রাত পোহালেই পেশ হতে চলেছে ২০২২ সালের কেন্দ্রীয় বাজেট। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের দিকে তাকিয়ে কৃষি থেকে শিল্প, রেল থেকে সরকারি প্রকল্প সহ একাধিক দিক নিয়ে এদিন প্রকাশ্যে এসেছে দেশের আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট। কোভিড আবহের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বাজেট পেশ হতে চলেছে। তার আগে, দেশের কৃষি ক্ষেত্র নিয়ে একাধিক বার্তা উঠে এসেছে কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্টে।বাজেটের প্রাক্কালে পেশ হওয়া আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, কৃষি ক্ষেত্রে প্রাইভেট সেক্টরের বিনিয়োগ এখনও উদ্বেগের পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। যাতে কৃষি থেকে আয় বাড়ানো যায়, তার জন্য সরকারের 'ফোকাসড ও টার্গেটেড অ্যাপ্রোচ' রয়েছে কৃষি ক্ষেত্রে। আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, কৃষিতে বৃদ্ধির হারের সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে মূলধনা বিনিয়োগের। বার্ষিক আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, 'কৃষিতে প্রাইভেট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রবল ওঠানামা দেখা গিয়েছে।' সেক্ষেত্রে কৃষিতে 'পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট' ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে স্থির ছিল। সমীক্ষা বলছে, প্রাইভেট কর্পোরেট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নীতি নির্ধারক পরিকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, সামনেই রয়েছে পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচন। তার বহু মাস আগেই কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন নিয়ে প্রতিবাদে উত্তাল হয় পঞ্জাব হরিয়ানা। শেষে আইন নিয়ে পিছু হঠতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সরকার। এদিকে, সেই জায়গা থেকে ২০২২ পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের আগে কৃষি ক্ষেত্রে নির্মলা সীতারমনের মন্ত্রক কোন পদক্ষেপ নেয় সেদিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। উল্লেখ্য, কৃষি আইন তোলার দাবিতে সরব হয়ে টানা ১৩ মাস ধরে প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন দেশের বহু কৃষক। যে আন্দোলনের প্রভাব উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থানে পড়েছিল। এরপর মোদী সরকার সেই আইন তুলে নেয়। পরবর্তীকালে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চিতকরণের দাবিতে সরব হন বহু চাষি। এদিকে, আর্থিক রিপোর্ট বলছে, যেহেতু করোনাকালে কৃষি ক্ষেত্র সেভাবে প্রভাবিত হয়নি , তাই এই সেক্টর থেকে আয়ের ও বৃদ্ধির আশা প্রবল। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তার বৃদ্ধির সম্ভাবনা ৩.৯ শতাংশ। তার আগের অর্থবর্ষে এটি ছিল ৩.৬ শতাংশ। রিপোর্ট বলছে, প্রাইভেট কর্পোরেট সেক্টর ' যাদের বিনিয়োগের হার বর্তমানে ২ থেকে ৩ শতাংশ, তারা যত বেশি কৃষিতে বিনিয়োগ করবে, ততই কৃষিতে প্রাইভেট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সাহায্য হবে।' উল্লেখ্য, এই অর্থনীতির সর্বমোট গ্রস ভ্যালুতে কৃষির অংশ ১৮ শতাংশ। যদিও কৃষি ও তার সংলগ্ন সেক্টর ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে ২০.২ শতাংশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তা ১৮.৮ শতাংশের হাতছানি নিয়ে আশা দেখাচ্ছে দেশকে। সমীক্ষা বলছে, ২০২২ এর আর্থিক বর্ষে কৃষি খাত ৩.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। গত আর্থিক বছরের ৮.৪ শতাংশ সংকোচনের পরে এই অর্থবছরে পরিষেবা খাত ৮.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।