জেসিকা লালকে হত্যা করার দায়ে আজীবনের জেল খাটছিল মনু শর্মা। তাকে সোমবার বিকালে তিহাড় জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেনটেন্স রিভিউ বোর্ডের সুপারিশে সিলমোহর দেন দিল্লির লিউট্যানেন্ট গভর্নর অনিল বাইজল। তারপরেই মুক্তি পেল মনু। ২০০৬ সালে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয় সে।মনু শর্মার উকিল অমিত সাহনি বলেন যে রিভিড বোর্ডের বৈঠকে ১১ মে এই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেটিতেই সম্মতি জানান এলজি ও তার ফলে ছাড়া পেল মনু শর্মা। ১৪ বছর জেলে থাকলে কিছু বিশেষ ধারায় দোষী বাদ দিলে বাকিরা মুক্তির জন্য আবেদন করতে পারে। নভেম্বের ২০১৯ এ মুক্তির জন্য দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করে মনু শর্মা। আবেদনে বলা হয় যে ২৩ বছর (রেমিশন নিয়ে) ধরে জেলে আছে ও সেখানে কোনও সমস্যা সৃষ্টি করেনি। তারপরেও বেআইনি ভাবে চারবার মনু শর্মার মুক্তির আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে রিভিউ বোর্ড। রেমিশন বাদ দিয়ে ১৬ বছর জেলে ছিল মনু শর্মা। মনুর আবেদনে সাড়া দিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট সেনটেন্স রিভিড বোর্ডকে ফের কেসটি পুনর্বিবেচনা করতে বলে। তারপরেই মনুর পক্ষে রায় দেয় রিভিউ বোর্ড।সিদ্ধার্থ বশিষ্ঠ ওরফে মনু শর্মা ৩০ এপ্রিল, ১৯৯৯-তে একটি পার্টিতে হত্যা করে মডেল জেসিকা লালকে। জেসিকার অপরাধ- সে মধ্যরাতের পর মদ দিতে অস্বীকার করে মনুকে। ওই পার্টিতে বার টেন্ডার হিসাবে কাজ করছিলেন জেসিকা।মনু শর্মা হল হরিয়ানার রাজনীতিবিদ বিনোদ শর্মার ছেলে। ২০০৬ সালে ট্রায়াল কোর্টে মনু খালাস পেয়ে যায়। এই নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয় সারা দেশে। এরপর দিল্লি হাইকোর্টে মামলা ওঠে। সেখানে সেই বছরই দোষী সাব্যস্ত হয় মনু।২০১০ সালে রায় বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। তিহাড়ে জেলে একটি এনজিও চালায় মনু। সেটা বন্দিদের ছেলে মেয়েদের পড়াশুনোর দেখভাল করে। ২০১৮ সালে ওপেন প্রিজনে বদলি করা হয় মনুকে। সেখানে সারা দিন জেলবন্দি হয়ে থাকতে হয় না। সকালে বেরিয়ে কাজকর্ম করে বিকালে ফিরে আসা যায়। এই এনজিও-র কাজ মনুর মুক্তি পাওয়ায় বড় ভূমিকা নিয়েছে বলে সূত্রের খবর। মনুকে জেলে ভরার নেপথ্যে যার বড় হাত ছিল, জেসিকা লালের বোন সাবরিনাও তার মুক্তির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। গত মাসেই তিনি বলেছিলেন যে মনুকে মুক্তি দিলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। আমি বিচারের জন্য লড়েছিলাম, সেটা পেয়েছি, বলেন সাবরিনা।