ব্যাগে মৃত সন্তান। সেই মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন অসহায় বাবা। শিলিগুড়ি থেকে কালিয়াগঞ্জ। প্রায় ৫ ঘণ্টার রাস্তা। সেই রাস্তা ব্যাগ আঁকড়ে বাসে বসেছিলেন ওই গরিব অসহায় বাবা অসীম দেবশর্মা। কেউ যদি নামিয়ে দেয়! এই ঘটনা কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বাংলাকে। অসীম দেবশর্মার দাবি, অ্যাম্বুলেন্স ৮ হাজার টাকা চেয়েছিল। সেই টাকা জোগাড় করতে পারিনি। সেকারণেই বাসে এসেছি।তবে এবার ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এনিয়ে নয়া সাফাই দেওয়া শুরু করেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঠিক কী বলেছেন মেডিক্যাল সুপার সঞ্জয় মল্লিক?সংবাদমাধ্যমের সামনে সুপার জানিয়েছেন, সাংবাদিকদের কাছ থেকে প্রথম খবরটা পেয়েছিলাম রবিবার দুপুরে। বাচ্চাটি শনিবার গভীর রাতে মারা গিয়েছিল। এরপর ডেডবডি ভেহিকেলের জন্য তারা ঘোরাঘুরি করে। যেহেতু রাতের বেলা, আর ভাড়া অত্যাধিক চাইছিল সেকারণে হাসপাতালের অন ডিউটি স্টাফেদের থেকে খবর পেয়েছি ওরা বলেছিলেন বডি নিয়ে যাওয়া হবে না। এখানেই থাকবে। সেই মতো বডি রেখে দিয়েছিল। পরের দিন সকালবেলা ওরা ডেডবডিটা ওখান থেকে নিয়ে যায়। পরে সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানতে পারি, ওরা নাকি গাড়ির জন্য় ঘোরাঘুরি করেছিল। তবে আমাদের নিজস্ব ডেডবডি ক্য়ারিং ভেহিকেল নেই। ১০২ যেগুলি রয়েছে সেগুলি অসুস্থ মা ও বাচ্চাদের জন্য রয়েছে। কিন্তু মৃতদেহ বহনের জন্য যেগুলি রয়েছে তার মধ্য়ে রেডক্রশ ও অন্যান্য ব্যবস্থাগুলি রয়েছে।সেগুলি দেহ বয়ে নিয়ে যায়। তবে আমাদের রোগী সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। ওরা ওখানে গিয়ে যোগাযোগ করলে রেড ক্রশের ভলান্টিয়াররা কিছু একটা ব্য়বস্থা করে দিতে পারে। তবে এর আগেও কেউ যদি পয়সার অভাবে দেহ নিয়ে যেতে না পারে তাহলে সুপার বা অ্য়াসিস্ট্যান্ট সুপারের ঘরে যোগাযোগ করলে স্পেশালভাবে রোগী কল্যাণ সমিতির ফান্ড থেকে খরচ দেওয়া যেতে পারে। তবে এটা নিয়ে আমাদের গোচরে না এলে এই সমস্যা হতে পারে। এদিকে অ্য়াম্বুলেন্স চালকদের একাংশের দাবি, ১০২ নম্বরে ফোন করার পরে কেউ টাকা চাইতে পারে না। তবে হয়তো দালালদের হাতে পড়ে গিয়েছিল। তবে কে চেয়েছে, কার কাছ থেকে চেয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। তবে ১০২ পরিষেবাতে কোনও মৃতদেহ বহনের বিষয় নেই।প্রসঙ্গত কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা অসীম দেবশর্মার শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। কিন্তু তিনি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়ার টাকা জোগাড় করতে পারেনি। তার জেরেই মৃত সন্তানকে ব্যাগে ভরে তিনি সরকারি বাসে চেপে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে চলে আসেন কালিয়াগঞ্জে।তবে সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যভবন থেকে এনিয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তবে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মেয়র গৌতম দেব জানিয়েছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা হত।