বাবা টেম্পো চালান। দর্জির দোকান থেকে যখন অর্ডার পান, তখন বাড়ি থেকে সেলাইয়ের কাজ করেন মা। সেই জায়গা থেকে উঠে এসেই এবার উচ্চমাধ্যমিকে প✃্রথম হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার সারাঙ্গাবাদের ছেলে শুভ্রাংশু সর্দার। এই হাইটেক যুগেও যে ছেলের করোনাভাইরাস মহামারীর আগে পর্যন্ত মোবাইল ছিল না। মহামারীর সময় ছেলে যাতে অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারেꦡন, সেজন্য ইএমআইতে ফোন কিনেছিলেন মহিলা। ধীরে-ধীরে সেই ইএমআইয়ের টাকা শোধ করেছিলেন। আর সেই যে লড়াইটা করেছিল সারাঙ্গাবাদের সর্দার পরিবার, বুধবার জীবনের সেই লড়াইয়ে সাফল্য এল।
ছেলেবেলা থেকেই জীবনের প্রতি মুহূর্ত লড়াই করতে হলেও কখন থেমে যাননি শুভ্রাংশু। কখনও ক্লান꧙্ত হয়ে লড়াই ছাড়েননি। বরং উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পর নিজের ছোট্ট (সাফল্যের দিক থেকে সেই বাড়ি অবশ্য কোনও অংশেই ছোটো নয়) বাড়িতে হাসিমুখে শুভ্রাংশুর মা শম্পা সর্দার বলেন, ‘বাবাকে এত পরিশ্রম করতে দেখে আমার ছেলে আরও পরিশ্রম করার অনুপ্রেরণা পেয়েছিল।’
তবে শুভ্রাংশুর মতে, আজ যে এত বড় স🃏াফল্য পেয়েছেন, সেটায় নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের (আবাসিক) অবদান নেহাত কম নয়। পঞ্চম শ্রেণিতে যখন নরেন্দ্রপুরে সুযোগ পেয়েছিলেন, সেটাই জীবনে বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। জীবনের কঠিন থেকে কঠিনতর পরীক্ষায় সাফল্যের জন্য যে মানসিকতা, যে মনোবলের প্রয়োজন হয়, সেটা নরেন্দ্রপুরে পেয়ে যান।শুভ্রাংশুর মায়ের মতে, শুধু পরীক্ষার খাতায় সাফল্য নয়, তাঁর ছেলেকে ভালো মানুষ তৈরি করেছে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়।
আরও পড়ুন: ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি না নিয়েও উচ্চমাধ্যমিকে সবার 🌳মধ্যে প্রথম হওয়া যায়, দেখিয়ে দিল শুভ্রাংশু
গানের প্রতি টান আছে শুভ্রাংশুর, ভালোবাসেন গল্পের বই
নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শুভ্রাংশু বরাবরই মনোযোগী পড়ুয়া ছিলেন। গান শুনতে খুব ভালোবাসেন। স্কুলের যে ব্যান্ড আছে, তাতে ব্যান্ডের প্রধান গায়কও হলেন শুভ্রাংশু। পাঠ্যবই ছাড়াও গল্পের বই বা অন্যান্য বই পড়তে ভালোবাসেন। উচ্চমাধ্যমিকেജর প্রথম স্থানাধিকারী জান🐠ান, যে কোনও ধরনের গল্পের বই পড়তে মুখিয়ে থাকেন। তবে তাঁর সবথেকে প্রিয় হল উপন্যাস।
শুভ্রাংশুর মা জানান, এতটাই বই ভালোবাসেন যে জন্মদিন এবং দুর্গাপুজোর সময়ও বই চান। এমনকী দিনকয়েক আ𝓰গে ফোনের স্ক্রিন ভেঙ༒ে গেলেও সেটা দিয়েই কাজ চালিয়ে যাবেন বলেছেন শুভ্রাংশু। বরং উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পর উপহার হিসেবে বই আবদার করেন তিনি। যিনি আগামিদিনে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করতে চান।