করোনা সামাল দিতে আবারও লকডাউন। শুক্রবার রাত ৮টা থেকে কড়া লকডাউন জারি হচ্ছে দেশের একাধিক বড় শহরে।বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ফের লকডাউন এড়াতে চাইছিলেন প্রশাসনিক কর্তারা। সামাজিক দূরত্ব, করোনা সতর্কতা বৃদ্ধি ইত্যাদিতেই জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তাতে খুব একটা ফল মেলেনি। বরং বুধবার একদিনে রেকর্ড সংখ্যক করোনা আক্রান্ত হয় দেশজুড়ে।ফলে আমজনতার মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ফের লকডাউনই ভরসা। নাইট কার্ফু, বিভিন্ন বিধি-নিষেধ জারি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন করোনা বিধ্বস্ত এলাকায়।মুম্বই, পুনে, নাগপুর- সম্পূর্ণ মহারাষ্ট্রশুক্রবার রাত ৮টা থেকে মু্ম্বই, পুনে ও নাগপুরসহ মহারাষ্ট্রের প্রতিটি শহর, জেলায় জারি হচ্ছে কড়া লকডাউন। এমনিতে মহারাষ্ট্রে নাইট কার্ফু জারি হয়েছে। তার উপর উইকেন্ড লকডাউন। ফলে এদিন রাত ৮টা থেকে আগামী সোমবার সকাল ৭টা পর্যন্ত স্তব্ধ হয়ে যাবে মহারাষ্ট্র।জরুরী পরিষেবা ছাড়া কোনও কিছুই চালু থাকবে না।রায়পুরছত্তিশগড়ের রায়পুর ইতিমধ্যেই কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। সংক্রমণ রুখতে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রায়পুরের সীমানা সিল করা হচ্ছে। আগামী ১০দিন থাকবে কড়া লকডাউন। বন্ধ থাকবে সরকারি-বেসরকারি অফিস, এমনকি ব্যাঙ্কও।শুধুমাত্র জরুরী পরিষেবা ও পরীক্ষার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।ভোপালমধ্যপ্রদেশের ভোপালসহ একাধিক বড় শহরে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে জারি হচ্ছে লকডাউন। জারি থাকবে সোমবার সকাল পর্যন্ত। এমনিতেও মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় রবিবার করে লকডাউন হচ্ছিল। তবে এই সপ্তাহান্ত থেকে শহরাঞ্চলেও জারি হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা।এখনই লকডাউন চলছে কোন শহরে?ছত্তিশগড়ের দুর্গ জেলায় গত ৬ এপ্রিল থেকে জারি হয়েছে কড়া লকডাউন। ৯ দিন জারি থাকবে।আগামী ৯ এপ্রিল থেকে ব্যাঙ্গালুরুতে নাইট কার্ফুআগামী ১০ এপ্রিল থেকে কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালুরু-সহ বিভিন্ন জেলায় জারি হচ্ছে নাইট কার্ফু।সপ্তাহান্ত লকডাউন, নাইট কার্ফু-তে আদৌ লাভ হয়?ধরুন কোনও ব্যক্তি করোনা সংক্রমিত হলেন। এবার উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি শহরে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ালেন, জনবহুল এলাকায় গেলেন। এই সময়ে তিনি ট্রেনে হাতল ধরে দাঁড়ালেন, বা অপরিষ্কার হাতে টাকা দিয়ে জিনিসপত্র কিনলেন, পাবলিক প্লেসে হাঁচলেন-কাশলেন। তাছাড়া কারও বাড়ি যেতে পারেন বা অফিসে একসঙ্গে কাজও করতে পারেন।এর ফলে তাঁর থেকেই আরও বহু ব্যক্তি সংক্রমিত হতে পারেন। সেই সকল ব্যক্তিরাও আবার একইভাবে আরও বহু মানুষকে সংক্রমিত করতে পারেন। এভাবেই চেইন আকারে বাড়ে সংক্রমণ।এই চেইন ভেঙে দেওয়াই লকডাউনের প্রধান উদ্দেশ্য। উইকেন্ড লকডাউন ও নাইট কার্ফুর মাধ্যমে কিছুটা হলেও এই সংক্রমণের চেইন কমানো সম্ভব। সংক্রমণের ধারায় বাধা দেওয়ায় পরবর্তী সময়ে আরও কম ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হবেন।তাছাড়া বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সব স্থানে সম্পূর্ণ লকডাউনও অপশন নয়, এমনই মত প্রশাসনিক কর্তাদের।