সোমবার সকালে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর হামলা চালাল সশস্ত্র বিচ্ছিনতাবাদীরা। ঘটনাটি ঘটেছে কাংপোকপি জেলায়। এই অতর্কিত হামলায় একজন নিরাপত্তা কর্মী জখম হয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আধিকারিক জানান, জিরিবাম জেলায় যাওয়ার কথা ছিল এন বীরেন সিংয়ের। সেখানে সম্প্রতি একজনের মুণ্ডচ্ছেদ করে দুষ্কৃতীরা। এই সফরের আগেই বীরেনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রক্ষীরা আগাম গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে চেয়েছিলেন। সেই অ্যাডভান্স টিমের ওপরেই হামলা হয়। (আরও পড়ুন: বাড়বে ইনসেন্টিভ! ভোট মিট𝔉তেই বদলে যাবে সরকারি কর্মীদের বেতন কাঠামো?)
আরও পড়ুন: একদিনে ৬০০০ পয়েন্টের🦂 পতন অতীত, ৭৭০০০-এর গণ্ডি পার করে ইতিহাস সেনসেক্সের
আরও পড়ুন: বেতন বা ভাতা আটকে রাখা কি প্রতারণামূলক অপরাধ? বড় পর্যবেক্ষণ আদা🍸লতের
রিপোর্ট অনুযায়ী, জাতীয় সড় নং ৩৭-এ এই হামলাটি ঘটে। ✅নিরাপত্তা দলটি ইম্ফল থেকে জিরিবাম জেলার দিকে যাচ্ছিল তখন। সেই সময় কাংপোকপি জেলার কোটলেনের কাছে টি লাইজাং গ্রামে হামলার শিকার হয় তারা। সকাল ১০টা ৩০ মিনিট নাগাদ এই হামবার ঘটনাটি ঘটেছিল। এদিকে এই জিরিবাম জেলায় মুণ্ডচ্ছেদের ঘটনার পরই হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে। বহু মানুষের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে✃ দেওয়া হয়। অনেক সরকারি অফিসেও হামলা চালানো হয়। কয়েকশো মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হ🐬াজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকඣে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘জঙ্গিরা’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই আবহে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে।
প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মেইতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছিল যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছিল স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এদিকে হাই মণিপুর হাই কোর্টে এই নিয়ে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় হাই কোর্টের তরফ থেকে রায় দিয়ে জানানো হয়, মেইতেইদের নাম তফশিলি উপজাতির তালিকায় অন্ত🌳র্ভুক্ত করা সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখুক রাজ্য। এই নির্দেশিকার পরই জো-কুকি সম্প্রদায়ের মানুষরা প্রতিবাদে নামেন। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়।
এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছিল সেই রাজ্যে। এই আবহে গত ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসেই এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা 🍸থেকে কুকি আদিবাসী বনাম মেইতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসা প্রাণ 🌄হারিয়েছেন কয়েকশো সাধারণ মানুষ।
এরܫই মাঝে গত ২০২৩ সালের জুলাই মাসেই ভাইরাল হয়েছিল মণিপুর বিভীষিকার এক অকল্পনীয় ভিডিয়ো। দেখা গিয়েছিল, দুই মহিলাকে নগ্ন করিয়ে ঘোরানো হচ্ছে রাস্তায়। পরে তাঁদের মাঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, তাঁদের গণধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই ঘটনা ঘটেছিল গত ৪ মে। ঘটনার ৭৭ দিন পর এই মামলায় প্রথম গ্রেফতারি হয়। আর সেই একই দিনে, অর্থাৎ, ৪ মে মণিপুরের রাজধানীতে দুই যুবতীকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। সেই মামলায় প্রায় ৮০ দিন পরে গিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল কয়েকজন অভিযুক্তকে। এছাড়াও একাধিক জাতিগত হিংসার বিভীষিকাময় ঘটনা এই গত এক বছরে সামনে এসেছে মণিপুর থেকে। সেখানে বিজেপি নেতা, মন্ত্রীদের বাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার।