শিশির গুপ্তচিনা উপায়েই এবার চিনকে ঘায়েল করার পথে হাঁটল ভারতীয় সেনা। তারই অঙ্গ হিসেবে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে চিনা আগ্রাসন রুখতে 'সুড়ঙ্গ প্রতিরক্ষা' গড়ে তোলা হল। তার ফলে সীমান্তে ভারতের শক্তি আরও বাড়ল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।দ্বিতীয় চিনা-জাপান যুদ্ধে জাপানিদের বিরুদ্ধে 'সুড়ঙ্গ প্রতিরক্ষা'-র পথে হেঁটেছিল চিন। তাতে সাফল্যও মিলেছিল। পরে আমেরিকার বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধে সেই পন্থা ব্যবহার করেছিল ভিয়েতনাম। ষাটের দশকে কোরিয়ার যুদ্ধে উত্তর কোরিয়াও সেই পথে হেঁটেছিল। শুধু তাই নয়, লাহসা বায়ুঘাঁটিতে যুদ্ধবিমানের ছাউনি হিসেবে সুড়ঙ্গ তৈরি করেছে চিন। দক্ষিণ চিন সাগরের হাইনান দ্বীপেও পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করতেও সেই পথে হেঁটেছে বেজিং।ভারতীয় সেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শত্রুপক্ষের আক্রমণ এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে নিজেদের বাহিনীকে সুরক্ষিত রাখতে বড় আয়তনের হিউম পাইপের (কংক্রিকটের মজবুত পাইপ) ব্যবহার করা হয়েছে। সেগুলির ব্যাস ছয় থেকে আট ফুট। সেই পাইপের মাধ্যমে শত্রুপক্ষের নজর এড়িয়ে অনায়াসে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারবেন জওয়ানরা। পাশাপাশি তুষারঝড় বা প্রবল শৈত্যের হাত থেকে রক্ষা পাবেন তাঁরা। ফলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিনা সেনার কোনওরকম আগ্রাসন রুখতে পুরোপুরি প্রস্তুত আছে ভারতীয় সেনা।সেই প্রস্তুতির মধ্যে শীঘ্রই ভারত ও চিনের সামরিক পর্যায়ের নবম রাউন্ডের বৈঠকে হতে পারে। তাতে পূর্ব লাদাখের সংঘাতপূর্ণ এলাকা থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে আলোচনা হবে। ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উপদেষ্টারা একেবারে স্পষ্ট যে সীমান্তে পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনার কাজটা শুরু হতে চিনের পক্ষ থেকে। কারণ গত মে'র শুরুতে প্যাংগং সো লেকের উত্তর তীরে আগ্রাসনের পথে হেঁটেছিল। পরে গালওয়ান নদী উপত্যকা এবং কোঙ্গলা লা'র কাছে গোগরা-হটস্প্রিংয়েও একইরকম আগ্রাসী পদক্ষেপ করেছিল বেজিং। তবে ভারতীয় কূটনীতি অনুযায়ী, পূর্ব লাদাখ থেকে অবিলম্বে চিনা সেনা সরে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে না। বরং নয়াদিল্লির বিশ্বাস, দীর্ঘ সময় লাগলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পূর্বাবস্থা ফিরে আসবে। এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, ভারতের বিরুদ্ধে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) আগ্রাসী কৌশল সফল হবে।তবে শুধু পূর্ব লাদাখের সীমান্তে নয়, মধ্য, সিকিম এবং পূর্ব সেক্টরে চিনা সেনার গতিবিধির উপর নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। এমনিতেই তিব্বতে দ্রুতগতিতে সামরিক পরিকাঠামো গড়ে তুলছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)।