ম মেনে পড়াশোনা করার পাশাপাশি প্রত্যেকেরই যে সুষম খাবার খাওয়া ও নিয়মিত শারীরিক কসরত করা উচিত, তাও শিশু বয়স থেকেই পড়ুয়াদের শেখানো হচ্ছে।