করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েভ সবে স্তিমিত হচ্ছে। এরই মধ্যে কেরলে শুরু জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। বৃহস্পতিবার কেরলে মশাবাহিত এই রোগে ১৩ জন আক্রান্তের হদিশ মিলল।সবকটি নমুনাই তিরুবনন্তপুরম জেলার। পুনের ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে সেগুলি পাঠানো হয়েছিল।১৩ জনের মধ্যে একজন ২৪ বছর বয়সী অন্তঃসত্বাও আছেন। গত মাসে হঠাত্ই জ্বর, সর্দি, মাথাব্যাথা এবং ত্বকে লাল লাল দাগ হতে শুরু করে ওই মহিলার। চিকিত্সকদের পরমার্শ ও পর্যবেক্ষণের পর তাঁর নমুনার বিশেষ টেস্টের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।জিকা ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়? আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, এটি মশাবাহিত রোগ। এইডিস প্রজাতির মশা জিকা ভাইরাসের বাহক। সাধারণত দিনের বেলায় এই মশা কামড়ায়। এই একই প্রজাতির মশা থেকে ডেঙ্গু, চিকেনগুনিয়া এবং ইয়েলো ফিভারের মতো রোগ হয়।চিন্তার বিষয় হল, জিকা ভাইরাস অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ভ্রুণেও পৌঁছে যেতে পারে। এর ফলে Microcephaly বা অন্যান্য জন্মগত ত্রুটি আসতে পারে ভ্রূণে। হতে পারে প্রিটার্ম জন্ম বা মিসক্যারেজও।ইউএস সেন্টার্স ফর ডিজিজ কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (CDC) মতে, যৌন মিলনের সময়েও একজনের থেকে অপরজনের শরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।তাই অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, শিশুদের সাবধানের রাখা প্রয়োজন। যাঁরা কনসিভ করার পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ :জ্বর, সর্দি, মাথাব্যাথা এবং ত্বকে লাল লাল দাগ হতে পারে। সেই সঙ্গে চোখে লাল লাল ভাব, গা-হাত-পা যন্ত্রণা হয়।সাধারণত ২-৭ দিন এর সিম্পটম থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, জিকা আক্রান্তদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই কোনও উপসর্গ দেখা যায় না।চিকিত্সা :জিকা ভাইরাস আক্রান্তের জন্য আলাদা করে কোনও চিকিত্সা নেই। সাধারণত জ্বর, যন্ত্রণার ওষুধের পাশাপাশি আক্রান্তকে প্রচুর জল পান এবং বিশ্রামের পরামর্শ দেন। জিকা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে যদিও বহু স্থানে গবেষণা চলছে।মশা জন্মানোর সম্ভাবনা দূর করুন :বাড়ির আশেপাশে ১০০ মিটারের মধ্যে কোথাও যেন জল না জমে থাকে তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন। ভাঙা কলসি, টায়ার, অব্যবহৃত চৌবাচ্চা, জমে থাকা নর্দমা, এমনকি ফুলদানির জলেও মশা জন্মাতে পারে। নিজেও এদিকে নজর রাখুন এবং প্রতিবেশীদের অনুরোধ করুন।