এফএমসিজি, অর্থাৎ - ফাস্♉ট মুভিং কনজিউমার গুডস! যার গোদা বাংলা করলে বোঝায়, গ্রাহকের কাছে সবথেকে দ্রুত গতিতে তাঁর প্রয়োজনীয় যেকোনও সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া।
আজকাল আমাদের স্মার্টফোনে যে সমস্ত পণ্য বিক্রি সংক্রান্ত অ্যাপগুলি রয়েছে, সেগুলির ব্যবসা বাড়ানোর অন্যতম মন্ত্রই হল এই এফএমসিজি। আপনি অনলাইনে অর্ডার করলেন, টাকা পয়সা মিটিয়ে দিলেন, আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত🗹 জিনিসপত্র একেবারে🎶 আপনার দুয়ারে পৌঁছে গেল।
এই নয়া ব্যবস্থায় গৃহস্থের সুবিধা বাড়লেও একটি অভিযোগ মাঝেমধ্যেই ওঠে। বলওা হয়, এই এফএমসিজি-র জন্যই নাকি পাড়ার মুদির দোকানের ব্যবসা মার খাচ্ছে। সত্যিই কি তাই? বিশেষজ্ঞরা কিন্তু এই দাবি পুরোপুরি মানছেন না। যদিও এক্ষেত্রে শহর, গ্রাম ও মফঃস্সলের মধ্যে অনেক ফারাক রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, খুব স্বাভাবিকভাবেই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই♌ পরিবর্তন এসেছে। তাতে পাড়ার মুদিখানা দোকানগুলিকে এক নতুন প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু, তারা যে একেবারে অস♌্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে, এখনই অন্তত এমনটা বলার সময় আসেনি।
এই প্রসঙ্গে ইকোনমিক টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কী বলা হয়েছে তাতে? তাতে বলা হয়েছে, সারা ভারতে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ মুদিখানা দোকান রয়েছে। যে দোকানগুলি আজও গৃহস্থের রোজের🎃 প্রয়োজনীয় সামগ্রীর জোগান𓃲দার হিসাবে প্রধান ভূমিকা পালন করে চলেছে।
শুধু তাই নয়, একেব🐽ারে মেট্রো সিটিগুলি বাদ দিলে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল - এফএমসিজি সংস্থাগুলিরও মূল ভিত্তি কিন্তু এই পাড়ার🅘 মুদিখানা দোকানগুলিই।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে পার্লে প্রোডাক্টসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মায়াঙ্ক শাহকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, 'অদূর ভবিষ্যতে অন্তত 🐎খুচরে বিক্রির ক্ষেত্রে মুদিখানা দোকানগুলির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যে♌তে আমরা দেখছি না।'
যদিও মায়াঙ্ক মানছেন, 'হ্যাঁ, গ্রাহকের কাছে দ্রুত পণ্য পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি ক্রমশ আরও প্রসারিত হচ্ছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত আমাদের বার্ষিক বিক্রির ৮৫ থেকে ৮৭ শতাংশই হয় পাড়ার মুদিখানা দোকানগুলির ﷽মাধ্যমে। তাই এই দোকানগুলি আজও আমাদের মতো সংস্থার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের এদের কথা ভাবতে হয়।'
কিন্তু, মেট্রো শহরগুলির ছবিটা অনেকটাই আলাদা। এত দিন যাঁরা মুদির দোকান🤪 দিয়ে সংসার চালিয়ে এসেছেন, আজ তাঁদেরই রুজিরুটির বিকল্প ভাবনা ভাবতে হচ্ছে।
যেমন, বেঙ্গালুরুর জয়রাম হেগড়ের কথাই ধরা যাক। তাঁর দু'টি মুদির দোকান ছিল। এখন আর তিনি নꦰিজে সেগুলো সরাসরি চালাচ্ছেন না। বদলে সেই দু'টি দোকানই জেপটোর ডার্ক স্টোর হিসাবে বদলে ফেলেছেন। প্রসঙ্গত, ডার্ক স্টোর হল একটি গুদামের মতো। যেখানে এফএমসিজি সংস্থাগুলি সমস্ত পণ্য মজুত রাখে। তারপর ক্রেতাদের অর্ডার অনুসারে সেখান থেকে পণ্য সংগ্রহ করে ডেলিভারি এজে🌊ন্টরা তা ক্রেতার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে আসে।
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে জয়রাম বলেন, 'আমার কাছে আর কোনও উপায় ছিল না। আমি এখন অন্তত কিছু হলেও রোজগার করতে পারছি। সময়ের সঙ্গে দ্রুত নিজেকে বদলাতে হবে। আপনার কাছে যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য টিকে থাকার মতো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে এখনই নিজেকে 🐬বদলে ফেলতে হবে।'
সমস্য়া এখানেও রয়েছে। যেমন নয়ডার বিপিন কুমারের কথাই ধরা যাক। তাঁর নিজস্ব কোনও দোকান ঘর নেই। মোটা টাকা ভাড়া দিয়ে মুদিখানা দোকান চালান তিনি। প্রশ্ন হল, বিপিনের মতো ব্যবসায়ীরা কী করবেন? কারণ, তাঁরা তো আর ওই ভাড়ার দোকান ঘর কোনও এফএমসিজি সংস্থাকে গুদাম হিসাবে ব্যবহার ক🍰রতে দিতে পারবেন না।
বিপিন বলেন, 'যাঁদ﷽ের নিজেদের দোকান ঘর আছে, তাঁরা কোনওভাবে তবু সামলে নিচ্ছেন। আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের সামনে কোনও বিকল্প উপায় নেই। দোকান ঘরের ভাড়া বাড়ছে। কিন্তু, আমাদের রোজগার কমছে। আমাদের এই ব্যবসা বন্ধ করে অন্য কিছু করতে হবে।' প্রসঙ্গত, বিপিনকে প্রতি মাসে তাঁর দোকান ঘরের ভাড়া বাবদ ৪০ হাজার টা🌄কা দিতে হয়!
উপরন্তু, এফএমসিজি সংস্থাগুলি যেভাবে ক্রেতাদের লোভনীয় সব অফার এবং ছাড়া দেয়, তার সঙ্গেও মেট্রো শহরের মুদির দো🐟কানের ব্যবসায়ীরা পাল্লা দিতে পারছেন না। ফলে তাঁদের সমস্যা আরও বাড়ছে।