এ যেন বলিউড নেমে এল বাস্তবের মাটিতে। ফারজি ওয়েব সিরিজের অনুপ্রেরণায় জাল নোটের জাল উত্তর প্রদেশের মাটিতে। না গল্প কথা নয়, সত্যিই শাহিদ কাপুর অভিনীত 'ফারজি' ওয়েব সিরিজের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণার পর উত্তরপ্রদেশের একটি দল জাল নোট ছাপানো ও তা কম মূল্যে বিনিময় করা শুরু করে৷ কেবল উত্তরপ্রদেশ নয়, সেই জাল নোট ছড়িয়েছে প্রতিবেশ রাজ্যেও। জাল নোটগুলি পঞ্জাব এবং দিল্লিতেও পৌঁছে গেছে বিভিন্ন মানুষের হাত ঘুরে। ঘটনাটি নিয়ে গভীর তদন্তের পরে সামনে এল এই দলটির কারসাজি। একজন স্বর্ণকার এবং তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।পুলিশ জানিয়েছে এই দুজনের কাছ থেকে ৫.৫ লক্ষ টাকা মূল্যের জাল ভারতীয় নোট উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি এই জাল নোট বানানোর কাজে ব্যবহৃত সুক্ষ্ম মানের কাগজ, বিশেষ কালি এবং অন্যান্য উপকরণগুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। দিল্লি এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে জাল মুদ্রার প্রচলন বৃদ্ধি লক্ষ্য করার পরে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল সন্দেহভাজন সদস্যদের উপর নজরদারি শুরু করে। এরপর পুলিশের নজরে আসে শামলি জেলার কাইরানা অঞ্চলের একটি দল জাল নোট মুদ্রণ ও পাচারের সাথে জড়িত।পুলিশের কাছে বিশেষ সূত্রে তথ্য ছিল যে, ওই গ্যাংয়ের একজন সদস্য দিল্লিতে এসেছে। সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ২১ জুন ফাঁদ পাতা হয় এবং কাইরানার বাসিন্দা তাজিমকে জাল ২০০০ টাকার নোট সহ গ্রেপ্তার করে। তার কাছে মোট ২.৫ লক্ষ টাকা মূল্যের জাল নোট পায় পুলিশ৷ জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাজিম জানায় তার প্রতিবেশী ইরশাদের কথা। পেশায় স্বর্ণকার ওই ব্যাক্তিই তার দোকানে জাল নোটগুলি ছাপিয়েছিল। তাজিমকে তারাই পাঠায় জাল নোটগুলি অন্য রাজ্যে পাচার করার জন্য। একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ইরশাদ লকডাউনের আগে স্বর্ণকার হিসেবেই কাজ করত। কিন্তু কোভিডকালে তার ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কোনও ভাবেই যে ক্ষতিপূরণ করতে পারছিলেন না। সেসময় থেকেই তিনি জাল নোট ছাপার পরিকল্পন করেন। ফারজি ওয়েব সিরিজ থেকে এই কাজের অনুপ্রেরণা পেয়েছে বলে স্বীকার করেছেন ইরশাদ। এরপর মে মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ২০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণার পরই ইরশাদ জাল ২০০০ টাকার নোট ছাপানোর কারবার শুরু করে। দিল্লি পুলিশ জাল নোটের কারবারিদের হাতে পেয়ে নিশ্চিন্ত, নিশ্চিন্ত আমজনতাও। তবে এমন খবর পেয়ে সকলেই খানিক আশ্চর্যও হয়েছে ওয়েব সিরিজের গল্প বাস্তবে ঘটতে দেখে।