ইঞ্জিনে কোনও শক্তি তৈরি হচ্ছে না। এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারকে একথা জানিয়েছিলেন নেপালের ইয়েতি এয়ারলাইন্সের দুর্ঘটনাগ্রস্ত ATR 72 বিমানের পাইলট। প্রাথমিক রিপোর্টে এমনই জানাল নেপালের তদন্তকারী সংস্থা। বুধবার প্রকাশিত রিপোর্টে উঠে এসেছে আরও একাধিক তথ্য। তবে এই দুর্ঘটনার পিছনে পাইলটদের ভুল দায়ী না যান্ত্রিক ত্রুটি, তা এখনো জানা যায়নি।রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে সেদিন বিমানের চালকদের মধ্যে একজনের নতুন পোখরা বিমানবন্দরে প্রযুক্তিগত সাহায্য ছাড়া বিমান অবতরণের প্রশিক্ষণ চলছিল। দুর্ঘটনার আগে ওই দিনই দুর্ঘটনার আগে ২ বার কাঠমান্ডু ও পোখরার মধ্যে বিমান উড়িয়েছেন ওই ২ পাইলট।রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, পাইলটদের আবেদন অনুসারে পোখরা বিমানবন্দরের রানওয়ে ওয়ান টু-তে বিমানটিকে অবতরণের অনুমতি দেয় ATC. এর পর বিমান অবতরণের প্রক্রিয়া শুরু করেন প্রশিক্ষণরত পাইলট। অন্যজন পাশের আসনে বসে গোটা প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছিলেন। বিমানের গতি কমানোর উদ্দেশে পাইলট ডানার পিছনে থাকা ফ্যাপ মোতায়েন করেছেন বলে অন্য পাইলটকে জানান। কিন্তু ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারে ফ্ল্যাপ মোতায়েন হওয়ার কোনও সংকেত নথিভুক্ত হয়নি। উলটে বিমানের ইঞ্জিনের গতি কমতে কমতে ২৫ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। এবং বিমানের প্রপেলারগুলির কৌণিক বিক্ষেপ তার গতির অভিমুখের সঙ্গে শূন্য ডিগ্রিতে চলে যায়।এর পর ওই অবস্থাতেই উড়তে থাকে বিমানটি। একসময় প্রশিক্ষণরত পাইলট (যিনি তখন বিমানটি ওড়াচ্ছিলেন) তিনি বুঝতে পারেন বিমানের ইঞ্জিনে কোনও শক্তি তৈরি হচ্ছে না। এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারকে ২ বার সেকথা জানান তিনি। যদিও FDR-এর তথ্য বলছে বিমানের ইঞ্জিনে কোনও ত্রুটি ছিল না। ইঞ্জিনর শক্তি বাড়াতে থ্রাস্ট লিভারে জোর বাড়ান পাইলট। এতে ইঞ্জিনের গতি বেড়ে ৭৭ শতাংশে পৌঁছয়। কিন্তু প্রপেলার ফেদারিংয়ে থাকায় তখনও ইঞ্জিনে কোনও শক্তি তৈরি হচ্ছিল না।তখন প্রশিক্ষণরত পাইলট পর্যবেক্ষণকারী পাইলটের হাতে বিমান ওড়ানোর দায়িত্ব ছেড়ে দেন। তিনিও বলেন, ইঞ্জিনে শক্তি তৈরি হচ্ছে না। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩১১ মিটার উচ্চতায় ককপিটে শেষ বিপদ সংকেত বেজে ওঠে। এর পর বাঁ দিকে কাত হয়ে সকাল ১০টা ৫৭ মিনিট ৩২ সেকেন্ডে বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়ে। এই দুর্ঘটনার পিছনে কার ত্রুটি দায়ী রিপোর্টে তার কোনও উল্লেখ নেই।বলে রাখি, ATR বিমানে ফ্ল্যাপ নিয়ন্ত্রণের লিভার ও প্রপেলার ফেদারিংয়ের লিভার দুটি একদম পাশাপাশি থাকে। যদিও তাদের আকার, আকৃতি আলাদা।