আরও একবার প্রাধানমন্ত্রীর আসনে মিৎসোটাকিস। গ্রিসের কনজারভেটিভ নেতা কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস রবিবার দ্বিতীয়বারের জন্য জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করল। এবারে দেশের রূপান্তরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করার অঙ্গীকার করেন কনজারভেটিভ নেতা।সমস্ত ভোট গণনার পর দেখা যায়, মিৎসোটাকিসের নিউ ডেমোক্রেসি পার্টি ৪০.৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে। অন্যদিকে ভরাডুবি হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাসের নেতৃত্বাধীন বামপন্থী সিরিয়াজা পার্টির। তাঁরা ১৮ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে।এই নির্বাচনী ফলাফল বিগত ৫০ বছরের মধ্যে কনজারভেটিভদের জন্য সবচেয়ে ভালো। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশবাসী তাদের পুরস্কৃত করেছেন গ্রীসকে ভঙ্গুর ঋণগ্রস্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য। ‘জনগণ আমাদের নিরাপদ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছে। এবার, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলি দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে’ বলেন মিৎসোটাকিস। গ্রিসের রূপান্তরের জন্য তিনি সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা। প্রাক্তন ম্যাকিনসে পরামর্শদাতা এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক মিৎসোটাকিস কোভিড মহামারীর সময়কাল থেকেই বিগত দুই বছরের শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠে। মাত্র এক মাস আগেই এক নির্বাচনে দুর্দান্ত জয় পেয়েছেন তিনি। তাই দ্বিতীয়বারের জন্য গ্রিসের রাষ্ট্রনেতার মুকুট পাওয়া তেমন আশ্চর্যের কিছু নয়। কিন্তু, সেই সময়ে একটি একক-দলীয় সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয় কনজারভেটিভ পার্টি। অবশেষে জয়ের স্বাদ পেল তাঁরা। নির্বাচনে ভোটাররা ঋণগ্রস্ততার বছরগুলির রাষ্ট্রনায়কদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারোফাকিসের কট্টর বামপন্থী পার্টি তিন শতাংশের কম ভোট পেয়েছে। অন্যদিকে, সিপ্রাসের দল মে মাসের চেয়ে আরও ২৭৫,০০০ টি ভোট কম পেয়েছে। মোট প্রাপ্ত ভোট ১৮ শতাংশের কাছকাছি, যা কনজারভেটিভ পার্টির তুলনায় অনেকটাই কম। বিপুল এই জয়ের পর দেশ বিদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের অভিনন্দন বার্তা পেয়েছেন মিৎসোটাকিস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মিৎসোটাকিসের জয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও অভিনন্দন জানিয়ে টুইটারে লিখেছেন, ‘আসুন একটি শক্তিশালী এবং সার্বভৌম ইউরোপের জন্য একসাথে কাজ করি।’এরই মাঝে নির্বাচনে অংশগ্রহণে দেশের ব্যপক সংখ্যক মানুষের অনীহাও চোখে পড়েছে। এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার নির্বাচন হওয়ার কমেছে ভোটদানের হার। মে মাসে যেখানে ভতদানের হার ছিল ৬১ শতাংশ, সেখানে জুনের নির্বাচনে দেখা গেছে ৫৩ শতাংশেরও কম ভোট পড়েছে। এসবের মাঝেই আপাতত দ্বিতীয়বারের জন্য মিৎসোটাকিসের হাত ধরে পথ চলা শুরু গ্রিসের।