জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পদত্যাগের জেরে মধ্য প্রদেশে রাজনৈতিক টালমাটালের মাঝেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে তলব করলেন কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধী। দলীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি উপ-মুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলটের সঙ্গে মতবিরোধে জড়িয়ে পড়ার জেরেই হাই কম্যান্ডের চাপের মুখে পড়েছেন রাজস্থানের বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা। সূত্রে খবর, সনিয়া গান্ধীর ডাক পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছন গেহলট। মঙ্গলবার সকালে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পদত্যাগের সংবাদ প্রকাশ পেলে তাঁকে তীব্র আক্রমণ করে টুইট করেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘জাতীয় সংকটের সময় বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানো এক নেতার স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষারই বহিঃপ্রকাশ। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া মানুষের আস্থা এবং আদর্শের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এই সব মানুষ প্রমাণ করেন যে, ক্ষমতা ছাড়া তাঁরা থাকতে পারেন না। এঁরা যত তাড়াতাড়ি বিদায় নেন, ততই মঙ্গল।’গেহলটের টুইটের নীচেই দেখা গিয়েছে স্বয়ং জ্যোতিরাদিত্যের টিপ্পনি, 'আপনিও চলে আসুন।'ঘটনা হল, সিন্ধিয়াকে সমালোচনা করলেও নিজ রাজ্যে বিশেষ স্বস্তিতে নেই গেহলটও। আসন্ন রাজ্যসভা নির্বাচনে রাজস্থানের প্রভাবশালী হিরে ব্যবসায়ী অরোরা পরিবারের এক সদস্যকে মনোনয়ন দেওয়ার উদ্যোগে বাধ সাধেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট। তাই নিয়ে গেহলটের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক বিরোধ দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। মনে করা হচ্ছে, এর জেরেই গেহলটকে দিল্লি ডেকে পাঠান সভাপতি সনিয়া। অন্য দিকে, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ছাড়ার আগে মধ্য প্রদেশের কংগ্রেস সরকারের সংকট ঘনিয়ে এলে সেই বিষয়ে শচীন পাইলট টুইট করেন, ‘আশা করি মধ্য প্রদেশে বর্তমান সংকটের আশু সমাধানসূত্র মিলবে। নেতারা দ্রুত সহমত হবেন। নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার স্বার্থে রাজ্যে স্থায়ী সরকার প্রয়োজন।’রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, মধ্য প্রদেশে কমলনাথ সরকারের টালমাটাল পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ‘স্থায়ী সরকার’ বলতে কোন ইঙ্গিত করেছেন পাইলট? মধ্য প্রদেশের পরে রাজস্থানের গদি দখল করতে বিজেপির সম্ভাব্য চাল নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। কমলনাথের সঙ্গে জ্যোতিরাদিত্যের সংঘর্ষের পরে এবার গেহলট-পাইলট শিবিরের সংঘাত কোন পর্যায়ে পৌঁছয়, এবং তার কতটা ফায়দা তুলতে পারে বিজেপি, আপাতত তাই নিয়ে সরগরম রাজনীতির আঙিনা।