যেনতেন প্রকারণে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন। বাস-ট্রেন পাননি, তাই হেঁটেই ৮৫০ কিলোমিটারের বেশি দূরে ভিটের পথে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত আর বাড়ি ফিরতে পারলেন না। পথেই মালগাড়ির চাকায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল ১৬ জন পরিযায়ী শ্রমিকের শরীর।মহারাষ্ট্রে জালনায় একটি স্টিলের কারখানায় কাজ করতেন ওই শ্রমিকরা। লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়ে মধ্যপ্রদেশের উমরা ও শাহদোলে নিজেদের বাড়ি ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু গণ পরিবহন বন্ধ। সেজন্য বাধ্য হয়ে ৮৫০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ হেঁটে বাড়ি ফিরবেন ভেবেছিলেন। সেইমতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁরা রওনা দিয়েছিলেন। বদনাপুর পর্যন্ত রাস্তা ধরে হাঁটেন। তারপর ঔরঙ্গাবাদের দিকে রেললাইনে উঠে হাঁটছিলেন। এভাবেই প্রায় ৩৬ কিলোমিটার অতিক্রমের পর ক্লান্ত হয়ে পড়েন। জিরিয়ে নেওয়ার জন্য রেললাইনে বসেছিলেন। গত কয়েকদিনে তো পেটে কতটা খাবার পড়েছিল, তারও তো ঠিক নেই। সঙ্গে এতটা পথ হাঁটার ধকল। কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ১৪ জন লাইনে রেললাইনে বসেছিলেন। দু'জন লাইনের ধারে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তারপর আজ ভোর ৫টা ২২ মিনিটে মালগাড়ির চালক জানান, পারভানি-মানমাড শাখার বদনাপুর এবং কারমাড স্টেশনের মাঝে লাইনের উপর ১৫-২০ জন শুয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৪ জনের মালগাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়েছেন বা তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। দু'জন আহত হয়েছেন। তবে ঔরঙ্গাবাদের পুলিশ সুপার মোকশাদা পাতিল জানিয়েছেন, ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন গুরুতরভাবে আহত হয়েছে। বাকি যে চারজন প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদের কাউন্সেলিং করা হচ্ছে যাতে দুর্ঘটনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে পারি।’ইতিমধ্যে শ্রমিকদের প্রাণহানির জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। মৃতদের পরিবারপিছু পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণাও করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।