রাজ্য বিধানসভা ও লোকসভার ভোট একই সঙ্গে করানো যায় কি না তানিয়ে দেশ জুড়ে চর্চা। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটিও তৈরি হয়েছে। এক দেশ, এক ভোটের পক্ষে সওয়াল। এদিকে নীতি আয়োগের পক্ষ থেকে এই এক দেশ-এক ভোট এই ধারণাকে সমর্থন করা হয়েছে।এদিকে রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে প্যানেল গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে, যে ভারতে এক দেশ এক ভোট এই উদ্যোগ কি আদৌ বাস্তবায়িত করা সম্ভব? তবে বলে রাখা ভালো ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত গোটা দেশে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট একসঙ্গেই হত। তবে পরবর্তীতে দুটি ভোট আলাদাভাবে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।এদিকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তথা নীতি আয়োগের প্রাক্তন সদস্য বিবেক দেবরায় একটা পেপার সামনে এনেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল গত ৩০ বছরে এমন একটি বছরও হয়নি যে বছরে একটি ভোটও হয়নি। হয় বিধানসভা ভোট, নয় লোকসভা ভোট হয়েছে। এর জেরে যেটা হয়েছে গোটা দেশ জুড়ে এই ভোটের খরচ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সুরক্ষা বাহিনীর প্রয়োজন হয়েছে। মানব সম্পদেরও প্রয়োজন হচ্ছে।বিবেক দেবরায় ও কিশোর দেশাই ( অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) সেই পেপারে উল্লেখ করেছেন, ভোট মানেই মডেল কোড অফ কন্ডাক্টকে প্রয়োগ করা। এর জেরে দিনের পর দিন ধরে সরকারি কাজকর্ম লাটে ওঠে। উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজকর্ম করা যায় না। আর রাজনৈতিক দলগুলি প্রচার করতে ব্যস্ত থাকে। সেক্ষেত্রে এনিয়ে একটা সমাধান সূত্রে আসা দরকার।সেই পেপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, যদি ভারত এই বদলের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারে তবে বিরাট উন্নয়নের দরজা খুলে যাবে শুধু সেটাই নয়। এই যে সবসময় ভোট এসে যাবে, ভোট এসে যাবে এনিয়ে একটি মানসিকতা কাজ করে সেটা থেকে বেরিয়ে এসে দীর্ঘকালীন ক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতেই পারে।এদিকে ল কমিশন অফ ইন্ডিয়া তাদের ১৭০তম রিপোর্টে জানিয়ে দিয়েছে, আমাদের সেই পরিস্থিতিতে ফিরে যাওয়া দরকার যেখানে লোকসভা আর বিধানসভা ভোট সব একসঙ্গেই হত। তবে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করা হলে সেক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। সেটাও খেয়াল রাখা দরকার।কিন্তু কীভাবে একই সঙ্গে লোকসভা আর বিধানসভা ভোট হতে পারে?আইন কমিশনের প্রস্তাব, লোকসভা ভোটের ৬ মাস পরে যে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে তাদের একসঙ্গে ভোট করানো যায়। তবে তার ফলাফলটা বিধানসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে প্রকাশ করা যেতে পারে।