২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর এক রক্তাক্ত অধ্যায় দেখেছিল মুম্বই। পাক সন্ত্রাসবাদীদের তাণ্ডবে গোটা শহর ছিন্নভিন্ন হয়েছিল। সেই দিনের অভিশপ্ত সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের CST স্টেশনে হাজির ছিলেন দেবিকা রোতয়ান। ২৫ ব🔥ছর বয়সী দেবিকা তখন ৯ বছরের ছোট্ট মেয়ে। ২৬/১১ মুম্বই হানার ১৬ বছর পর দেবিকার মনে আজও দগদগে সেই রক্তাক্ত দিনের স্মৃতি। দেবিকা সেই দিন ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস স্টেশনে গুলি পাল্টা গুলির লড়াইয়ের মধ্যেও যার মুখ মনে রেখেছিলেন সে পাক সন্ত্রাসবাদী আজমল কসভ! কসভকে পরে আদালতে চিনে নিতে এক ফোঁটাও সময় লাগেনি সেই সময়ের ছোট্ট দেবিকার! দেবিকার চোখে একনজরে দেখা যাক ২৬/১১র অভিশপ্ত পর্ব।
ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাসে সেদিন ৯ বছরের দেবিকা ছিলেন বাবার সঙ্গে। যাচ্ছিলেন পুনে। দেবিকা বলছেন,' ১৬ বছর হয়ে গেল, আমার এখনও মনে আছে আমি কী করছিলাম, কোথায় কী হচ্ছিল, কীভাবে হামলা হয়েছিল?' ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বরের রাতে সেদিন বাবার সঙ্গে সফর করবে বলে স্টেশনে ছিল দেবিকা। দেবিকা ব🐟লছেন,'বান্দ্রা থেকে ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাসে সবে তখন আমরা নেমেছি, আর তখনই বম্ব বিস্ফোরণ হয়। তারপর একগুচ্ছ গোলাগুলি চলে🍸, সব বয়সের মানুষ আহত হতে থাকেন।' সেদিন গুলি লেগেছিল দেবিকার পায়ে। তাঁকে তখনই জেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দেবিকার পা অপরেশন করে গুলি বের করা হয়। তবে আজও হাঁটতে সমস্যা হয় দেবিকার। ‘আমি অচৈতন্য ছিলাম কিছুক্ষণ’, স্মৃতিচারণা দেবিকার।
এদিকে, ঘটনার তদন্তে নেমে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ দেবিকাকে সাক্ষ্য দানের জন্য জিজ্ঞাসা করে। দেবিকার পরিবার সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়। এরপর আসে কোর্টে কাসভকে চেনার পালা। ২৬/১১র অভিশপ্ত সন্ধ্যায় যাকে নির্মমভাবে গুলি চালাতে দেখেছিলেন ছোট্ট দেবিকা, সেই জঙ্গি কাসভকে কোর্টে দেখেই চিনে নেন তিনি। দেবিকা বলছেন,' আমরা রাজি (সাক্ষ্য দিতে) হয়েছিলাম কারণ, আমার বাবা আর আমি দু'জনেই কাসভকে দেখেছিলাম। যে আমাকে এত যন্ত্রণা দিয়েছিল সেই কাস꧟ভকে আমি চিনতে পেরেছিলাম।' উল্লেখ্য দেবিকা,কসভতে চিনতে পারার পর তাঁর টেস্টিমোনিয়ালের সাহায্যেই কাসভের বিচার হয় ও তাকে দোষী প্রমাণ করা হয়। ২৬/১১র কথা স্মরণ করে দেবিকা বলছেন,'আমি ওকে মারতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তখন আমি ৯ বছরের। আমি কিছু করতে পারিনি ঠিকই, কিন্তু কোর্টে ওঁকে চিনে ছিলাম' সাক্ষী হিসাবে। দেবিকা বলছেন, সন্ত্রাস ‘পাকিস্ত☂ান থেকে শুরু হয়েছে, আর এটা থামা উচিত।’ তিনি বলছেন, ‘আমার পায়ে আজও যন্ত্রণা রয়েছে, কখনও কখনও ফুলে যায়, তবে আমি গর্বিত যে আমি সঠিক কাজ করেছি।’