বাড়ির মত না পেলেও ওড়িশা হাই কোর্টের রায়ে সমলিঙ্গের সঙ্গীনির সঙ্গে বসবাসের অনুমোদন পেলেন ২৪ বছরের তরুণী। অভিযোগ, ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্গীনিকে পাত্রস্থ করার চেষ্টা করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ওড়িশার যাজপুর জেলার অধিবাসী ওই তরুণী লিঙ্গ নির্ধারণের অধিকারের ভিত্তিতে আদালতে আবেদন জানান যে, তিনি নিজেকে পুরুষ হিসেবে চিহ্নিত করেন। শুনানির পরে গত সোমবার তাঁকে সমলিঙ্গের সঙ্গিনীর সঙ্গে থাকার অনুমতি দেয় ওড়িশা হাইকোর্টের বিচারপতি এস কে মিশ্র এবং বিচারপতি সাবিত্রী রাঠোর ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে তরুণীর সঙ্গিনীকে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে যাজপুরের পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্টকে নির্দেশ দেয় আদালত। আবেদনকারী চিন্ময়ী জেনা ওরফে সোনু কৃষ্ণ জেনা সংবিধানের ২২৬ ও ২২৭ পরিচ্ছেদ অনুসারে তাঁর সঙ্গীনিকে আদালতে হাজির করার আবেদন জানান। সোনুর দাবি, বলপ্রয়োগ করে সঙ্গীনির সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন তাঁর মা ও কাকা।রূপান্তরকামী হিসেবে মনোবিদের শংসাপত্র দাখিল করে তিনি আদালতে জানিয়েছেন, স্কুলে ও কলেজে একসঙ্গে পড়াশোনার সময় থেকে ২০১১ সালে সমবয়সী তরুণীর সঙ্গে তিনি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৭ সাল পর্যন্ত তাঁরা পারস্পরিক ইচ্ছায় একত্রে বসবাস করেন। সপড়াশোনার পালা শেষ করে ভুবনেশ্বরে এক বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পাওয়ার পরে শহরের এক কলোনিতে ভাড়া নিয়ে তিনি সঙ্গীনিকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। অভিযোগ, গত এপ্রিল মাসে সেই বাড়িতে হানা দেন তাঁর সঙ্গীনির মা ও কাকা। তাঁরাই জোর করে সোনুর বাড়ি থেকে তাঁর সঙ্গীনিকে নিয়ে চলে যান। এরপর এক যুবকের সঙ্গে তাঁর সহ্গীনিকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে সোনুর দাবি। তাঁদের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের করেছেন সোনু।এ ছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। ভার্চুয়াল শুনানিতে সোনুর সঙ্গীনি আদালতকে জানান, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিনি সোনুর সঙ্গে বসবাসে আগ্রহী। আদালত তার নির্দেশে ওই দুই তরুণীকে একত্রে বসবাসের অনুমোদন দেওয়ার পাশাপাশি সোনুর সঙ্গীনির সঙ্গে তাঁর মা ও দিদির যোগাযোগ রাখতে দেওয়ার নির্দেশ জারি করে। সেই সঙ্গে নারী সুরক্ষা আইনে ওই তরুণীর জন্য পুলিশি নিরাপত্তার নির্দেশও দিয়েছে হাই কোর্ট।