নয়া চিনা বিদেশমন্ত্রী কিন গাং সম্প্রতি দাবি করেছেন, 'ভারত এবং চিন যৌথ উদ্যোগে সীমান্ত সমস্যা মিটিয়ে ফেলবে।' তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে এবার মুখ খুলল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার কিন গাংয়ের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ভারত তাদের পুরোনো নীতিতেই অবিচল রয়েছে। চিনের সাথে সম্পর্ক ভালো করার জন্য সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বার্তা দেন অরিন্দম বাগচি। বাগচির কথায়, 'ভারতের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান সম্পর্কে সবাই অবগত। সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা আমাদের সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।' তিনি আরও বলেছিলেন, 'দ্বিপাক্ষিক চুক্তি পালন করতে হবে। এবং সীমান্তের স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের একতরফা প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকাতে হবে প্রতিবেশী দেশকে।' (আরও পড়ুন: বিমানে সহযাত্রীর গায়ে টলেট করার ঘটনায় তোপ মহুয়ার, 'পরের বার...', পরামর্শ কুণালকে)
কী বলেছেন চিনের নয়া বিদেশমন্ত্রী?
ꦯউল্লেখ্য, ওয়াং ই-র উত্তরসূরি হিসেবে সম্প্রতি নাম ঘোষণা করা হয়েছে কিন গাংয়ের। এর আগে তিনি আমেরিকায় নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এর আগে ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত শি জিনপিংয়ের প্রটোকল অফিসারও ছিলেন কিন গাং। গত ২৬ ডিসেম্বর কিন গাং এক অপ-এড প্রবন্ধে লিখেছিলেন, 'উভয় পক্ষই পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং যৌথভাবে তাদের সীমান্তে শান্তি রক্ষা করতে ইচ্ছুক।' এদিকে চুশুলে ১৭তম কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের পর চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছিল, 'উভয় পক্ষ পশ্চিম সেক্টরে স্থলভাগে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে।'
ꦿকিন গাং মুখে 'শান্তির বাণী' শোনালেও সীমান্তের পরিস্থিতি কিন্তু অন্য। চিনের ৩০০ সৈন্য তাওয়াঙের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে এসেছিল গত ৯ ডিসেম্বর। এদিকে গত ২০ ডিসেম্বরই লাদাখের চুশুলে দুই দেশের সেনা কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। ভারত ও চিনের এই বৈঠকগুলির ফলে কোথাও কোথাও শান্তি ফিরেছে, তবে সার্বিক ভাবে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে এখনও সামগ্রিক সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। এরই মাঝে কয়েক মাস আগে জানা গিয়েছিল, প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন ফিঙ্গার ৮-এর থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে একটি বড় সেতু বানাচ্ছে চিন। অপরদিকে অরুণাচলেও আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে চিন।
কোথায় কোথায় মোতায়েন রয়েছে চিনা সেনা?
🤪বর্তমানে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই দিকেই ভারত-চিনের সমসংখ্যক সেনা মোতায়েন রয়েছে। রুডগ ঘাঁটি, প্যাংগং সোর দক্ষিণে এবং জিনজিয়াং সামরিক অঞ্চলের জিয়াদুল্লাতে মোতায়েন রয়েছে চিনের আর্মরড এবং রকেট রেজিমেন্টগুলি। ডেমচোক এবং জিনজিয়াংয়ের হোতান এয়ারবেসে তাদের যুদ্ধবিমান এবং বোমারু বিমান মোতায়েন করে রেখেছে পিএলএ এয়ার ফোর্স। এই আবহে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চাইছে ভারত ও চিন। তবে বেজিংয়ের আগ্রাসী মনোভাবের আবহে শান্তি ফেরাতে তাদের সদিচ্ছা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বারবার।