করোনা সর্তকতা জারি রয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। তবে করোনাভাইরাসের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মহারাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দেশের মধ্যে এই রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি(৩৯জন)। ৯ মার্চ মহারাষ্ট্রে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলে। স্বাভাবিকভাবেই থমকে গিয়েছে মহারাষ্ট্রের জনজীবন। বন্ধ স্কুল, কলেজ, থিয়েটার, অডিটোরিয়াম। বন্ধ রয়েছে দোকানপাটও। রাজ্যে মহামারীর প্রকোপ রুখতে মরিয়া উদ্ধব ঠাকরে সরকার।করোনা মোকাবিলায় অভিনব উপায় অবলম্বন করতে চলেছে মহারাষ্ট্র সরকার। করোনাভাইরাসের সম্ভব্য সংক্রমিত ব্যক্তির বাঁ হাতে স্টাম্প মেরে দেবে প্রশাসন। যাতে ঘরে কোয়ারেন্টাইন করা অবস্থায় কেউ পালালে তাঁদের সহজে চিহ্নিত করা যায়। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এক বৈঠকে বসেন, সেখানেই ঘরে গৃহবন্দি অবস্থায় রাখা সন্দেহভাজন করোনাসংক্রমিত ব্যক্তিদের হাতে কালির ছাপ দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। জানা গিয়েছে ১৪ দিন কোনওভাবেই সেই কালির দাগ উঠবে না।মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপী জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণের জন্য যে কালি ব্যবহার করা হয়, তা দিয়েই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো মানুষের বাঁ হাতে ছাপ দেওয়া হবে। যাতে তারা যদি কোনও উপায়ে কোয়ারেন্টাইন থেকে পালায় তাদের সহজেই চিহ্নিত করা যাবে।প্রসঙ্গত গত শুক্রবার নাগপুরের মায়ো হাসপাতাল থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সন্দেহে আইসোলেশনের রাখা ৫ রোগী পালিয়ে যায়। যদিও পরে তাঁদের মধ্যে ৩ জন নিজেরাই ফিরে আসে। কিন্তু এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কোয়ারেন্টাইন থেকে কেউ পালালে তাকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে জানিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার।আপতত করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় স্তরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ভারত। তৃতীয় এবং চতুর্থ স্তরেই এই ভাইরাস আরও মারাত্মক আকার ধারণ করে। সেই উদাহরণই চোখে পড়েছে ইতালি, ইরান, কোরিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলিতে। চিনের উহান প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া এই মারণভাইরাস আজ বিশ্বের ১৬৪টি দেশে প্রভাব বিস্তার করেছে।সোমবার থেকে রাজ্য সরকারে নির্দেশে আগামী ৩১ মার্চ অবধি বন্ধ থাকবে সমস্ত স্কুল-কলেজ। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকেও অনুরোধ করা হয়েছে সবরকমের জমায়েত থেকে দূরে থাকতে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে মুম্বইয়ের সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরের দরজা।প্রত্যেকদিন অর্ধেক সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে। যাতে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ভিড় কমানো সম্ভবকর হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বোরিভালির সঞ্জয় গান্ধী জাতীয় উদ্যান এবং থানে ক্রিক ফ্লেমিংগো পাখিরালয়।‘আগামী ১৫-২০ দিন রাজ্যের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সবরকম সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। লক্ষ্য করা গিয়েছে দ্বিতীয় সপ্তাহের থেকে তৃতীয় সপ্তাহে একলাফে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায়। তাই সতর্ক থাকুন। তবে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। সাবধানতার পথে চলুন’, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।