তেইশ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার দুর্ঘটনার মুখে পড়ল ভারতের তেজস এলএসি (লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট) যুদ্ধবিমান। মঙ্গলবার রাজস্থানের পোখরানে ভারতের তিন সামরিক বাহিনীর মিলিত মহড়া সেরে ফেরার পথে রাজস্থানের জয়সলমিরে একটি আবাসনের কাছে ভারতীয় বায়ুসেনার সেই তেজস ভেঙে পড়েছে। ঘটনায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সুরক্ষিতভাবে বিমান থেকে বেরিয়ে আসেন পাইলট। দুর্ঘটনার কারণ জানতে ইতিমধ্যে ‘কোর্ট অফ এনকোয়ারি’-র নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। সেইসব সত্ত্বেও ১০০ শতাংশ ‘দুর্ঘটনাবিহীন’ থাকার রেকর্ড হাতছাড়া হয়ে গেল তেজসের। তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সেই দুর্ঘটনার জন্য এ⭕খনই গেল-গেল রব তোলা ভিত্তিহীন। ২৩ বছরে একবার দুর্ঘটনার মুখে পড়তেᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚ হয়েছে - সেই রেকর্ডও নেহাত খারাপ নয়।
তেজসের ইতিবৃত্ত
নিজের ক্লাসে তেজস হল সবথেকে ছোট এবং সবথেকে হালকা যুদ্ধবিমান। ওই যুদ্ধবিমানের কাঠামো এমনই যে ওজন অনেকটা কম হয়। ব꧑িশেষজ্ঞদের বক্তব্য, তেজস যুদ্ধবিমান ৪.৫ প্রজন্মের মাল্টি-রোল ফাইটার এয়ারক্রাফট। যা নিখুঁতভাবে সামরিক কাজ চালাতে সক্ষম। একটি ইঞ্জিন আছে তেজসে। একটি আসন-বিশিষ্ট তেজস যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি দুই আসনে ট্রেনার ভ্যারিয়েন্টও আছে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে।
তেজসের ইতিহাস
ভারতের নিজস্ব যুদ্ধবিমান তেজসের স্বপ্ন বোনার কাজ শুরু হয়েছিল বহু বছর আগে। দীর্ঘদিনের আলোচনার পরে ১৯৮৪ সালে 'উড়তে' শুরু হয়েছিল তেজস প্রকল্প। ২০০১ সালে প্রথমবার টেকনোলজি ডেমোস্ট্রেটর ১-র পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ২০১১ সালে 'ফিট' সার্টিফিকেট পেয়েছিল তেজস। দীর্ঘ টালবাহানার পর🦂ে অবশেষে ২০১৬ সালে ভারতীয় বায়ুসেনার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের (হ্যাল) তৈরি যুদ্ধবিমান। তিন দশকের বেশি সময় ধরে অপেক্ষার পরে ২০১৬ সালের ১ জুলাই নিজেদের হাতে দুটি তেজস যুদ্ধবিমান পেয়েছিল বায়ুসেনা।
দুর্ঘটনা প্রথম হলেও আগে বিপত্তির মুখে পড়েছে তেজস
মঙ্গলবারের আগে কখনও দুর্ঘটনার মুখে না পড়লেও ২০২০ সালের অক্টোবরেܫ কাঁটাছেড়ার মুখে পড়েছিল তেজস যুদ্ধবিমান। উড়ানের সময় তেজসে যান্ত্রিক গোলযোগ ধরা পড়েছিল। তারপরও দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংকে শৌর্যচক্রে ভূষিত করেছিল ভারত। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য ছিল, গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ অসামান্য দক্ষতায় সেইসময় তেজসের রেকর্ড অক্ষুণ্ণ থেকে গিয়েছিল।
বায়ুসেনায় তেজসের সংখ্যা বৃদ্ধি
'বুড়ো' হয়ে যাওয়া মিগ-২১ যুদ্ধবিমানকে বসিয়ে দিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে বায়ুসেনায় তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমান অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল আশির দশকেই। প্রাথমিকভাবে তেজসকে লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট প্রকল্প হিস🧜েবে চিহ্নিত করা হত। ২০০৩ সালে তেজস নাম দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সাল থেকে ভারতীয় বায়ুসেনায় কর্মরত মিগ-২১ যুদ্ধবিমান কাজ করছে।
আর সেই লক্ষ্যে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৮৩টি তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমান কেনার জন্য হ্যালের সঙ্গে ৪৮,০০০ কোটি টাকার চুক্তি করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। গত বছর নভেম্বরে 𝔍ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য ৯৭টি তেজস মার্ক-১এ যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্তে সবুজ সংকেত দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বাধীন ডিফেন্স কাউন্সিল।