গত অর্থবর্ষ থেকেই দেখা গিয়েছে যে বড় বড় বহুজাতিক সংস্থাগুলি হাজারে হাজারে কর্মী ছাঁটাই করছে। সেই সঙ্গে নয়া কর্মী নিয়োগ নিয়েও 'ধীরে চলো' নীতি গ্রহণ করেছে সংস্থাগুলি। এই অর্থবর্ষের শুরুটাও খুব একটা ভালো হয়নি। অ্যামাজন, ফেসবুক💎ের মতো কর্মী ছাঁটাই হয়েছ🌞ে ভারতীয় আইটি সংস্থাগুলিতেও। তার সঙ্গে আবার 'মুনলাইটিং' নিয়ে সরব হয়েছে আইটি সংস্থাগুলি। এই আবহে ভারতের তিনটি বড় আইটি সংস্থা - টিসিএস, ইনফোসিস এবং এইচসিএল টেক-এ নিয়োগের হার কমেছে প্রায় ৬৫ শতাংশ। যেখানে বিগত বছরগুলিতে গড়ে এই তিনটি সংস্থা মিলিয়ে প্রায় ১.৯৭ লাখ কর্মী নিয়োগ করত, সেখানে গত অর্থবর্ষে তিন সংস্থা মিলিয়ে কর্মী নিয়োগ হয়েছে মাত্র ৬৮ হাজার ৮৮৬।
বিগত অর্থবর্ষের সব ত্রৈমাসিকেই সেভাবে লাভের মুখ দেখেনি সংস্থাগুলি। ত্রৈম𒅌াসিক রিপোর্টে উঠে এসেছে সংস্থাগুলির দৈন্য দশা। এই আবহে কম কর্মী নিয়োগ করে আর্থিক 'বোঝা' থেকে মুক্তি পেতে চাইছে সংস্থাগুলি। এই গোটা পরিস্থিতির সঙ্গে যোগ হয়েছে বিশ্বের তাবড় ব্যাঙ্কগুলির পতনের ঘটনা। সম্প্রতি ক্রেডিট সুইস ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়েছে। মার্কিন সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কও সর্বস্ব খুঁইয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির ওপর মন্দার কালো ছায়া ঘুরঘুর করছে। এই আবহে কর্মী নিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে বিশ্বের তাবড় তাবড় বহুজাতিক সংস্থা। গুগলের মতো 'কর্মচারী বান্ধব' সংস্থা নিজেদের নীতি বদল করেছে। কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হেঁটেছে তারা। যার জেরে আইটি সেক𒁏্টরে কর্মসংস্থানের আকাল দেখা দিয়েছে। ভারতেও অবস্থা প্রায় একই রকম। যার জেরে কলেজ পাশ করা কর্মপ্রার্থীরা চাকরির খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছেন।
গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে কর্মী নিয়োগের সবচেয়ে করুণ দৃশ্য উঠে এসেছে ভারতে। নিয়োগের ২০২১-২২ অর্থবর্ষের তুলনায় গত ত্রৈমাসিকে ভারতের তিন বড় সংস্থা ৯৮.৭ শতাংশ কম কর্মী নিয়োগ করেছে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে যেখানে টিসিএস মোট নিয়োগ করেছিল ১ লাখ ৩ হাজার ৫৪৬ জনকে, সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তারা নিয়োগ করেছে মাত্র ২২ হাজার ৬০০ জনকে। এদিকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে টিসিএস নিয়োগ করেছিল ৫৪ হাজার ৩৯৬ জনকে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সেই সংখ্যাটা কমে হয়েছে ২৯ হাজার ২১৯। এইচসিএল-এর অবস্থাটাও প্রায় এক। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সংস্থাটি নিয়োগ করেছিল ৩৯ হাজার ৯০০ জনকে। তবে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তারা নিয়োগ করে মাত্র ১৭ হাজার ৬৭ জনকে। এদিকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে এই তিন সংস্থা সম্মিলিত ভাবে নিয়োগ করেছিল ৬৮ হাজার ২৫৭ জনকে। সেখানে গত ত্রৈমাসিকে এই সংস্থাগুলি নিয়োগ করেছে মাত্র ৮৮৪ জনক𓆉ে।
এদিকে টিসিএস-এর ক্ষেত্রে গত ১২ মাসের 'অ্যাট্রিশন রেট' (কর্মীদের সংস্থা ছাড়ার হার) ২১.৫ শতাংশ। তবে গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে সেই হার কমে ২০.১ শতাংশ হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে অবশ্য সংস্থা ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে ৪৪ হাজার ফ্রেশারকে কাজে নিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে। এদিকে চলতি অর্থবর্ষে কত সংখ্যক ফ্রেশার নেওয়া হবে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ইনফোসিস কর্তারা। গত ত্রৈমাসিকে সংস্থার অ্যাট্রিশন রেট ছিল ২০.৯ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকের তুলনায় তা ৪ শতাংশ কম। মনে করা হচ্ছে, অন্য সংস্থাগুলিতে কর্মী নিয়োগ ꦛকমে যাওয়ায় সংস্থা ছাড়ার হিড়িকও কমেছে কর্মীদের মধ্যে।