সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয় রামলালার। দীর্ঘদিন তাঁবুতে থাকার পর রামমন্দিরে স্থান পান শ্রীরাম। এই আবহে অকাল দিওয়ালি দেখা দেয় অযোধ্যা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে একাধিক ভিআইপির আগমন ঘটেছিল সোমবার। তবে সাধারণ রামভক্তদের জন্য গতকাল মন্দিরের দরজা ছিল বন্ধ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও জনসাধারণকে মন্দিরে আসতে বারণ করেছিলেন। এই সব বিধিনিষেধের মাঝেই চড়তে থাকে আম জনতার উন্মাদনা। আর সেই উন্মাদনার বাঁধ যেন ভেঙে যায় আজ কাকভোরে। মঙ্গলবার অন্ধকার থাকতেই হাজার হাজার রামভক্ত ভিড় করেন অযোধ্যার রামমন্দিরের সামনে। আর ভোরে দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে চেষ্টা করেন শ'য়ে শ'য়ে ভক্ত। প্রবল ঠান্ডা উপেক্ষা করে গভীর রাত থেকেই এই সব ভক্তরা রামমন্দিরের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। আর ভোরে মন্দিরের দরজা খুলতেই চরম বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তৈরি হয়। (আরও পড়ুন: '৪৯৬ বছরের অপেক্ষ🐻া', বাবরি মসজিদ… বিতর্ক… রামমন্দির… উলটে দেখুন ইতিহাসের পাতা)
আরও পড়ুন: রামের বাড়ির ‘কার্পেট এরিয়া’ কত জানেন? একনজরে🦄 দেখুন রামমন্দিরের ‘ফ্ল൩োরপ্ল্যান’
আজ মন্দিরের দরজা খোলার মুহূর্তের ভিডিয়োটে সোশ্যাল ম🔥িডিয়ায় পোস্ট করেছে সংবাদসংস্থা এএনআই। ꦜসেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, সাধারণ মানুষ দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য ধাক্কাধাক্কি শুরু করেছেন। অনেকেই টাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পড়ার জোগাড় হন। পদপিষ্ট হওয়ার মতো অবস্থা দেখা দেয়। এই আবহে কয়েকজন দর্শনার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে গেরুয়া পতাকার লাঠি দিয়েই দর্শনার্থীদের ওপর চড়াও হতে দেখা যায় কয়েকজনকে। তবে সম্ভবত ভয় দেখিয়ে তাদের আটকানোই ছিল সেটার উদ্দেশ্য। ঘটনায় সেভাবে কেই আহত হয়েছেন বলে কোনও খবর মেলেনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে সুপ্রিম রায়ের পর শুরু হয়েছিল রামমন্দির নির্মাণের কাজ। ২২ জানুয়ারি সেই মন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল রামলালার। এর আগে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই স্থানেই দাঁড়িয়ে ছিল বাবরি ম﷽সজিদ। বলা হয়, ১৫২৮ সালে সেই মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। এবং দাবি করা হয়, একটি মন্দিরের ওপরেই এই মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। তবে বাবরি মসজিদ আজ নেই। তার স্থানে তৈরি 🅰হয়েছে বিশাল রামমন্দির। বলা হচ্ছে, প্রায় ৫০০ বছর পর রামলালা 'ঘরে ফিরলেন।' মোট ৭০ একর জমি জুড়ে তৈরি হয়েছে এই রামমন্দির কমপ্লেক্স। রামলালাকে দর্শন করতে যাওয়া ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশ করতে হলে প্রথমে বাইরের প্রাচীর অতিক্রম করতে হবে। এই প্রাচীরই মূল কাঠামোকে ঘিরে রয়েছে। ৭৯৫ মিটারের 'পারকোটা'-র ভিতরে পাঁচটি মন্দির এবং গর্ভগৃহ আছে। সেখানেই রামলালার মূল মূর্তি আছে। এবং ভক্তরা এর পরিক্রমা করতে পারবেন।
গর্ভগৃহের ঠিক সামনে, মন্দিরে পাঁচটি মণ্ডপ রয়েছে। গর্ভগৃহ থেকে মন্দিরের প্রথম সিঁড়ি পর্যন্ত গোটা কাঠামোর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০ ফুট। ৩২টি সিঁড়ি উঠলেই রামমন্দিরের মূল কাঠামোয় প্রবেশ করতে পারবেন ভক্তরা। মন্দিরের পূর্ব দিক দিয়ে ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। রামলালাকে দর্শনের পর দক্ষিণ দিক দিয়ে রয়েছে প্রস্থানের পথ। রামলালার মূল মন্দির ছাড়াও মন্দির চত্বরের মধ্যে থাকবে মহর্ষি বাল্মীকি, মহরౠ্ষ বশিষ্ঠ, মহর্ষি বিশ্বামিত্র ও মহর্ষি অগস্ত্যর আলাদা আলাদা মন্দির। এছাড়া নিষাদ রাজ, সবরী মাতা ও দেবী আহল্যার মন্দিরও থাকবে মন্দির চত্বরের ভিতরে।