সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির চুক্তি করার পর আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথম প্রতিক্রিয়া দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। টুইটারে শনিবার কার্যত দুই দেশের সম্পর্কের দায় ভারতের ওপর চাপিয়ে দেন তিনি। তিনি বলেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আরও উন্নতির জন্য সঠিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে ভারতকে। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে যে সীমান্তে সংঘর্ষ বিরতির বোঝাপড়া করেছিল দুই দেশ, চলতি সপ্তাহে সেটাই মেনে চলার অঙ্গীকার করেছে দুই দেশ। ভারতের বালাকোট হানার পর ভারতে পালটা এয়ার স্ট্রাইক করেছিল পাকিস্তান। তার দ্বিতীয় বার্ষিকীতে ইমরান খান বলেন যে কাশ্মীরিদের নিজেদের বেছে নেওয়ার দাবিকে মান্যতা দিতে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ভারতের। সমস্ত জমে থাকা দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে রাজি পাকিস্তান বলে তিনি জানান। একই সঙ্গে এলওসি বরাবর সংঘর্ষ বিরতিকে স্বাগত জানান তিনি। তবে সম্পর্কে অগ্রগতির জন্য ইতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টির দায় ভারতের, দাবি ইমরানের। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ কাশ্মীরে গণভোটের দাবিকে মান্যতা দিয়েছে বলে জানান যে যত দ্রুত সম্ভব এর ব্যবস্থা করা উচিত ভারতের। এই নিয়ে এখনও ভারতের থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাকচ্যানেলে আলোচনার মাধ্যমেই সীমান্তে শান্তিচুক্তি করা হয়েছে। তবে পাকিস্তান নিয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের অবস্থান যে বদলায়নি সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। তাদের সাফ কথা ভারত পড়শির সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায়। দ্বিপাক্ষিক স্তরে শান্তিপূর্ণ ভাবে যে কোনও বিষয় দেশ আলোচনা করতে রাজি বলে জানান বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র। এদিন পাকিস্তানের বিমানবাহিনীকেও প্রশংসা করেন ইমরান খান। যেভাবে অভিনন্দনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেটা পাকিস্তানের দায়িত্বশীল ব্যবহারের পরিচয় বলে দাবি করেন তিনি। ইমরান বলেন যে বালাকোটে ভারত যে আক্রমণ করেছিল, সেটার ঠিক সময় মতো প্রত্যাঘাত করে পাকিস্তান। আলোচনার মাধ্যমে সমস্ত বিষয় মেটানো সম্ভব বলে টুইটারে জানান তিনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত পাকিস্তানে তাঁর যে সমালোচকরা আছে তাদের উদ্দেশ্য করেই এই সব টুইট ইমরানের। সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি হয়তো হয়েছে, কিন্তু তিনি যে ভারতের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান থেকে সরছেন না, কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের পুরনো অবস্থানটি আরেকবার পুনরাবৃত্তি করে সেই বার্তাটি দিয়ে রাখলেন ইমরান। প্রসঙ্গত, এর আগে পাকিস্তানের কার্যনির্বাহী এনএসএ বলেছিলেন যে এই চুক্তি পুরোটাই সামরিক স্তরে আলোচনার দ্বারা সম্ভব হয়েছে। যদিও এতবড় চুক্তির আগে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সায় নেওয়া হয়নি, সেটা কার্যত ভাবাই যায় না।