২১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে পিতৃপক্ষ যা শেষ হবে ৬ অক্টোবর। তার পর অর্থাৎ ৭ অক্টোবর থেকে দুর্গাপুজো শুরু। পিতৃপক্ষের শেষ দিনটিকে মহালয়া বলা হয়। সেই হিসেবে চলতি বছর ৬ অক্টোবর মহালয়া। এ দিন পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করা হয়। প্রচলিত আছে, মৃতব্যক্তির মৃত্যু তিথি জানা না-থাকলে এদিন তর্পণ করা যেতে পারে। এদিন সকলেই তর্পণ করতে পারেন। কৃষ্ণপক্ষের সমাপ্তি এবং শুক্লপক্ষ বা দেবীপক্ষের সূচনার আগের অমাবস্যাকে মহালয়া বলা হয়। তবে কেন পিতৃপক্ষের শেষে অমাবস্যার দিনটিকে মহালয়া বলা হয়, সে বিষয় নানান মত প্রচলিত রয়েছে।মহৎ ও আলয় এই দুটি শব্দ থেকে মহালয়া শব্দের উৎপত্তি বলে মনে করা হয়। এই মহালয় থেকেই মহালয়া শব্দটি এসেছে। ব্যাকরণ অনুযায়ী তিথি শব্দটি স্ত্রীলিঙ্গ হওয়ায় মহালয়ের স্ত্রীবাচক পদ হল মহালয়া। এই শব্দের নানান অর্থ জানা যায়। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুযায়ী পরব্রহ্মে লয় প্রাপ্তি ঘটলে তাকে মহালয়া বলা হয়। নিরাকার ব্রহ্মের আশ্রয় মহালয়।অন্য দিকে আবার শ্রী শ্রী চণ্ডি অনুযায়ী মহালয় হচ্ছে উৎসবের আলয়। তাই শ্রী শ্রী চণ্ডিতে মহালয় বলতে পিতৃলোককে বোঝানো হয়েছে। পিতৃলোককে স্মরণের ক্ষণকেই বলা হয় মহালয়া। উল্লেখ্য, অমাবস্যা তিথিতে মহালয়া হয়। এটি উত্তরায়ণের শেষ সময়। এর পর সূর্যের দক্ষিণায়ন শুরু হয়। অভিধানে মহ শব্দের দুটি অর্থ পাওয়া যায় একটি পুজো বা উৎসব এবং অপরটি প্রেত। তা হলে মহালয়ের অর্থ দাঁড়ায় পুজো বা উৎসবের আলয় অথবা প্রেতের আলয়। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী পিতৃপক্ষের সূচনাকালে পূর্বপুরুষরা মর্ত্যে আসেন এবং অমাবস্যা বা মহালয়ার দিন পর্যন্ত মর্ত্যে থেকে নিজের পরিবারের কাছ থেকে শ্রাদ্ধ, তর্পণ গ্রহণ করেন ও তাঁদের আশীর্বাদ দেন। পূর্বপুরুষদের এই সমাবেশই মহালয় নামে পরিচিত এবং সেখান থেকেই এটি মহালয়া হয়েছে। তবে কেন এই শব্দটিকে স্ত্রীলিঙ্গ করা হল, তার কোনও যুক্তিযুক্ত উত্তর পাওয়া যায় না।