সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে সাধারণ দরিদ্র নাগরিকদের জন্য ১০% সংরক্ষণের নতুন আইনটি পর্যালোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চকে দায়িত্ব দিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে সংসদে পাশ হয় সংশোধিত (১০৩ তম) সংবিধান আইন এবং তা বেসরকারী, সরকারি অনুদান বহির্ভূত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়। শুধুমাত্র সমাজের দরিদ্র শ্রেণির সুবিধার্থে তৈরি এই আইনে তফশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণ বাদ দেওয়া হয়েছে। এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কুড়িটি আবেদনের শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে। সেই সময় আদালত মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে রেফার করে। আদালত জানায়, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক মাণদণ্ডের ভিত্তিতে আইনের বৈধতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তবে আইনটির বিরুদ্ধে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করেনি শীর্ষ আদালত। এর অর্থ, চাইলে রাজ্য সরকারগুলি অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির ক্ষেত্রে এই সংরক্ষণ বহাল রাখতে পারে।অতীতে কখনও শুধুমাত্র অর্থনৈতিক অবস্থানের ভিত্তিতে সংরক্ষণ জারি হয়নি। নতুন সংশোধিত আইনের আওতায় পড়ছে বার্ষিক ৮ লাখ টাকার কম আয়কারী পরিবারগুলি। এই পরিবারগুলির মালিকানায় ৫ একর পর্যন্ত চাষজমি অথবা ১,০০০ বর্গফিট বা তার বেশি এলাকাযুক্ত ফ্ল্যাট বা পুর এলাকায় ১০০ গজ পর্যন্ত এবং তার বাইরে থাকা অঞ্চলে ২০০ গজ পর্যন্ত বাসযোগ্য জমি থাকতে পারে বলে আইনে বলা হয়েছে। আইনটিকে চ্যালেঞ্জ জানানো প্রধান আবেদনকারী এনজিও মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে রেফার করার দাবি জানিয়েছে আরও একটি কারণে। সংস্থার তরফে আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান আবেদনে জানান, ১০% সংরক্ষণ বর্তমানে চালু ৫০% সংরক্ষণ সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে, যা ১৯৯২ সালে ইন্দ্র সাহানি মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা নির্দেশিত হয়েছিল।অন্য দিকে, বর্তমান সংরক্ষণ নীতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি এবং সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৪৯.৫% সংরক্ষণ বহাল রয়েছে, যার মধ্যে তফশিলি জাতির জন্য ১৫%, তফশিলি উপজাতির জন্য ৭.৫% এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য ২৭% নির্দিষ্ট করা রয়েছে।সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চের সুপারিশে এবার বিতর্কিত আইনটির বিরুদ্ধে জমা পড়া ২০টি আবেদনের শুনানি ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে শুরু হবে। ওই বেঞ্চ গঠন করবেন দেশের প্রধান বিচারপতি।