কম দামি ফোন। এটুকু বললেই খালি চিনা কোম্পানিগুলোর নাম মনে পড়ে? এবার তাতে বদল আনতে চাইছে ভারত। ১২ হাজার টাকার চেয়ে কম দামে ডিভাইসের বাজারে চিনা সংস্থাদের রমরমা কমাতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে, শাওমি জাতীয় ব্র্যান্ডগুলি এতে সরাসরি প্রভাবিত হবে।ওয়াকিবহাল মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারতের বাজারে সস্তার ফোনের সেগমেন্ট থেকে চিনা সংস্থাদের কার্যত সরিয়ে দেওয়া হবে। চিনা ব্র্যান্ডগুলির কারণে স্থানীয় নির্মাতারা প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে পারেন না। তাই তাদের উপর চাপ কম করার বিষয়েই ভাবা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রে মিলেছে এই খবর।বেশিরভাগই চিনা ফোনভারতের এন্ট্রি-লেভেল বাজার থেকে বাদ দিলে Xiaomi-র মতো সংস্থাগুলি বিপুলভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে ভারতের উপর ভর করেই ফুলেফেঁপে উঠেছে চিনা সংস্থাগুলি। মার্কেট ট্র্যাকার কাউন্টারপয়েন্টের মতে, ১৫০ ডলারের কম দামের স্মার্টফোনের ক্রেতা প্রচুর। ২০২২-এর জুন পর্যন্ত ত্রৈমাসিকে ভারতের স্মার্টফোন বিক্রির মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই এই সেগমেন্ট থেকে হয়েছে। আর তার ৮০%-ই চিনা কোম্পানির ফোন।শেয়ার বাজারে প্রভাবএই খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই Xiaomi-র শেয়ারে পতন হয়। সোমবার হংকংয়ে ট্রেডিংয়ের সময়ে বিপুল লোকসান হয়েছে। এক ধাক্কায় ৩.৬% কমে যায় শেয়ার দর। চলতি বছর শাওমির শেয়ার প্রায় ৩৫% কমেছে।কর ফাঁকি!প্রসঙ্গত, নয়াদিল্লি শাওমি, ওপ্পো এবং ভিভো-র মতো চিনা সংস্থাগুলির আর্থিক খাতাপত্র খতিয়ে দেখছে। তাতে কর ফাঁকি এবং অর্থ পাচারের মতো অভিযোগও উঠে এসেছে। সরকার এর আগে Huawei Technologies Co. এবং ZTE Corp. টেলিকমের সরঞ্জাম নিষিদ্ধ করে। যদিও চাইনিজ নেটওয়ার্কিং গিয়ার নিষিদ্ধ করার এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি নীতি নেই। ওয়্যারলেস ক্যারিয়ারদের তবুও বিকল্প কোনও সংস্থার থেকে কেনার জন্য উত্সাহিত করা হয়।Xiaomi, Realme এবং Transsion-এর প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে উত্তর দেননি। ব্লুমবার্গের তরফে কেন্দ্রীয় প্রযুক্তি মন্ত্রকের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা যায়নি।ভারতীয় স্মার্টফোন সংস্থালাভা এবং মাইক্রোম্যাক্সের মতো দেশীয় সংস্থাগুলি এক সময়ে ভালই বাড়ছিল। কিন্তু চিনা স্মার্টফোনের আগ্রাসী প্রভাবে তারা যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছে। তাদের বিপুল পুঁজি, দুরন্ত মার্কেটিং, কম দাম, ভাল স্পেসিফিকেশনের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছে না মাইক্রোম্যাক্সরা। সরকার যদিও আলাদাভাবে চিনা সংস্থাগুলিকে স্থানীয় সাপ্লাই চেইন, ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক এবং ভারত থেকে রপ্তানি করার অনুরোধ করছে। তার থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে, ভারতের বাজারে চিনা বিনিয়োগের বিষয়ে, এখনও আগ্রহী নয়াদিল্লি। তবে তার জন্য যাতে স্থানীয় সংস্থাগুলির ক্ষতি না হয়, সে বিষয়েও ভাবছে কেন্দ্র।