এতটাই গেমে ডুবেছিলেন, জল ভেবে রাসায়নিক খেয়ে নিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের ২০ বছরের যুবক। পুণেতে আবার গেম খেলার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ২৭ বছরের হর্ষলের। ভারতে পাবজির জনপ্রিয়তা যত বেড়েছে, তত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এরকম খবর এসেছে। সেই গেমের নেশায় বুঁদ হয়ে পড়াশোনা শিকেয় তুলে ধরার ঘটনা হামেশাই শোনা যেত। গত বছরই হায়দরাবাদে সেরকমই একটি ঘটনা সামনে এসেছিল। বছর ১৬-র এক ছাত্র পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। কিন্তু পাবজির নেশা ধরার পর থেকেই পরীক্ষায় নম্বর কমতে থাকে। তারইমধ্যে একদিন বাড়ি থেকে নিজেই চলে গিয়ে অপরহণের গল্প ফাঁদে। বাড়িতে নিজেই ফোন করে তিন লাখ টাকা দাবি করে। শেষপর্যন্ত অবশ্য ধরা পড়ে যায় সে।মনোবিদদের বক্তব্য, এমনিতেই ‘হিংসাত্মক’ গেম হিসেবে পরিচিত পাবজি। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া, যুবপ্রজন্মের অনেকেই সেই গেমে এতটাই ডুবে থাকতেন যে অজান্তেই হিংসাত্মক হয়ে উঠতেন। তার প্রভাব পড়ত তাঁদের আচার-আচরণে। যেমন গত বছরেই জম্মু ও কাশ্মীর থেকে জানা গিয়েছিল, এক যুবক এতটাই পাবজিতে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন যে তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অভিভাবক, সমাজকর্মী-সহ সবপক্ষ থেকে অভিযোগ আসছিল। চিনা যোগআদতে ২০১৭ সালে গেমটি আত্মপ্রকাশ করেছিল। সেটির পিছনে তাঁর মূল মাথা ছিলেন বেন্ডন গ্রীন। ব্যক্তিগত কম্পিউটারের ক্ষেত্রে গেমটি তৈরি করেছিলেন পাবজি কর্পোরেশন। যা দক্ষিণ কোরিয়ার 'ব্লুহোল' নামে একটি গেমিং সংস্থার অধীনস্থ। চিনের অনলাইন গেমের বাজার ধরার জন্য পরবর্তীকালে টেনসেন্টের (Tencent) সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল 'ব্লুহোল'। 'টাইমস নাও'-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, 'ব্লুহোল'-এ মাত্র ১০ শতাংশ শেয়ার আছে টেনসেন্টের।চিনা বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও বেজিংয়ের অনুমতি পায়নি পাবজি। একাধিকবার চেষ্টা করেও ছাড়পত্র মেলেনি। শেষপর্যন্ত পাবজিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে চিন। যুক্তি দেওয়া হয়, সেই গেমের ফলে পড়ুয়া ও যুবপ্রজন্মের উপর কুপ্রভাব পড়বে। যার ফল ভয়ানক হতে পারে।ভারতে নিষিদ্ধকেন্দ্রের তরফে অবশ্য পাবজি নিষিদ্ধ করার কোনও নির্দিষ্ট কোনও জানানো হয়নি। আরও ১১৭ টি চিনা অ্যাপের সঙ্গে পাবজি বন্ধ করার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেগুলি ‘ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা, ভারতের প্রতিরক্ষা, দেশের সুরক্ষা ও আইনশৃঙ্খলার পক্ষে ক্ষতিকারক’।