অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বহিরাগত হস্তক্ষেপ কখনই মেনে নেবে না নেপাল, কারণ সেই সমস্যার সমাধান তারা নিজেরাই করতে সক্ষম। নেপালের ঘরোয়া রাজনীতিতে ভারত ও চিনের ভূমিকা প্রসঙ্গে শনিবার নয়া দিল্লিতে এই মন্তব্য করেন নেপালের বিদেশমন্ত্রী প্রদীপ গিয়াওয়ালি। ভারত-নেপাল দ্বিপাক্ষিক কমিশনের বৈঠকে সহ-নেতৃত্বে থাকা গিয়াওয়ালি বলেন, ভারত ও চিনের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে নেপালের। তাঁর দাবি, দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে চায় নেপাল।পরে নেপাল দূতাবাসে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গেই নেপালের সম্পর্ক চমৎকার। আমরা কখনও নিজেদের সম্পর্কের তুলনা টানি না এবং কখনই আমাদের ঘরোয়া রাজনীতি ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও হস্তক্ষেপ সমর্থন করি না।’নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দের সমাধান করতে চিনের হস্তক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে গিয়াওয়ালি বলেন, ‘আমরা নিজেদের সমস্যার সমাধানে সক্ষম। ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে উদ্বেগ ও চিন্তা থাকতেই পারে, কিন্তু আমরাহস্তক্ষেপ পছন্দ করি না।’তবে সম্প্রতি নেপাল কতমিউনিস্ট পার্টির নেতা পুষ্প কমল দহল ‘প্রচণ্ড’ প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি সম্পর্কে শাসকদলে ভাঙন ধরানোর যে অভিযোগ করেছেন, সে সম্পর্কে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন নেপালের বিদেশমন্ত্রী। শুধুতাই নয়, ভারতের নির্দেশেই ওলি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন, এই প্রসঙ্গে প্রচণ্ডের মন্তব্য সম্পর্কেও কিছুবলতে নারাজ গিয়াওয়ালি জানিয়েছেন, তিনি প্রচণ্ডেরও প্রতিনিধি। তাই এ সম্পর্কে তাঁর কথা বলা বে-এক্তিয়ার হবে। উলটে, পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে তড়িঘড়ি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে ওলির উদ্যোগকে সমর্থনজানিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি নেপালের অভ্যন্তরীণ। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘সংসদীয় ব্যবস্থায় যদি প্রধানমন্ত্রী মনে করেন নতুন নির্বাচনের সময় হয়েছে, তাহলে সারা বিশ্বে এটাই প্রচলিত যে সরকার পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের ডাক দেবে। গণতন্ত্রে সরকার ও দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় জনগণ।’প্রধানমন্ত্রী ওলির সিদ্ধান্তে বর্তমানে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয়েছে নেপাল। গত কয়েক মাসে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) ভিতরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও যথেষ্ট মাথাচাড়া দিয়েছে। এই সংকটকালে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির বিদেশ মন্ত্রকের সহ-মন্ত্রী গুও ইয়েঝৌকে নেপালে পাঠিয়ে এনসিপি-র যুযুধান দুই গোষ্ঠীর দ্বৈরথের সমাধান সূত্র খুঁজতে পাঠায় বেজিং।ইয়েঝৌয়ের সফরের আগে চিনা রাষ্ট্রদূত ওলি ও প্রচণ্ডের মধ্যে সংঘাতের মীমাংসা করার চেষ্টা করেন, যদিও তা নিষ্ফল প্রমাণিত হয়েছে। অন্য দিকে, সীমান্ত নিয়ে নেপালের সঙ্গে বিবাদে চিনের উস্কানি যথেষ্ট মদত দিচ্ছে, এমনই মনে করে দিল্লি।