মণিপুরে হিংসা নিয়ে অবশেষে সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নীতি আয়োগের বৈঠকের পরে বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং উপমুখ্যমন্ত্রীদের বিশেষ বৈঠক হয় দিল্লিতে। সেই বৈঠকেরই ফাঁকে বীরেনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসেছিলেন মোদী। এমনই দাবি করা হচ্ছে এনডিটিভির রিপোর্টে। এদিকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের কোনও আমলা বা আধিকারিক এই বৈঠকের সময়ে ছিলেন না সেই ঘরে। যদিও জানা গিয়েছে, মণিপুরে হিংসা কমাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার আগামীতে কোন পথে এগোতে পারে, সেই সম্ভাব্য রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয় এই বৈঠকে। (আরও পড়ুন: বাংলার সরকারি কর্মীদের 'অ্যাপ্♏রেসাল' সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি অর্থ দফতরের)
আরও পড়ুন: যে কোচিং সেন্টারে মৃত্যু হল ৩ 🍷UPSC ꩵক্যান্ডিডেটের, সেখানে পড়ার ফি কত জানেন?
হিংসা কবলিত মণিপুরে ইতিমধ্যেই গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। নির্বাচনের আগেও তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রার দ্বিতীয় পর্বের সূচনা হয়েছি💜ল এই মণিপুর থেকেই। আর নির্বাচনে এই রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবꦏি হয়েছে এবারে। এবার এই রাজ্যের দু'টি আসনেই জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। শুধু তাই নয়, বিজেপি এই রাজ্যে তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে ভোটের নিরিখে। তবে আপাতত বীরেনকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর কোনও পরিকল্পনা বিজেপি করছে না বলেই জানা গিয়েছে। এই আবহে, মণিপুরের পরিস্থিতি ফের স্বাভাবিক করার জন্যে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে🏅 নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মেইতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছিল যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দা🐼বির বিরোধ জানিয়েছিল স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা।
এদিকে হাই মণিপুর হাই কোর্টে এই নিয়ে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় হাই কোর্টের তরফ থেকে রায় দিয়ে জানানো হয়, মেইতেইদের নাম তফশিলি উপজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখুক রাজ্য। এই নির্দেশিকার পরই জো-কুকি সম্প্রদায়ের মানুষরা প্রতিবাদে নামেন। এই আবহে ২০২৩ সালের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর ꦺজেলায়। পরে অবশ্য হাই কোর্ট সংরক্ষণ নিয়ে নিজেদের সেই পর্যবেক্ষণ ফিরিয়ে নেয়। তবে এখনও বিক্ষিপ্ত হিংসা জারি আছে সেই রাজ্যে। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছিল সেই রাজ্যে। এই আবহে গত ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসেই চূড়াচাঁদপুর জেলায় মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে কুকি আদিবাসী বনাম মেইতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসা প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশো সাধারণ মানুষ।
এরই মাঝে গত ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ভাইরাল হয়েছিল মণিপুর বিভীষিকার এক অকল্পনীয় ভিডিয়ো। দেখা গিয়েছিল, দুই মহিলাকে নগ্ন করিয়ে ঘোরানো হচ্ছে রাস্তায়। পরে তাঁদের মাꦺঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, তাঁদের গণধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই ঘটনা ঘটেছিল ২০২৩ সালে ৪ মে। ঘটনার ৭৭ দিন পর এই মামলায় প্রথম গ্রেফতারি হয়। আর সেই একই দিনে, অর্থাৎ, ৪ মে মণিপুরের রাজধানীতে দুই যুবতীকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। সেই মামলায় প্রায় ৮০ দিন পরে গিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছি𒐪ল কয়েকজন অভিযুক্তকে। এছাড়াও একাধিক জাতিগত হিংসার বিভীষিকাময় ঘটনা এই গত এক বছরে সামনে এসেছে মণিপুর থেকে। সেখানে বিজেপি নেতা, মন্ত্রীদের বাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার।