দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে তিন শিশু সন্তানের গলার নলি কেটে খুন করার পরে আত্মহত্যা করলেন দম্পতি। শুক্রবার দুপুরে বরাবাঁকির অভিশপ্ত বাড়ি থেকে উদ্ধার করার পরে পাঁচটি দেহ ময়না তদন্তেরক জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সুপার অরবিন্দ চতুর্বেদী জানিয়েছেন, বছর সাঁইত্রিশের ওই ব্যক্তি ও তাঁর ৩৪ বছর বয়েসি স্ত্রী আত্মহত্যা করার আগে ৫ বছর বয়েসি শিশুপুত্র এবং ৭ ও ১০ বছর বয়েসি দুই মেয়ের গলার নলি ও কব্জির শিরা কেটে খুন করেন। ওই পরিবার চরম আর্থিক দেনাগ্রস্ত ছিল বলে তিনি জানান। পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন যে, ১২ বছর আগে দুই পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করেছিলেন ভিন্ন জাতের যুগল। তার পর থেকে সফেদাবাদে পারিবারিক বাড়ির একাংশে তাঁরা বসবাস শুরু করেন। ক্রমে দম্পতির তিনটি সন্তান জন্মায়। দুই দিন দেখা না পেয়ে মৃত যুবকের মা ছেলের পরিবারের খোঁজ নিতে গিয়ে বাড়ির ওই অংশের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। বাড়ির এসি চালু ছিল বলে এই দুই দিন প্রতিবেশীরা ঘটনার কোনও আঁচ পাননি বলে জানা গিয়েছে। ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি-নাতনির সাড়া না পেয়ে বাড়ির পিছন দিকে গিয়ে জানলা দিয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত ছেলের দেহ দেখতে পান বৃদ্ধা। তাঁর থেকে খবর পান বাড়ির অন্যান্য বাসিন্দারা। তাঁরাই থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে বাড়ির ওই অংশে ঢুকে পাঁচটি দেহ উদ্ধার করে। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে বোঝা গিয়েছে যে, ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পরে ঘুমন্ত তিন সন্তানের হাতের শিরা ও গলার নলি রান্নায় ব্যবহৃত ছুরি দিয়ে কেটে ফেলেন ওই দম্পতি। তারপরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন যুবক। হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যা করেন তাঁর স্ত্রী। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তি আগে মোবাইলের ব্যবসা করতেন। কয়েক বছর আগে তিনি একটি মোটর গ্যারাজ খোলেন। ব্যবসার কারণে বিভিন্ন জনের থেকে তিনি দফায় দফায় ৩০ লাখের বেশি টাকা ধার করেন। এ দিকে ব্যবসায় মন্দা দেখা দেওয়ায় সেই টাকা শোধ করতে না পেরে প্রবল চাপের মুখে পড়েন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া সই করা সুইসাইড নোটে নিজেদের আর্থিক সংকট এবং দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন আত্মঘাতী দম্পতি। ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা ছুরি, সুইসাইড নোট-সহ সমস্ত সামগ্রী ফরেন্সিক তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।